সমস্ত জঙ্গলের কর্মরত মানুষ বনে ওঠার পূর্বে-বাঘ, এই আতঙ্ক জনিত শব্দ উচ্চারণ না করে তার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মা নারায়নীকে স্মরণ করে এবং দক্ষিণ রায়েল দাসকে মামা সম্বোধন করে। এটি বিচিত্র নয়। কারণ আমাদের দেশে কোন কোন অঞ্চলে বাড়ীতে কাজের মহিলা কিংবা অফিসের ৪র্থ শ্রেণীর মহিলা কর্মচারী অথবা যে কোন বয়স্ক অপরিচিত মহিলাকে বিশেষ করে হিন্দুরা মামী সম্বোধন করে। এবং পুরুষদেরকে মামা সম্বোধণ করে। তৃতীয় অভিমত হল সুন্দরবনে নারায়নী দেবীর মত আর একজন মা আছেন। তাঁর নাম বন বিবি। তার ভাই এর নাম শাহ জঙ্গুলী। শাহ জঙ্গুলী নাকি বাঘের পিঠে চড়ে বেড়াতেন। বনবিবি বাঘের কবল থেকে দুখেকে বাঁচিয়েছিলেন। বন বিবিকে মা ডাকলে তার ভাই শাহ জঙ্গলী মায়ের ভাই মামা। শাহ জঙ্গুলী বাঘের পিঠে চড়তেন। তাই বাঘ হল মামার বাহক মামা। তাই ভয় শঙ্কা এড়ানোর দায়ে হিংস্র জন্তুর ভয়ংকর নাম উচ্চারণে মনের ভীতি সঞ্চার না করে, মনকে শঙ্কাহীন স্বতঃস্ফূর্ত রাখার জন্য বন বিবির বরা ভয়ে নারায়নীর আর্শীবাদে নির্ভিঘেœ কার্য সিদ্ধি করে পরিবার পরিজনের কাছে ফিরে যাওয়ার মানসেই বাঘকে বড় মামা বলা হয়ে থাকে। এটি যেন কুমিরের কলা দেখানোর মত অবস্থা। অর্থাৎ বন থেকে বাড়ি ফিরে এলে বাঘের বড় মামা ডাকও ফুরিয়ে যায়। প্রসঙ্গত আরও দুটি মামা নাম ও একটি ভাই শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ইতর ভদ্র মা দিদি মা-রা ব্যবহার করেন যেমন সূর্যি মামা আর চাঁদ মামা অথবা চাঁদা ভাই, চন্দ্র সূর্যের কেন এই নাম একবার চিন্তা করে দেখেছেন কি? সুন্দরবনের ইতিহাস লিখতে যেয়ে অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও অনেকের অনুসন্ধিৎসু মনে এ প্রশ্নের জবাব জানার সদিচ্ছায় প্রশ্ন দুটি এখানে আলোচিত হ’ল। বলা বাহুল্য সূর্য একটি নক্ষত্র, পৃথিবী একটি গ্রহ আর চন্দ্র একটি উপগ্রহ।