শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
মৌচাক সাহিত্য পরিষদের ঈদ পুনর্মিলনী ও নববর্ষ উদযাপন প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪ উদ্বোধন কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে -এমপি রশীদুজ্জামান কয়রার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন কেশবপুর থানা পুলিশের আয়োজনে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত খুলনায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত নগরঘাটায় খাদ্যের সাথে চেতনাশক ঔষধ মিশিয়ে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত বাংলাদেশ স্বাধীনের জন্য মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা ইরানে হামলার প্রস্তুতি ইসরাইলের

সুন্দরবনের তিন বাঘ টহলফাঁড়ি এলাকায় নিরাপত্তা হীনা নাকি খাদ্যভাব, কি জানান দিতে এসেছিল তারা?

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

মাছুদুর জামান সুমন \ বিশ্বের অনন্য অসাধারন সৌন্দর্য্য আর সম্পদের লীলাভূমি সুন্দরবন বিশ্বের দেশে দেশে আলোচিত এবং আলোকিত সুন্দরবনের অতি পরিচিত নাম রয়েল বেঙ্গল টাইগার। উক্ত রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে স্থানীয় ভাষায় বাঘ বলা হয়। সুন্দরবন রক্ষায় অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে চিহিৃত ও স্বীকৃত বাঘ। সময়ে সময়ে বাঘ লোকালয়ে এসে বিশেষ ভাবে হৈ চৈ এর কারনে পরিনত হয়। সুন্দরবন পৃথিকীকরন নদীতে ও বাঘের সাতার কাটতে দেখা যায় আবার লোকালয়ের অতি প্রান্তীক পর্যায়ের মানুষের উঠানে, বসত ঘরের চালে সবজি বাগানে বাঘের উপস্থিতি ও লক্ষ্য করা যায়। বাঘের আচরন, খাদ্য, জীবনযাত্রা, আয়ূ, বিচরন নিয়ে রয়েছে নানা মুখি তথ্য এবং প্রচার প্রচারনা। হিংস্র এবং মানুষ খেকো বাঘের প্রতি জনজীবনে ভিন্ন ধরনের উদ্বেগ, আতঙ্ক উত্তেজনা বিরাজমান আবার বাঘের জীবনযাপন ও উপভোগ করে থাকে। সুন্দরবনের বাঘ কখনও কখনও লোকালয়ে আসে আর এবার সেই বাঘ বন বিভাগের অফিস এলাকায় অবস্থান নিয়ে রীতিমত অদ্ভুত ধরনের কৌতুহল এবং জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে। একটা নয় দুইটি নয় তিন তিনটি বাঘ বন অফিস এলাকায় অন্তত উনিশ ঘন্টা অবস্থান নিয়ে ফিরে গেছে গহীন জঙ্গলে। শুক্রবার বেলা দুইটা থেকে শনিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের সুপতি স্টেশনের চান্দেশ্বর টহলফাঁড়ি এলাকায় তিন বাঘের অবস্থান আবিস্কার করেন বন বিভাগের কর্মিরা। আকস্মাৎ বাঘ তিনটি কে দেখতে পেয়ে কিংকর্তব্যবিমুখ আর হতবিহম্বলতাকে সঙ্গী করে ভয়, আতঙ্ক আর উদ্বেগকে সঙ্গী করে বন বিভাগের কর্মিরা ঘরের মধ্যে অবস্থান নিয়ে দরজা বন্ধ করে। অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে কখন হিংস্র বাঘ এলাকা ত্যাগ করবে সেই সাথে বাঘ তিনটির পুকুরে নামা, পানি পান করা, গড়াগড়ি খাওয়া, শুয়েপড়া, উঠে দাঁড়ানো সব প্রত্যক্ষ করছিলেন জানালা দিয়ে। বন বিভাগের কর্মচারীরা রাতের অন্ধকারে টসলাইট জ্বালিয়ে বাঘের গতিবিধি প্রত্যক্ষ ও করছিলেন, কোন কোন সময় টহলফাঁড়ির