আমরা পৃথিবী রূপ গ্রহে বাস করি বটে কিন্তু ঐ উর্দ্ধাকাশে চন্দ্র সূর্যের আকর্ষণে পৃথিবীর সাগর মহাসাগর নদী নালায় জোয়ার ভাটা হয় এবং সমুদ্রের জল নদীতে এসে ভরা জোয়ারে ফুলে ওঠে আবার ভাটায় নেমে যায়। পৃথিবীতে বসবাসরত সমতল ভূমি যাহা চাষ যোগ্য এবং ফসলাদি উৎপাদনের উত্তম ক্ষেত্র তাকে শাস্ত্রীয় ভাষায় বসু মাতা বলে। জন্মভূমিকে জননীর সঙ্গে তুলনা করে জননী জন্মভূমিশ্চ সর্গাদপি গরিয়াসী বলা হয়েছে। কবি সাহিত্যিকরাও তা স্বীকার করেছেন। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মভূমিকে মা সম্বোধন করে গেয়েছেন মাগো ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে পাগল করে, ওমা অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে, আমি কি দেখেছি মধুর হাসি। অধুনা আমরা তা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রূপে পরিবেশন করছি। এই মায়ের বুকে অমৃত পিয়াসী দুগ্ধ ধারা এবং ফুল ও ফসল সূর্যের কিরণ এবং চন্দ্রের শীতল ছায়া ছাড়া সম্ভব নয়। চন্দ্র সূর্যের আকর্ষণে জোয়ার ভাটার সৃষ্টি করে বসু মাতাকে সজীব ও প্রাণবন্ত করে এবং ফসল উৎপাদনের উপযোগী করে। সূর্যের কিরণ না হলে গাছপালা তরুলতা কিছুই বাঁচতে পারে না। উপযুুক্ত ফসলও হয় না। তাই চন্দ্র সুর্য যেন বসু মাতার দুই সহযোগী ভ্রাতা, আবার সূর্য নক্ষত্রের সঙ্গে নিহারীকার সংঘর্ষে সূর্যের খন্ডিত অংশই পৃথিবী। সুতরাং সৃষ্টি রহস্যে বীজ প্রদা বিশ্বপিতার খন্ডিত বীজে পুত্র কন্যার সৃষ্টি, নক্ষত্র পুত্রবৎ আর পৃথিবী রূপ গ্রহ কন্যাবৎ। সুতরাং এই পৃথিবীতে জন্মভূমি আমাদের জননী হলে মায়ের ভাই সূর্যদেব আমাদের মামা। তাই তো কবিরা লিখেছেন সূর্যি মামা ওঠার আগে উঠব আমি জেগে/হয়নি সকাল ঘুমো এখন মা বলবেন রেগে। আবার অনেক সময় চাঁদকে চাঁদা ভাই বলেও কল্পনা করা হয়েছে। কারণ পৃথিবী একটা গ্রহ আর চন্দ্র পৃথিবী সৃষ্টি একটা উপগ্রহ।