দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সাথে হামাসের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পুরোপুরি ভেস্তে গেছে। ইসরাইলের অনমোনীয় মনোভাবের কারনে যুদ্ধ বিরতি না হওয়ায় পবিত্র রমজান মাসে ও দখলদার বাহিনী রোজাদার ফিলিস্তিনিদের উপর বিমান হামলা পরিচালনা করছে আর রোজা অবস্থাতেই মুত্যৃমুখে পতিত হচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। গতকালও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকাতে বিমানহামলা চালিয়েছে। রাফা শহর জীবন মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছে। এই শহর দৃশ্যতঃ আশ্রয় শিবিরে পরিনত হয়েছে। রাফার বারতলা ভবনের ধ্বংস স্তুপের মধ্যে নিহত ফিলিীস্তনিদের লাশের পঁচা গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য গত কয়েকদিন পূর্বে গাজা উপত্যকার সর্ব বৃহৎ বারতলা বিশিষ্ট ভবনটি দখলদার ইসরাইলি বাহিনী বিমান হামলায় মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে পুরো ভবনটি ধ্বংস করে। মধ্য গাজা ও রামাল্লা শহরে ঘরে ঘরে তল্লাশী অভিযান শুরু করেছে। রোজার সময়ে এমন বিষন্ন এবং ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝে দখলদার বাহিনীর গণহত্যা কেবল মাত্র ইসরাইলের জন্যই মানানসই আর সেটাই চলছে পুরো গাজা উপত্যকায়। রোজার শুরুতে জাতিসংঘ কর্তৃক ইফতার বিতরন কার্যক্রমে যখন অভূক্ত ফিলিস্তিনিরা ইফতার সংগ্রহ করার লক্ষে উপস্থিত হয় তখন দখলদার বাহিনী উক্ত রোজাদারদের উপর গুলি বর্ষন করলে ঘটনাস্থলে। পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয় এবং শতাধীক আহত হয়। এদিকে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে গতকাল পর্যন্ত দখলদার বাহিনীর হামলায় বত্রিশ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং সত্তর হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ ও সংকুচিত হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরন করছে ফিলিস্তিনিরা। এদিকে অভূক্তঅবস্থায় ফিলিস্তিনিরা রোজা রাখছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে গাজায় মানবিক বিপর্যয় ইতিহাসের সর্ব নিম্ন পর্যায় অতিক্রম করেছে। খাদ্যহীনতা চিকিৎসা হীনতায় বিপর্যস্থ ফিলিীস্তনিরা। ইসরাইলি হামলায় যে পরিমান ফিলিস্তিনি মৃত্যু হয়েছে যে অপেক্ষা অধিকতর ফিলিস্তিনির মৃত্যু হবে যদি না তাদেরকে যথাযথ ভাবে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করা না হয়। গাজার হাসপাতাল গুলোর অধিকাংশই মাটির সাথে মিশে গেছে। মধ্য প্রাচ্যের অন্যতম বৃহত্তম হাসপাতাল আল আকসার সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। হাসপাতালটির অভ্যন্তরে হামাসের সুড়ঙ্গ আছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার উক্ত হাসপাতাল কমপ্লেক্স ও দখলদার বাহিনী বিমান হামলা পরিচালনা করে এব হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ফিলিস্তিনিদের হত্যা ও গ্রেফতার করে। এখানেই শেষ নয় হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও সেবিকাদেরকেও হত্যা করে। গাজা শতাধীক মসজিদ বিমান হামলায় মাটির সাথে একাকার করেছে দখলদার বাহিনী যে কারনে ফিলিস্তিনিরা নামাজ পড়ার সুযোগ হতে বঞ্চিত হচ্ছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছে একাধিক এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে তারা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে উক্ত সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা গেছে মাটির সাথে মিশে থাকা মসজিদ গুলোতে নামাজ আদায় করছে ফিলিস্তিনিরা। আল জাজিরা আল আকসা মসজিদ নিয়েও একটি চমৎকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর কঠোর বিধি নিষেধ স্বত্ত্বেও হাজার হাজার ফিলিস্তিনিরা আল আকসা মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামাজ আদায় করছে। আল আকসা মসজিদ কমপাউন্ড এলাকার চিত্র দেখলে মনে হবে না যেড গাজায়ঢ প্রতিদিনই চলছে মৃত্যুর মিছিল। আল আকসা মসজিদে দিন রাত সর্ব সময় হাজার হাজার ফিলিস্তিনির উপস্থিতি এবং নামাজ আদায় যুদ্ধ বিধ্বস্থ, মৃত্যুপুরী গাজাবাসির জন্য স্বস্তির খবর। এদিকে হামাস আবারও ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পেশ করেছে। রয়াটার্স জানায় হামাসের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির তথ্য ইতিমধ্যে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিশরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লোহিত সাগরে হুতি যোদ্ধাদের জাহাজে হামলায় ঘটনা থেমেনেই। আল জাজিরা জানিয়েছে ইতিপূর্বে ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজ আটক ও উক্তজাহাজে থাকা ত্রিশ জন কেবিন ক্রুকে হুতিরা হামাসের কাছে হস্তান্তর করেছে। হামাস তাদেরকে পনবন্দী হিসেবে নিজেদের জিম্মায় রেখেছে। ক্ষুধায় পরিপূর্ণ গাজার অধিবাসীরা পশুখাদ্য থেকে শুরু করে ঘাসও লতা পাতা দিয়ে ইফতার করছে অন্যদিকে ত্রানবাহী গাড়ী গাজায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছে ইসরাইল।