দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যা এবং হামলা যেমন চলছে অনুরুপ ভাবে গাজার প্রতিটি প্রান্তে প্রতিনিয়ত হামাস যোদ্ধাদের হামলায় দখলদার সেনাদের মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত সপ্তাহে হামাস যোদ্ধাদের আক্রমনে পাঁচ ইসরাইলি সেনার নিহত হওয়ার পর এবারগাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শরনার্থী শিবির সংলগ্ন এলাকাতে হামাসও দখলদার বাহিনীর মুখেমুখি সংঘর্ষ অন্তত বারজন দখলদার সেনার নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কাতার ও ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছে দখলদার ইসরাইল বাহিনী সপ্তাহব্যাপী আল জাবালিয়া এলাকাতে সাধারন ফিলিস্তিনিদের উপর বিমান হামলা ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে একই সাথে উক্ত এলাকার বসতবাড়ী গুলোতে বিমান হামলা চালিয়ে অধিকাংশ বসতবাড়ী মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। দখলদার বাহিনী নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করার পাশাপাশি হামাস যোদ্ধাদের স্থাপনায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান পরিচালনা শুরু করে। গতকাল হামাস যোদ্ধারা আল জাবালিয়া এলাকায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং তুমুল বেগে গোলাবর্ষন শুরু করে। আল জাজিরা টেলিভিশন আরও জানায় দখলদার বাহিনীর অন্তত পঞ্চাশ জন সেনা আহত হয়। ঘটনার পরপরই ইসরাইলি বিমান বাহিনীর বিমানগুলো জাবালিয়া এলাকায় চক্কর দিতে থাকে এবং অবতরন করে নিহত ও আহত ইসরাইলি সেনাদের নিয়ে ইসরাইলি ভূ-খন্ডে প্রবেশকরে। পশ্চিমামিডিয়া ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে দীর্ঘ সাত মাসের অধিক সময় যাবৎ হামাস ইসরাইলে যুদ্ধের মাঝে গতকাল একসাথে বারজন ইসরাইলি সেনার নিহত হওয়ার ঘটনা একটি উল্লেখযোগ্য। উল্লেখ্য ইতিপূর্বেও দখলদার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সেনা হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ও প্রতিরোধে নিহত হয়েছে। ইসরাইলের প্রতি বন্দী কল্যান কেন্দ্র সমূহে বিপুল সংখ্যক হামাসের আক্রমনেও হামলায় আহত ইসরাইলি সেনাদেরকে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। এদিকে দখলদার ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত উতাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একসাথে বিক্ষোভ করছে। মার্কিন পুলিশ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে। এদিকে হামাস যোদ্ধাদের হামলায় গাজায় অবস্থানরত ইসরাইলি সেনাদের পাশাপাশি ইসরাইলে অবস্থানরত সেনা ও সাধারন ইহুদীরা নিরাপদ নয়। কারন হামাসের হামলার ক্ষেত্র ইসরাইলি ভূখন্ডে বিস্তৃত হয়েছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে হামাস সদস্যরা ইসরাইলের ভূ-খন্ডে রকেট হামলা চালিয়েছে একই সাথে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে ক্ষেপনাস্ত্র হামলাও চালিয়েছে। সাগরে হুতি যোদ্ধারা ইসরাইলি গাজী একটি জাহাজে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে। হুতির মুখপাত্র ইয়াহিয়া তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে উক্ত মার্কিন জাহাজে হামলার দায় স্বীকার করে বলেছৈ হুতিদের পূর্ব প্রতিশ্র“ত অনুযায়ী যতদিন না পর্যন্ত দখলদার ইসরাইল গাজায় হামলা পরিচালনা করবে ততোদিন পর্যন্ত হুতিরা সাগরে ইসরাইল সহ ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজে ও নৌযানে হামলা পরিচালনা করবে। এদিকে হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেড বারবার আলোচনায়। দখলদার ইসরাইলি সেনা ট্রাঙ্ক সহ সামরিক যানে প্রতিনিয়ত হামলা চালিয়ে কাসেম ব্রিগেড বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচিত হচ্ছে। রাফায় দখলদার বাহিনীর হামলায় দৃশ্যতঃ ইসরাইল ও মিশরের মধ্যে চরম অবনতি সম্পর্কের অবতরনা ঘটেছে। শহরটির চারদিক হতে বিমান হামলার পাশাপাশি দখলদার বাহিনী স্থল হামলা পরিচালনা করছে। শহরটির রাস্তায় রাস্তায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের লাশ আর লাশ। এখানেই শেষ নয় বসতবাড়ী গুলোতে বিমান হামলার কারনে মাটির সাথে মিশে যাওয়া ধ্বংস্তুপের মধ্যে শত শত ফিলিস্তিনির লাশ। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামাস ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময়ের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা বড় বাঁধা হিসেবে কাজ করছে। তিনি আরও ঘোষনা দিয়েছে হামাস অবশ্যই দখলদার ইসরাইলি বাহিনীকে নির্মূল ও নিয়ন্ত্রন করবেই। মালেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে কাতার সফর করছে। দেশটিতে অবস্থান কালে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম হামাস প্রধান সহ অপরাপর নেতাদের সাথে স্বাক্ষাত করেছেন। এদিকে গাজার সামগ্রীক পরিস্থিতি ও মানবিক বিপর্যয় রোধে জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে অবশ্যই গাজায় পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে এবং গাজায় সুচিকিৎসা ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে।