শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪১ অপরাহ্ন

সিলেটে গ্যাস ক্ষেত্রে তেলের সন্ধান ঃ নব দিগন্তের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ সিলেটে ভূ-গর্ভে তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। একটি গ্যাসক্ষেত্রে কূপ খননের সময় সেখানে তেলের অস্তিত্ব মিলেছে। সিলেটের জৈন্তাপুর গোয়াইলহাট এলাকায় দশ নং কুপের প্রথম স্তরেই তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। কুপ খননের সময় গত ৮ ডিসেম্বর তেলের সন্ধান পাওয়া যায়। দেশের অপার সম্ভাবনাময় গ্যাস ক্ষেত্র, বাংলাদেশের ভূগর্ভে সীমাহীন গ্যাস মওজুদ থাকায় প্রাকৃতিক গ্যাসের অভাব হতে দেশ মুক্ত আছে। এমনই কুপে তেলের সন্ধান পাওয়ায় দৃশ্যতঃ দেশের জন্য কেবল খুশি সময় নয় আর্শীবাদ হিসেবেই ধরা যায়। বাংলাদেশের তেলের খনিনর সন্ধান দৃশ্যতঃ নব দিগন্তের ক্ষেত্র বৃস্তিত করলো দেশ। প্রতিবছর বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে দেশ তেল আমদানী করে থাকে বর্তমানে তেলের সন্ধান পাওয়ায় বাংলাদেশ আমদানীর পরিবর্তে তেল রপ্তানী করতে পারবে এবং বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করবে। গত রবিবার বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুল নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সিলেটে জৈন্তাপুর গোয়াইলহাট এলাকায় ১০ নম্বর কুপের প্রথম স্তরেই তেলের সন্ধান পাবার কথা জানান তিনি, এছাড়া চারটি স্তরে গ্যাস পাওয়া গেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। এই অঞ্চলে গত দুই মাস আগে ড্রিল শুরু হয়। ২৫৭৬ মিটার খনন সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী জানান ১৩৯৭ থেকে ১৪৪৫ মিটার গভীরে যে কোন সেখানে ৮ ডিসেম্বর তেলের উপস্থিতি মেনে। বর্তমানে প্রতি ঘন্টায় ৩০ ব্যারেল তেল উঠছে, প্রথম দিন দুই ঘন্টা ৭০ ব্যারেল তেল উঠেছে। ২৫৪০ ও ২৪৬০ মিটার গভীরে এক যোগে উৎপাদন করা হলে আট থেকে দশ বছর স্থায়ী হবে। আর ২০ মিলিয়ন ঘনফুট তেল উৎপাদন করাহলে তা ১৫ বছরের বেশি স্থায়ী হবে। দেশে প্রথম তেলের খনির সন্ধান সিলেটে পাওয়া গেলেও এই আনন্দ আর উচ্ছ্বাস কেবল সিলেট বাসির নয় সারা দেশবাসির। বাংলাদেশ যদি তেল রপ্তানী করতে পারে তাহলে তা হবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুতিকাগার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ব্যাপক ধনী এবং বিশ্ব ব্যবস্থায় শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার একমাত্র কারন তেলের খনি। দেশকে এগিয়ে নিতে, অর্থনৈতিক ভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে সিলেটের তেলের খনি মহীরুহ হিসেবে কাজ করতে পারে। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে ইতিপূর্বে উক্ত গ্যাস ক্ষেত্র হতে গ্যাসের সাথে অল্প কিছু তেল উত্তোলিত হতো আর এটা গ্যাস ক্ষেত্রের স্বাভাবিক নিয়ম গ্যাসের সাথে তেল থাকাটা, কিন্তু যখন তেলের স্তর আর গ্যাসের স্তর পৃথক থাকে তখনই অপার সম্ভাবনার সৃষ্টি করে একই সাথে স্থায়ী তেল খনির নিশ্চয়তা দেয়। সিলেটের গ্যাস ক্ষেত্রে তেলের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি তেমনই যে তেলের স্তর পৃথক। ৩৭ বছর আগেদ ১৯৮৫ সালে সিলেটের হরিপুরে তেলের খনির সন্ধান পাওয়া যায় এবং এরপর টানা সাত বছর ৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৯ ব্যারেল তেল উত্তোলনের পর কুপটি থেকে প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এই মুহুর্তে আধুনিক প্রযুক্তি, এবং মানসম্মত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে তেল উত্তোলন সহ নতুন নতুন তেল গ্যাস কুপ খননের সময় এসেছে। বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় দেশ যে দেশের মাটির তলায় গ্যাস থাকে সে দেশে তেলের থাকাটা স্বাভাবিক বিধায় পেট্রো বাংলাকে অধিকতর অনুসন্ধানী হতে হবে। অবশ্য সুখের কথা দেশের ২৯টি পরিত্যক্তদ কুপে নতুন করে অনুসন্ধান সহ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশ তেল রপ্তানী করবে এমন আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে দেশের আশাবার্দী জন সমাজ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com