এফএনএস: কোনো দেশ স্যাংশন দিলে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু কিনবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এখন আবার ওই স্যাংশন দেওয়ার একটা প্রবণতা, যাদের দিয়ে সন্ত্রাস দমন করি, তাদের ওপর স্যাংশন। আমি বলে দিয়েছি, যে দেশ স্যাংশন দেবে-তাদের কাছ থেকে আমি কিচ্ছু কিনবো না। গতকাল শনিবার রাজধানীর রমনায় ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৬০তম কনভেনশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কী করবে, বাবা-মা, ভাই-বোন সব মেরে ফেলে দিয়েছে। আমার তো হারাবার কিছু নেই। কিন্তু আমি আমার দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রকৌশলীসহ সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহŸান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা আসার পর থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করবো, আগামীতে এই উন্নয়নের ধারাটা যেন চলমান রাখতে পারি। সেই বিষয়ে সবাই আন্তরিক থাকবেন। সেভাবে আপনারা কাজ করবেন। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে জনগণ হবে স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট উৎপাদন ব্যবস্থা থাকবে। চিকিৎসা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে দেশের মানুষ স্মার্ট হবে, সেটাই আমরা চাই। দক্ষ জনগোষ্ঠী আমরা গড়ে তুলতে চাই। কোনো জায়গা থেকে আমরা পিছিয়ে থাকবো না। প্রকৌশলীদের দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করার আহŸান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে যেখানে কাজ করবেন নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে, আত্মমর্যাদা বোধ নিয়ে, দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করতে হবে। কোন প্রকল্প দেশের মানুষের জন্য কতটা দরকার-তা বিবেচনা করে সরকার প্রকল্প গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যে প্রকল্প নিই, আগে চিন্তা করি দেশের মানুষ কতটুকু উপকার পাবে। আর সেই প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে রিটার্ন কী আসবে। কত দ্রæত আসবে। তিনি বলেন, কোনো দেশ বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে কোনো প্রকল্প দিলে আমি কিন্তু সেই প্রকল্প গ্রহণ করি না। সেটা আপনাদের আমি জানিয়ে দিচ্ছি। সেটা আমি করবোও না। আমার দেশের জন্য প্রযোজ্য যেটা আমরা সেটাই করবো। সামরিক শাসকদের সময় প্রকল্পের নামে টাকা লুট হতো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একসময় সামরিক শাসকদের সময় কী ছিল, অনেক টাকা দিয়ে প্রজেক্ট বানায়, ওই টাকা পরের কাছে তুলে দেওয়া এবং তাদের কাছে কমিশন খাওয়া! আমার দেশের টাকা আমি তুলে দেবো আরেকজনের হাতে? আর তার কাছ থেকে আবার কমিশন খাবো? ঘুষ নেবো? এই ধরনের মানসিকতা কেন থাকবে! এটা তো আত্মহননের শামিল। বরং একটা টাকা বাঁচাতে পারি কিনা, সেই চেষ্টাটাই করতে হবে। অনেক দেশ পদ্মা সেতুর মতো সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের সহযোগিতা চায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে আমাদের সক্ষমতা শুধু দেখাইনি, আমাদের যারা সেখানে কাজ করেছেন, আমাদের প্রকৌশলী থেকে শুরু করে সবারই নিজস্ব অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন যেমন অনেক দেশ আমাদের কাছে আসছে, ব্রাজিল তাদের অ্যামাজনে ব্রিজ বানাতে চায়। আমরা বলেছি, আমাদের লোকজন রেডি আছে, যখনই দরকার আমরা সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। আইইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন, আইইবি ঢাকা সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মোহাম্মদ আবুল হোসেন ও সম্মানি সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার।