১৯৭৫ খ্রীঃ নবাব আলীবর্দী খাঁর দৌহিত্র সিরাজুদ্দৌলা বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব হন। এই বাংলা বলতে হাওড়, হুগলী, বর্ধমান, নদীয়া শান্তিপুর মুর্শিদাবাদ ও ঢাকা প্রেসিডেন্সী বিভাগ বুঝায়। তখনও শ্যামনগরের অনেকাংশ কয়রা পাইকগাছা দাকোপের অনেকাংশ আবাদ হয়নি। দলিল দস্তাবেজে তার অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সমস্ত অঞ্চল তখন জঙ্গলাকীর্ণ সুন্দরবনের অন্তর্ভূক্ত ছিল। বার ভূঁইয়া থেকে আরম্ভ করে জমিদার আমল পর্যন্ত জঙ্গল কেটে আবাদ করে বাপ ঠাকুর দাতার হাত কাটালী সম্পত্তিতে বসবাসরত বাসিন্দাগণ এবং জমিদারী আমলের পর ১৯৪৭ খ্রীঃ ভারত বিভাগের পর পূর্ববঙ্গ পশ্চিমবঙ্গে স্থান পরিবর্তিত অধিবাসীগণই বর্তমান সুন্দরবন উপকূলীয় বাসিন্দা।
সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র
সুন্দরবনের বিশাল অরণ্যে অসংখ্য নদনদী সর্বত্রই জীবজন্তু, প্রাণী ও পশুপাখি এক বিস্ময়কর বৈচিত্র সৃষ্টি করে রেখেছে- যা ভাবুকের কবি কল্পনার, গবেষক ও সাহিত্যিকের গবেষনা ও সাহিত্য সৃষ্টিতে অবদান রাখে। সুন্দরবনের বৃক্ষ লতা, জীব জন্তু, পশুপাখি সব কিছুই ভ্রমণকারী, পর্যটক, পরিদর্শক ইতর-ভদ্র সকলেরই মন আকৃষ্ট করে। যেখানে জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ সে স্থানে মানুষের বিচরণ কি করে সম্ভব। তথাপিও সুন্দরবনে বিভিন্ন ভাবে, আয়ের উৎস হিসাবে, দর্শনীয় স্থান হিসাবে প্রাকৃতিক দৃশ্য হিসাবে এতই মূল্যবান, মধুর ও নয়নাভিরাম যে, তা সহজে মানুষের মন কাড়ে। সেখানে নানা প্রতিকূল অবস্থা সত্বেও সে দৃশ্য দেখার জন্য এবং সৃষ্টিকর্তার লীলা বৈচিত্র অনুভব করার জন্য ছুটে যায়। একটি গ্রাম্য তথা সুন্দরবনের বনজ প্রবাদ আছে যে ‘পায়খানা লাগলে বাঘের ভয় থাকে না’।