ঢাকা ব্যুরো \ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সাক্ষাত হয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনার রবিবার (১১ডিসেম্বর) সংসদ ভবনে স্পীকারের দপ্তরে এলে উভয়ের মধ্যে এ সাক্ষাৎ হয়। এ দিন বিকাল ৩টায় পরস্পরের মধ্যে এসাক্ষাত হয়। সাক্ষাৎতে উভয়ের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়। আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সুদীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জ্বালানির ক্ষেত্রে সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর ক্ষমতায়ন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন সরকার প্রধান শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও আদর্শিক নেতৃত্বই দু’দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভীত স্থাপন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশি শরণার্থীদের আশ্রয় ও সকল রকম সহযোগিতা দেয় ভারত, যা এদেশের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুসংহত হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে গঙ্গার পানিবন্টন চুক্তি, ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানা চুক্তি ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের পারস্পরিক সহযোগিতা দু’দেশের সম্পর্ককে জোরদার করবে। এ সময়, বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের সময়ে জ্বালানি ক্ষেত্রে ও রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে ভারতের সহযোগিতা কামনা করেন স্পীকার। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মানুষের ভাষা-সংস্কৃতিগত সাদৃশ্য উলেখযোগ্য। সাধারণ নদী অববাহিকাসহ আরও অনেক সাধারণ বিষয় দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান। সেভেন সিস্টারস রাজ্যসমূহসহ সমগ্র ভারতের সঙ্গে রেলওয়ে ও অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের দ্বারা উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার অগ্রগতি সম্ভব। সম্প্রতি আসাম বিধানসভার স্পীকার শ্রী বিশ্বজিৎ দাইমারির নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ পরিদর্শন ও মতবিনিময় করেন, যা ভারত-বাংলাদেশ সুদীর্ঘ সম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে। এ সময়, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ পঞ্চাশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে ভারত লোকসভার স্পীকার ওম বিরলাসহ অন্যান্যদের আমন্ত্রণের আগ্রহ প্রকাশ করেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রশংসা করে হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ। দুই দেশের সাংস্কৃতিক ভীত একই। সংসদীয় প্রতিনিধি দলের পারস্পরিক সফর বিনিময়ের মাধ্যমে দু’দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরু শক্তিশালী হতে পারে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে মোকাবেলা করতে পারলে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার। এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।