এস এম জাকির হোসেন শ্যামনগর থেকে ॥ সাতক্ষীরা’র শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন ১৭ বিজিবি এর ব্যবস্থাপনায় সুন্দরবনে বিরল প্রজাতির ৪ টি মদনটাক পাখি অবমুক্তকরণ করা হয়েছে। গত ৩১ জুলাই ২০২৪ তারিখে মালিকবিহীন অবস্থায় ৪টি মদনটাক পাখি পাচারকালে চুয়াডাংগা ব্যটালিয়ন (৬ বিজিবি) কর্তৃক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দায়িত্বপূর্ণ ঠাকুরপুর বিওপি’র সীমান্ত এলাকা হতে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত পাখিগুলোকে সুন্দরবনে অবমুক্তকরণের নিমিত্তে রিজিয়ন সদর দপ্তর, যশোর এর মাধ্যমে নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন (১৭ বিজিবি) কর্তৃক সংগ্রহ করা হয়। বিরল প্রজাতির বণ্য প্রাণী রক্ষার নিমিত্ত গতকাল ৩ আগস্ট শনিবার দূপুর ১২টায় সিগন্যালস্ পরিচালক, অধিনায়ক নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন (১৭ বিজিবি) লেঃ কর্নেল মুহাম্মাদ সানবীর হাসান মজুমদার কর্তৃক বিপন্নপ্রায় ৪টি মনদটাক পাখি সুন্দরবনের অভ্যন্তরে কলাগাছিয়া এলাকায় অবমুক্ত করেন। পাখি অবমুক্তকরণের সময় নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন (১৭ বিজিবি) এবং আরবিজি কোম্পানীর কর্মকর্তাগণ সহ সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া বন টহল ফাঁড়ির ইনর্চাজ মোঃ স্বাদ আল জামি এবং স্থানীয় প্রিন্টও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, মদনটাক সিকোনিডাই পরিবারভুক্ত লেপ্টোন্টাইলোস জলচর পাখি। জলাভূমিতে বিচরণরত অন্যান্য জলচর পাখির সাথে এর বেশ মিল রয়েছে। সাধারণতঃ এটি একাকী চলাফেরা করতে ভালবাসে। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ সমূহে এদের দেখা মেলে। সারা পৃথিবীতে মাত্র ৩৯ হাজার ৩০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এদের আবাস। বাংলাদেশের সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে এই বিপন্ন প্রজাতির পাখি বসবাস করে। বিগত কয়েক বছর ধরে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। যার ফলশ্র“তিতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (ওটঈঘ) কর্তৃক এই প্রজাতিটিকে সংকটপন্ন, বা বিপন্ন প্রায় বলে ঘোষণা করেছে। এই পাখি সাধারণত বড় কোনো বিলের কাছে, নদীর মোহনার কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে বসবাস করে থাকে। বিপন্ন প্রায় এই মদনটাক পাখিকে স্থানীয়ভাবে অনেকে হারগিলাও বলে থাকে। নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন (১৭ বিজিবি) সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য রক্ষার কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।