শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ অপরাহ্ন

সুন্দরবনে চোরা শিকারীরা তৎপরঃ আবারও মৃত হারিন উদ্ধার বন রক্ষাকারী ও চোরাশিকারীদের সমঝোতায় কি সব চলছে?

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৪

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ঃ বারবার প্রতিনিয়ত পরিলক্ষিত হচ্ছে আমাদের প্রিয় সুন্দরব বন অরক্ষিত। বিশ্বের অনন্য অসাধারন সৌন্দর্য, সম্পদে আর জীব বৈচিত্রে পরিপূর্ণতায় ভরপুর সুন্দরবন দিনে দিনে কেবল অরক্ষিত হচ্ছে তা নয় এই বন অভ্যন্তরে এক শ্রেনির চোরা শিকারী দুষ্টচক্র বন সম্পদ প্রানিকুল নিধনে তৎপর এবং তারা প্রতিমুহুর্তে অবলিলায় হরিন, বাঘ, কুমির নিধন করে চলেছে। সুন্দরবনের মহা মুল্যবান বৃক্ষ নির্বিচারে নিধন করছে, মৎস্য শিকারের নামে সুন্দরবনের অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহমান ছোট ছোট নালা ও খালে বিষ প্রয়োগে মৎস্য ও কাঁকড়া নিধন করছে। চোরা শিকারী চক্র কেবল মাত্র হরিন শিকারে ক্ষান্ত নয় তারা অভিনব পদ্ধতির অবলম্বনে ফাঁদ পেতে জীবন হরিন ও হরিন ছানা ধরছে। সর্বাপেক্ষা ভয়ঙ্কর আর বিস্ময়ের বিষয় রয়েল বেঙ্গল টাইগার অর্থাৎ বাঘ ছানা জীবন ধরছে ফাঁদ পেতে। অতি সম্প্রতি আবারও সুন্দরবন হতে মৃত হরিন ও হরিন শিকারের সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে বনরক্ষীরা। বুধবার উদ্ধার করা মৃত হরিন উদ্ধারের ঘটনা পূর্বেকার ঘটনাপ্রবাহের অনুসরন করা হয়েছে মাত্র। সরকার বন রক্ষায়, সুন্দরবনের উন্নয়নে সর্বপরি জীব বৈচিত্র সংরক্ষনের লক্ষে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করে। সরকারের রাজস্ব খাত ভূক্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা, কর্মচারী বনপ্রহরী কর্মরত। অথচ বন রক্ষায় দায়িত্ববান রা কতটুকু দায়িত্বপালন করছে তা বিশ্লেষনের সময় এসেছে। বাঘের ছানা উদ্ধার হয়, মৃত হরিন, জীবন হরিন ও হরিন ছানা উদ্ধার হয়, জব্দ করা হয় ফাঁদ পাতার অনুসঙ্গ। কিন্তু বনখেকোরা, দুষ্টরা তথা অপরাধীরা আটক বা চিহিৃত হয় না। বনজীবী সহ সুন্দরবনের সাথে সংশ্লিস্ট একাধিক ব্যক্তি বর্গের সাথে কথা বলে জানাগেছে সুন্দরবন যতই গহীন বা জঙ্গলে ঢাকা থাকুক না কেন বন রক্ষায় দায়িত্বশীলরা বা প্রহরীদের অজানায় কোন ব্যক্তি সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারে না। অন্যদিকে বন প্রহরীদের এমন ক্ষমতা বা ঐদ্ধর্ত নেই যে তাদের কর্মকর্তাদের না জানিয়ে সুন্দরবনের একটি ক্ষুদ্রাকৃতির মৎস্য ও কাউকে শিকার বা ধরতে দেয়। পুরো সুন্দরবন রক্ষার নামে, সরকারের মহান উদ্যোগ এর সাথে জড়িত এক শ্রেনির অসাধু কর্মকর্তা ও বন প্রহরীদের সাথে বন খেকোদের ক্ষমতা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। সিন্ডিকেট চক্র বিশেষ সুবিধা দেওয়া নেওয়ার মাধ্যমে উজাড় করছে বন, ধ্বংস হচ্ছে বন সম্পদ, নিধন হচ্ছে জীব বৈচিত্র, বন আইনে বলা হয়েছে বন অভ্যন্তরে কোন ধরনের অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। একই সাথে জীব বৈচিত্রের ক্ষতি হয়, বা ক্ষতি সাধনের ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হয় এমন কিছু বহন করা যাবে না। আমাদের প্রিয় সুন্দরবন কে সুন্দর রাখার পরিবর্তে দিনে দিনে অসুন্দর হচ্ছে। সরকারের রাজস্ব উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত সুন্দরবন, পর্যটকরা সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য যেমন উপভোগ করে অনুরুপ ভাবে জীব বৈচিত্রের দর্শন লাভ করে। সুন্দরবন হতে মৃত হরিন ও হরিন শিকারের সরঞ্জাম উদ্ধার হয় অথচ ফাঁদপাতা চোরা শিকারীরা আটক হয় না, একটি বিষয় আলেখ্য তা হলো চোরা শিকারীরা কিভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করলো? আবার তারা মরা হরিন রেখে কোন পথে সুন্দরবন ত্যাগ করলো? সুন্দরবনের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকে তাই রহস্য করে বলতে শুরু করেছে মাঝে মাঝে উদ্ধার না দেখালে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয় হানবে কি ভাবে যে বন রক্ষায় কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রহরীরা তৎপর। বন রক্ষায়, চোরাশিকারী ও বন খেকোদের কে আইনের আওতায় আনতে হবে। বনরক্ষায় দায়িত্ব পালনাকরীদের অসাধুতা, দুর্বলতা, দায়িত্বহীনতার বিষয়েও যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহনের বিকল্প নেই। পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বন্যেরা বনে সুন্দর আর তাই সুন্দরবনের অভ্যন্তরে কর্মরত, বনজীবী সহ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার জনসাধারনকে উদ্বুদ্ধ করন করতে হবে যেন বন সম্পদ লুণ্ঠনে জড়িত না হয়। ওসমান গনীর পেতাত্বারা সুন্দরবনের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে আমাদের প্রিয় সুন্দরবন কেবল সৌন্দর্য ও জৌলুস হারাবে তা নয় ধ্বংস হবে বন সম্পদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com