তাই প্রকৃতির লীলা নিকেতন, আয়ের উৎস হিসাবে সবুজ শ্যামলীময়, সুদৃশ্য নয়নাভিরাম দৃশ্যের দিক থেকে বৈচিত্র্য পূর্ণ নদী নালা, পশু পাখি, জীব বৈচিত্র্য প্রভৃতি কারণে নদী যেমন স্রোতের টানে সাগরে যেয়ে মিশে, পৃথিবীর সকল দেশের মানুষ তদ্রুপ শ্বাপদ শংকুল বনে সমস্ত শঙ্কা মাড়িয়ে সুন্দরবন দর্শনে উদগ্রীব হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের মধ্যে সুন্দরবনই বন্য প্রাণীর বৃহত্তম আবাস স্থল। এখানে ৩৭৫ প্রজাতির অধিক বন্য প্রাণী আছে। তার মধ্যে ৩৫ প্রজাতির সরিসৃপ, ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ী, ১৪ প্রজাতির কাকড়া, ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা সব মিলিয়ে ২৯১ প্রজাতির জলজ প্রাণী সুন্দরবনে বিদ্যমান। (গ.ব.স. বন অধিদপ্তর)। বন্য প্রাণীর মধ্যে- রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বানর, কুমির, অজগর, কচ্ছপ, ডলফিন, উদবিড়াল, মেছো বিড়াল, বন বিড়াল, কাঠবিড়াল, খাটাশ, বাগরোল, শিয়াল, পাতি শিয়াল, খেকশিয়াল, তাড়কেল বা গোসাপ, বেজি, খরগোশ, ভোদড়, ধাড়ে, গুল বাঘ, বন্য শুকর, বন মোরগ, সজারু, গিরগিটি, ইদুর, গাড়োল প্রভৃতির নাম উলেখযোগ্য। এদের মধ্যে সরিসৃপ জাতীয় প্রাণী কুমির, কচ্ছপ, গোসাপ, কেউটে, ময়াল ইত্যাদি। উভচর প্রাণী ১১টি কুনো ব্যাঙ, সোনা ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, ছ আঙ্গুলে সবুজ ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, সাইলো ফ্রি কোটিস ব্যাং, কুমির, কচ্ছপ, গোসাপ, ধাড়ে, কাঁকড়া, পানকৌড়ি, বুনো হাঁস, ভোদড়, সাপ ও পাপড়া নামক এক শ্রেণীর উড়–ক পাখি। স্তন্যপায়ী প্রাণী ঃ বাঘ, হরিণ, শুয়োর বানর, শিয়াল, ঈদুর গাড়োল, গাঙ্গেয় শুশক, বদ্দি শুশক, সুন্দরবনের স্থলচর জন্তুর মধ্যে বাঘই সর্বপ্রধান। নানা দেশে নানা প্রজাতির বাঘ দেখেত পাওয়া যায়। কিন্তু সুন্দরবনের বাঘের মত এত হিংস্র, বলবান, দৃশ্য ধারী, বিশালকার, শক্তিশালী ভয়ংকর মূর্তি বন্য জন্তু আর দেখা যায় কিনা সন্দেহ। এজন্য ইহাকে রয়েল বেঙ্গল টাইগার (জড়ুধষ ইবহমধষ ঞরমবৎ) নামে অভিহিত করা হয়েছে। ইহাদের হরিদ্রা বর্ণগাত্রে লম্ব লম্বা কালো কালো ডোরা কাটা দাগ আছে। এরা ১০ থেকে ১২ ফুট লম্বা জ্জ ফুট উচু হয়। সম্মুখের অংশ মোটা মাংশাল ও সবল।