দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ শিশুর প্রথম শিক্ষা হয় মায়ের কাছে বা পারিবারিক পরিবেশে। তারপর হাটি হাটি পা যত্রা পরবর্তী সময় গুলোতে চার/পাঁচ বছর বয়স হতেই স্কুল যাত্রা। শিশুমন সর্বদা কৌতুহলী আর অনুকরণ প্রিয় সেই সাথে অজানা থাকে সবকিছু। দেশের শিশু শিক্ষার্থীদের বৃহৎ অংশ তিন চাকার ভ্যানে চড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা যাত্রায় সংশি¬ষ্ট কিন্তু বাস্তবতা হলো তিন চাকার ভ্যানগাড়ী যা ব্যাটারী চালিত বা ইঞ্জিন চালিত। প্রতিটি ভ্যান গাড়ী তিন চাকার এবং চারিপার্শ্বে ও উপরে টিনের ছাউনি। চালকের প্রাতিষ্ঠানিক সনদ আছে কি নেই বা সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ ভ্যান গাড়ী চালকের সনদ দেয় কিনা সেটারও প্রশ্ন সাপেক্ষ। যে শিশু পিতা মতা ছেড়ে ভ্যানগাড়ীতে চেপে স্কুল যাত্রায় রত সেই শিশুর স্কুল যাত্রা কি শঙ্কা মুক্ত। একটি ভ্যানে ছয় থেকে আট জন শিশু পাশাপাশি বসে চলেছে। কোন ধরনের দুর্ঘটনা হতে তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারবে এমন নিশ্চয়তা অন্তঃসার শুন্য। বিধায় শিশুরা নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা নিয়েই স্কুলে আছে। একজন বয়স্ক মানুষ দুর্ঘটনায় পতিত হলে নিজেকে রক্ষার জন্য তার শারীরিক অবস্থা মানসিক ভারসাম্য বুদ্ধি বুঝ প্রয়োগ করতে সক্ষম কিন্তু এক্ষেত্রে শিশু অক্ষম। অনুমোদনহীন ব্যটারী ও ইঞ্জিনভ্যানে শিশুদের স্কুলে পাঠানো কোন অবস্থাতেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনা। প্রতি মুহূর্তে অভিভাবকদেরকে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। তারপরও সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরা জেলা শহর হতে শুরু করে উপজেলা ভিত্তিক বেসরকারী বা ক্ষেত্র বিশেষ সরকারি স্কুলে স্কুল ভ্যান নামক ভ্যানে শিশুদের স্কুল যাত্রা চলছে। সরকারি স্কুলগুলোতে অভিভাবকরা কোন কোন সময় তাদের উদ্যোগে ভ্যান গাড়ী সৃষ্টি করে অন্যদিকে বেসরকারি (কিন্ডারগার্ডেন) স্কুল গুলো কতৃর্পক্ষ স্কুল ভ্যানের ব্যবস্থা করে থাকে। শিশুদের স্কুলে যাওয়া অনুমোদনহীন স্কুল ভ্যান নিয়ে উদ্বেগ, শঙ্কা থাকলেও কাক্সিক্ষত এবং সময়উপযোগী উদ্যোগের বড়ই অভাব। কিছুদিন পূর্বে জেলার পারুলিয়া এলাকা থেকে শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্কুলভ্যানটি হাদিপুর এলাকায় যেয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হলে শিশুরা আহত হয়। এ ধরনের দুর্ঘটনাও হতাহতের কবল হতে রক্ষা পায় শিশু শিক্ষার্থীরা। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় শহরের বহুসংখ্যক এবং শিক্ষারমান এগিয়ে থাকা শিশু শিক্ষালয়ের অধিকাংশের স্কুলবাসের অনুপস্থিতি এবং অনেক ক্ষেত্রে স্কুলভ্যানের চলাচল। শহরের সীমানা পেরিয়ে উপজেলা ভিত্তিক শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর স্কুলবাস চোখে পড়ে না। একাধিক অভিভাবক তাদের শঙ্কা ও উদ্বেগ হতে জানান স্কুল ভ্যান ভাড়া বাবদ আমাদেরকে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয় সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো যদি স্কুল বাস করে তাহলে নিরাপত্তা শঙ্কা যেমন থাকে না অনুরূপভাবে সময়ও সাশ্রয় হয়। এক্ষেত্রে যানজটমুক্ত পরিবেশের অবতারণা ঘটে। শিশুরা নির্দিষ্ট কোন মা—বাবার সন্তান নয়, তারা সকলের সন্তান। আগামী দিনের বাংলাদেশ বিধায় শিশুদেরকে জীবনের পড়ালেখার ও স্কুল গমনের শুরু থেকে যেমন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মব্যস্ত মা বাবাদের পক্ষে সন্তানের সাথে স্কুলে যাওয়া এবং আসাটা কষ্টকর। শিশু সকলে আর আমাদের সন্তানদেরকে শিক্ষা যাত্রায় কোন ধরনের নিরাপত্তাহীনতা স্পর্শ করুক বা আশঙ্কা থাকুন এটা কোন ভাবেই গ্রহনীয় নয়।