শিয়াল খুব চতুর প্রাণী বাঘে শিয়াল খায়। তাই সে দিনের বেলায় গর্তে লুকিয়ে থাকে এবং রাত্রে দল বেঁধে খাদ্যের অন্বেষনে ঘুরে বেড়ায়। শিয়ালও মাংশাসী প্রাণীূ। বাঘের ভয়ে আত্মরক্ষা করতে তারা পার্শ্ববর্তী লোকালয়ে চলে আসে। শিয়াল একরকম নিশাচর প্রাণী। কুকুর দেখলে শিয়াল খুব ভয় পায় এবং দ্রুত ছুটে পালায়। কুকুরও শিয়াল খায় এবং শিয়াল দেখলে তাড়া করে কিন্তু শিয়ালের সঙ্গে কুকুর ছুটে পারে না। গ্রামগঞ্জে প্রচুর শিয়াল থাকে। এরা প্রায়ই সময় গর্তে লুকিয়ে থাকে। অথবা মানুষের চক্ষু এড়িয়ে ঝোপে জঙ্গলে, বনে বাদায় বাস করে। এরা দিনের বেলায় বিচরণ করে না। রাতের বেলায় লোকালয় থেকে দূরে দল বেঁধে হুক্কা হুয়া শব্দে ডাকতে থাকে। বন্যজীব জন্তুর মধ্যে শিয়ালই সবচেয়ে ধুর্ত। এদের বুদ্ধির সাথে চাতুরী করে কোন প্রাণীই পারে না। জানি না কবে, কখন, কিভাবে কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে, কার দ্বারা শিয়াল-পন্ডিত নামে আখ্যায়িত হয়েছিল। তবে জ্ঞানী, গুণী, শিক্ষত সকলেই বই, পুস্তকে বাংলা, ইংরেজী সংস্কৃত সব ভাষাতেই লোক শিক্ষার জন্য বহু ভাবে শিয়াল পন্ডিতের গল্প উপস্থাপন করে থাকেন। গৃহস্থের হাঁস মুরগী এদের প্রিয় খাদ্য। সুন্দরবনের মাছ কাকড়া, বন মোরগ, বিভিন্ন পাখি, তাড়লেক এবং বাগে পেলে বানরও খায়।
সাপ
সুন্দরবনের বহু বিষাক্ত ও বিষহীন সাপ আছে। তবে যে সমস্ত লোক সুন্দরবনে বিভিন্ন পেশাজীবি কর্মসংস্থানে যায় তাদের কখনও সাপে কেটেছে এমনটি প্রায়ই শোনা যায় না। একমাত্র বাঘের ভয় ছাড়া সেখানে অন্য কোন প্রাণীর উপদ্রব নেই। কদ্রু পুত্রগণ হল সর্প। সর্প যে কত প্রকার তা বলা কঠিন। জলজ স্থলজ উভচর এবং পাহাড়ী সব মিলে সকল সাপের নাম বলা এবং লেখা অত্যন্ত কঠিন। মহাভারতে পরীক্ষিতের পুত্র জন্মেঞ্জয় সর্প যোগ্য করেছিল এবং পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ নিতে সর্পকুলকে পুড়িয়ে মেরেছিল। কিন্তু সেটি আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়। সুন্দরবনের সাপই আমাদের প্রতিপাদ্য বিষয়।