বাদশাহ আকবরের রাজত্বের ২৯ বর্ষে ১৫৮৫ খ্রীঃ একদা অপরাহেৃ হঠাৎ সমুদ্রের জল বৃদ্ধি পায়, উহাতে অল্প সময়ের মধ্যে এমন জল বৃদ্ধি পায় যে, সমগ্র বাকলা অঞ্চল চন্দ্রদ্বীপ জলবদ্ধ হয়ে যায়। ক্রমাগত ৫ ঘন্টা ভয়ানক ঝড় বৃষ্টি বজ্রাঘাত ও জলোচ্ছাস চলে। সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ গ্রাস করে সমগ্র রাজ্যটিকে। ঘরবাড়ি নৌকা জাহাজ সমস্ত ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। সেই সাথে সুন্দরবনের গাছ পালাও উজাড় হয় ব্যাপক হারে। তখন জনবসতি কম ছিল এবং বাড়িঘর গুলিও বেশ দুরে দুরে ছিল। এক পরিবারের সঙ্গে অন্য পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কেউ কাহারও খোঁজ নেওয়ার সময়ও ঘটেনি। প্লাবনে ভেসে যায় গরু ছাগল ভেঢ়া গৃহপালিত পশু পাখি। দুই লক্ষ লোক মৃত্যু মুখে পতিত হয়। এদ্বারা খুলনার দক্ষিনস্থ সুন্দরবনের প্রভূত ক্ষতি সাধিত হয়। উহার জন্যই মহারাজ প্রতাপদাত্যি স্বীয় রাজধানীর দক্ষিনে যমুনা ও আড়পাঙ্গাশিয়া নদী দ্বয়ের মধ্যবর্তী অংশে এবং উত্তরে কালিগঞ্জ থেকে পূর্বে কপোতাক্ষ পর্যন্ত ও পশ্চিমে ভাগীরথী রায়গড় পর্যন্ত মৃত্তিকা বাঁধ নির্মান করে রাজ্য রক্ষার ব্যবস্থা করেন। এই সময় আবাদকৃত জমির মধ্যে মাঝে মাঝে কেওড়া, বাইন, ঝাউ গাছ এবং মৃত্তিকা মধ্যে গাছের গোড়া (মুড়ো) দেখতে পাওয়া যেত। সে সমস্ত দৃশ্য ঐ সময়কার সুচিন্তিত মহলের বিস্ময় উৎপাদন করে। পরবর্তী ভীষণ ঝটিকা ১৬৮৮ খ্রীঃ। তাতে সাগর দ্বীপের ৬০ হাজার লোক মারা যায়। প্রতাপাদিত্যতার যুগ পর্যন্ত সাগর দ্বীপের সংরক্ষণ ছিল প্রতাপের পতনের পর সে সংরক্ষন না থাকায় সুন্দরবনের আবার অবনতি ঘটে এবং অনেক আবাদকৃত ভূমি পুনঃ জঙ্গলে পরিণত হয়।