দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম গতকাল সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেছেন ও সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। সংবাদ পত্র ও সাংবাদিকতার মান সংরক্ষনে সাংবাদিকতার নীতি ও নৈতিকতা এবং সাংবাদিকতার আচরনবিধি প্রতি পালন সম্পর্কিত বিষয়ক সেমিনার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে উক্ত মত বিনিময় ও সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, কেবল মাত্র নেতিবাচক নয় ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করতে হবে। সংবাদ নিজেই লিখতে হবে অন্যের সংবাদ কপি পেষ্ট করে কোন অবস্থাতেই ভাল সংবাদ কর্মি হওয়া সম্ভব নয়। হলুদ সাংবাদিকতা দেশ, জাতি সহ গনমানুষের জন্য সুখের নয়। হলুদ সাংবাদিকতায় দেশ ভরে গেছে এটা নিয়ন্ত্রন জরুরী। হলুদ সাংবাদিকতা রোধে মুলধারার সাংবাদিকদেরকে এক জোট হতে হবে। তিনি আরও বলেন ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু প্রেস কাউন্সিল গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের অত্যন্ত ভালবাসতেন, সম্মান করতেন আর তাই তাদের জন্য বড় কোন শাস্তি রাখেনি। প্রেস কাউন্সিলের বিচারিক ক্ষমতা তিরস্কারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমান সময়েও সেই আইন বহাল আছে। বর্তমান সময়ে প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার উপস্থিতি। প্রেসকাউন্সিলের পক্ষ হতে দশ লাখ টাকা জরিমানা করার ক্ষমতা চেয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এটা পাস হলে প্রেসকাউন্সিল শক্তিশালী হবে। তিনি সাতক্ষীরার সাংবাদিকদের কাজ করার বিশেষ ক্ষেত্র বিদ্যমান বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সুন্দরবন বেস্টিত সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিকতার জন্য একটি আদর্শ জায়গা বলে মন্তব্য করেন। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ডঃ উৎপল কুমার সরকার বলেন, সংবাদপত্রের প্রাণ মফম্বলের সাংবাদিকরা। তারা কঠোর পরিশ্রম সহ নানা ধরনের ঝুকির মধ্যে থেকে সাংবাদিকতা করে থাকেন কিন্তু নায্য সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত। মালিকপক্ষ তাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করনের অপেক্ষা মালিক পক্ষের স্বার্থরক্ষায় কাজ করিয়ে নেন। মুক্ত আলোচনায় সাতক্ষীরা হতে প্রকাশিত ও বহুল প্রচারিত দৈনিক দৃষ্টিপাত সম্পাদক জিএম নূর ইসলাম প্রেসকাউন্সিল চেয়ারম্যান সহ তার সফর সঙ্গীদের সাতক্ষীরায় আগমন উপলক্ষে স্বাগত জানান। সংবাদ পত্র প্রকাশনার ক্ষেত্রে বর্তমান প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন প্রিন্ট মিডিয়া চরম দুঃসময় অতিক্রম করছে। কাগজ, কালি সহ অপরাপর মুদ্রন সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারনে সংবাদ পত্র প্রকাশ করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা যারা সৎ সাংবাদিকতা করি, আপাদমস্তক প্রকাশক ও সম্পাদক তাদের জন্য পত্রিকা প্রকাশনা অনেক বেশি কষ্টের। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রত্যাশা করে বলেন, ক্রোড়পত্র বন্টনে সুষমনীতি অনুসরন সহ মফস্বল জেলা হতে প্রকাশিত সংবাদ পত্র গুলোকে ক্রোড়পত্র দিলে কিছুটা বৈধ আর্থিক সুবিধা পাওয়া সম্ভব। জেলার ক্ষেত্রেও ক্রোড়পত্র বিতরনে সম অধিকার নিশ্চিত এবং সার্কুলেশনের মূল্যায়ন নীতি অনুসরনের আহবান জানান। মতবিনিময় ও সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসার জাহারুল ইসলাম, কালের চিত্র সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, পত্র দূতের উপদেষ্টা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভিন সেজুতি, সাতনদী সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সময় টিভির মমতাজ আহমদ বাপি, সাপ্তাহিক সূর্যের আলোর সম্পাদক ওয়ারেশ খান চৌধুরী, ইচ্ছেনদী ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শেখ তৌহিদুর রহমান ডাবলু, দৃষ্টিপাত নির্বাহী সম্পাদক আবু তালেব মোল্যা, প্রেসক্লাব সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সুজন, শহিদুলাহ কায়সার সুমন, আমেনা বিলকিছ ময়না, দৃষ্টিপাতের চীফ রিপোর্টার মাছুদুর জামান সুমন, স্টাফ রিপোর্টার মীর আবু বকর প্রমুখ।