এফএনএস স্পোর্টস: স্পেন্সার জনসনের দুনিয়া বদলে গেল কত দ্রæত! গত মাসে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে খেললেন মেজর লিগ ক্রিকেটে। এরপর কানাডায় গেলেন গেøাবাল টি-টোয়েন্টি খেলতে। সেখান থেকে দেশে ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু আচমকাই সুযোগ এলো ইংল্যান্ডের দা হান্ড্রেড-এ খেলার। এর মধ্যেই খবর পেলেন অস্ট্রেলিয়া দলে প্রথমবার ডাক পাওয়ার। সেই উপলক্ষ উদযাপন করলেন তিনি হান্ড্রেড অভিষেকে অবিশ্বাস্য বোলিং করে। ওভালে বুধবার ম্যানচেস্টার অরিজিনালসের হয়ে ওভাল ইনভিন্সিবলসের বিপক্ষে ২০ বল করে ১৯টিতেই কোনো রান দেননি জসনন। শেষ পর্যন্ত ¯্রফে ১ রান দিয়ে বাঁহাতি এই ফাস্ট বোলার শিকার করেন ৩ উইকেট। হান্ড্রেড-এ অভিষিক্ত কোনো বোলারের জন্য এটি সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং তো বটেই, টুর্নামেন্টের এই তিন মৌসুমে সব মিলিয়েও ২০ বলে এতটা কম রান দেননি আর কোনো বোলার। প্রথম স্পেলে জনসনের সামনে ছিল জস বাটলার ও ফিল সল্টের মতো আগ্রাসী দুই ব্যাটসম্যান। তার পরও প্রথম ৫ বলে কোনো রান দেননি এই পেসার। পরের ৫ বলে ¯্রফে একটি সিঙ্গেল আসে বাটলারের ব্যাটে। এই দুটির মাঝের ওভারে গাস অ্যাটকিনসনকে টানা দুটি ছক্কা মারেন বাটলার। কিন্তু জনসনের সামনে আটকে যান তিনি। প্রথম স্পেলে ১০ বলে ¯্রফে ওই ১ রান দেন জনসন। পরে শেষ দিকে ফিরে অবিশ্বাস্যভাবে টানা ১০ বলে কোনো রান না দিয়ে উইকেট নেন ৩টি। অথচ ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে খেলা তো দূরের কথা, ২৭ বছরের জীবনে আগে কখনও এই দেশে পা পড়েনি অস্ট্রেলিয়ান এই পেসারের। এবার সুযোগটি আসে হুট করেই। পাকিস্তানি পেসার ইহসানউল্লাহ চোটের কারণে ছিটকে পড়ায় বিকল্প খুঁজছিল ম্যানচেস্টার অরিজিনালস। দলটির অস্ট্রেলিয়ান কোচ টম মুডি তখন জনসনকে নেন বদলি হিসেবে। কানাডায় গেøাবাল টি-টোয়েন্টিতে তিনি ছিলেন সারে জাগুয়ার্সে লিটন কুমার দাসের সতীর্থ। ফাইনাল শেষে সেখান থেকে উড়ে এসে এবার আলো ছড়ালেন ইংল্যান্ডে। ম্যাচ শেষে তিনি স্কাই স্পোর্টসে বলেন, তার নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য লাগছে সবকিছু। “এই মুহূর্তে কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে, বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে। সব ঝাপসা লাগছে। নিজেকে চিমটি কেটে দেখছি সত্যি কি না। চোটের কারণে অনেক কঠিন সময় পেরিয়ে আসতে হয়েছে আমার। এখন এই ২৭ বছর বয়সে দেখছি জীবনের অন্য দিক। এখন ¯্রফে নিজের খেলা আমি উপভোগ করছি এবং এখানে থাকতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।” চোটের কারণেই মূলত অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে শীর্ষ পর্যায়ে আসতে এতটা অপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে। ২০১৭ সালে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে একটি ম্যাচ খেলে তিনি এরকম হারিয়ে যান। পরে ২০২১ সালে আরও দুটি ম্যাচ খেলে আবার পড়ে যান আড়ালে। অবশেষে গত বিগ ব্যাশ দিয়ে তিনি আলোয় আসেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথমবার খেলতে নেমেই। ব্রিজবেন হিটের হয়ে ১০ ম্যাচে তার উইকেট ছিল ৯টি। তবে শেষের ওভারগুলোয় দুর্দান্ত বোলিং করে তিনি নজর কাড়েন। বিগ ব্যাশের পথ ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও শুরুটা হয় তার অসাধারণ। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেকে প্রথম ইনিংসে উইকেটশূন্য থাকলেও পরের ইনিংসে শিকার করেন ৬ উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৪৭ রানে নেন ৭ উইকেট! দ্রæতই জায়গা পান অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলে। সেখানে প্রথম ইনিংসে নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে উইকেট নেন ৪টি। এরপর মেজর লিগ ক্রিকেট ও গেøাবাল টি-টোয়েন্টি হয়ে এখন তিনি হান্ড্রেড-এ। এই মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি দলেও তিনি ডাক পেয়েছেন। সব মিলিয়ে নতুন এক পেস তারকার আগমনী দেখছে ক্রিকেট বিশ্ব।