আশাশুনি প্রতিনিধি/শ্রীউলা (আশাশুনি) প্রতিনিধি \ আশাশুনির শ্রীউলায় মামলাবাজ আব্দুল হাকিমের হাত থেকে রেহাই পেতে সাবেক স্ত্রী, মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও সচেতন এলাকাবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার নাকতাড়া কালিবাড়ী বাজারস্থ অস্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানবন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আব্দুল হাকিমের ডিভোর্সী স্ত্রী লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের রেশমা খাতুন বলেন, কলেজে পড়াশোনা করার সময় ৯/৭/২০১৭ তারিখে নাকতাড়া গ্রামের জবেদ আলী সরদারের ছেলে মাছ ব্যবসায়ী হাকিম স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও রাস্তা থেকে আমাকে তুলে নিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে করে। কিন্তু তার স্ত্রী থাকাকালিন সময়ে সে তার নিজের বাড়িতে তোলেনি। আমি তার ছোট স্ত্রী। আমাদের আড়াই বছরের একটি মেয়ে আছে। স্থানীয় লোকজনের কাছে সে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণী। সে টাকা শোধ দিতে না পেরে যৌতুকের দাবিতে আমাকে মারধর করতে থাকে। এর মধ্যে ১৫/৯/২০২১ সালে ১২ লক্ষ টাকার দুটি চেক জালিয়াতি মামলায় তাকে প্রায় ৯ মাস কারাগারে থাকতে হয়েছে। জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় এসে সে পাওনাদারের শায়েস্তা করতে আমাকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানোর পায়তারা করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করলে সে আমাকে মারধর করতে থাকে এবং আমার দুঃশ্চরিত্রা প্রমান করতে নিজে আমার নগ্ন ছবি তুলে বিভিন্ন লোকজনকে দেখিয়ে বেড়াচ্ছে। এরপরও তার কথা না শোনায় সে তার সহযোগী লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের মালেক মোলার ছেলে মাদকাসক্ত বন্ধু আলম মোলাকে সাথে নিয়ে আমার নগ্ন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করতে থাকে। উপায়ন্ত না পেয়ে ৭/৮/২০২২ তারিখে আমি আমার স্বামীকে ডিভোর্স প্রদান করি। এতে হাকিম ক্ষিপ্ত আমার বিরুদ্ধেও মামলা করে। মাদকাসক্ত মামলাবাজ স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েও তার লোকজনের হুমকিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। রেশমার চাচা আব্দুর জব্বার বলেন, হাকিম যে অভিযোগ এনে কোর্টে মামলা করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তার কাছে বহুলোক টাকা পাবে। আব্দুল গাফফার জানান, আমি তার কাছে ৬ লক্ষ টাকা পাবো। সে টাকা না দিয়ে উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছে। হাফিজুর রহমান জানান, হাকিম আমার বন্ধু হওয়ার সুবাদে জেলে যাওয়ার আগে তাঁর মেঝ স্ত্রীর সামনে তাকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ধার দিয়েছি। জেল থেকে এসে সে আমার ধারের টাকার কথা অস্বীকার করে উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। শাহাদত হোসেন জানান, হাকিম সুদখোর, মাদকাসক্ত, নারীলোভী এবং মামলাবাজ। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আমরা এই মামলাবাজের হাত থেকে বাঁচতে চাই। এ ব্যাপারে আব্দুল হাকিম বলেন, জেলে যাওয়ার পর থেকে আমার স্ত্রী রেশমা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। শনিবার (গতকাল) ইউনিয়ন পরিষদে একটা সালিশ ছিল। আমি সেখানে যাবার জন্য তৈরি হলে পথিমধ্যে মাড়িয়ালা মোড়ে আমাকে তার লোকজন মারপিট করেছে। মামলা থেকে বাঁচতে রেশমা তারা লোকজন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান দিপংকর বাছাড় দিপু জানান, আজ আব্দুল হাকিম ও তার ছোট স্ত্রী রেশমার একটি সালিশের দিন ধার্য ছিল। হাকিম ১৫ দিনের সময়ের আবেদন করলে তাকে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। পথে উভয় পক্ষের বাকবিতন্ডার ঘটনা লোক মুখে শুনেছি।