রান্নাঘরে এসে অবস্থান নিয়ে আবারও পুকুর ধারে যেয়ে ফাঁড়ি অভিমুখে তাকাচ্ছিলো। বনজীবী সহ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার অধিবাসিদের ভাষ্য বাঘ লোকালয়ে আমার অন্যতম কারন পথ হারিয়ে ফেলা অথবা খাদ্যের সন্ধানে। কিন্তু এই প্রথম বন বিভাগের টহলফাঁড়িতে বাঘের অবস্থান যার মধ্য দিয়ে কি অবলা অথচ হিংস্র প্রাণি বাঘ কি কোন আকুতি জানালো নাকি প্রকৃতিগত ভাবে পথ হারিয়ে টহল ফাঁড়িতে উপস্থিত হলো। হিংস্র মানুষ খেকো বাঘ বন অভ্যন্তরের জন মানুষের অবস্থান, উপস্থিতি এবং আনাগোনা সম্পর্কে অবশ্যই অবহিত, পক্ষান্তরে টহলফাঁড়িতে সশস্ত্র বনকর্মিদের উপস্থিতি, লাইট জ্বালানো, বাঘ তাড়াতে টিনপিটিয়ে বিকট শব্দ করা সহ বাঘকে ভয় দেখিয়ে স্থানচ্যুত করার প্রচেষ্টা স্বত্তে¡ও দীর্ঘ উনিশঘন্টা টহলফাঁড়ি এলাকায় জীবনের শঙ্কা নিয়ে বাঘের অবস্থান অবশ্যই বাঘের জীবন নিরাপত্তা, খাদ্যের আকুতির বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অনেকের সুপ্রনোদিত প্রশ্ন বাঘেরা কি বন বিভাগ কি জানাতে এসেছিল যে তারা অসহায়, নিরাপত্তাহীন, চোরাশিকারীদের কল্যানে তাদের জীবন বিপন্ন? না কি খাদ্যের অভাবে তারা জীর্নশীর্ন, বিবর্ণ এটা জানাতে এসেছিল? প্রানিকুল যে অভিযোগ, অনুযোগ, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করতে পারে বা করে তার বাস্তব উদাহারন কেশবপুরের বিরল প্রজাতির মুখ কালো হুনুমান। কিছুদিন পূর্বে এক ব্যবসায়ী একটি হুনুমানের উপর আঘাত করলে দলবেঁধে হুনুমানরা কেশবপুর থানায় অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে, বাঘেরাও টহলফাঁড়িতে যে তাদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জানান দিলো কিনা সেটা অবশ্যই ভাবনার এবং গবেষনার বিষয়। গবেষনায় দেখা গেছে বাঘ সিংহের ন্যায় দলবেধে চলাচল করে না, বাঘ দৃশ্যতঃ একা এবং একক ভাবে চলাচল করে সেই বাঘ দলবেধে অর্থাৎ এক সাথে তিন বাঘ টহলফাঁড়ি এলাকায় যেয়ে অবস্থান নেওয়া নিশ্চয়ই তাদের আবেদন নিবেদন জড়িত, বাঘের হুংকার এমন ভয়ঙ্কর যা অস্বাভাবিক ভীতি সঞ্চার করে কিন্তু তিন বাঘ সামান্যতম হুঙ্কার দেইনি, আরও একটি বিষয় উলে­খ্য বাঘ দৃশ্যতঃ নিশাচর প্রাণী দিন অপেক্ষা রাতে তারা শিকারে অভ্যস্থ বিধায় হিংস্র প্রাণি যদি রাতে সংগোপনে এসে ফাড়ির রক্ষীদের শিকারে পরিনত করতে পারতো, বাঘের পা এমন নিখুত ভাবে পড়ে যে সামান্যতম শব্দ হয় না, বন বিভাগ তথা বন গবেষকদের কে তিন বাঘের অবস্থানে গভীরে প্রবেশ করতে হবে। আমাদের প্রিয় সুন্দরবনের রক্ষায় নিবেদিত তথা অতন্ত্রপ্রহরী বাঘ সা¤প্রতিক সময় গুলোতে চোরা শিকারীদের দ্বারা নিগৃহীত হচ্ছে সেই সাথে খাদ্য অভাব ও বটে। বিধায় সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায়, বা ঘের নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে বন বিভাগে কর্মরত তথা সুন্দরবনে কর্মরত বন রক্ষীদের অধিকতর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মনে রাখার উপাদান সুন্দরবনে বাঘ না থাকলে সুন্দরবন থাকবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com