দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইলী বাহিনীর বিমান হামলা ও স্থল হামলা দিনে দিনে জোরদার হচ্ছে কেবল জোরদার হচ্ছে তা নয় মধ্যযুগীয় বর্বরতায় বিপর্যস্থ ফিলিস্তীনিরা। অসহায়, নিরস্ত্র আশ্রয়হীন মৃত্যুপথ যাত্রী ফিলিস্তীনিরা যখন বেঁচে থাকার প্রানন্তকর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়ে ত্রানের খাদ্যই একমাত্র অবলম্বন সেই আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় গ্রহনকারী ফিলিস্তিিনদের উপর নির্মম বিমান হামলা চালিয়ে গত দুই দিনে একশত পঁচানব্বুই জনকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইলী বাহিনী। জাতিসংঘ মহাসচিব অন্তোনিও গুয়েরেস গাজার শরনার্থী শিবিরে ইসরাইলের বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এই হামলা ভয়ানক গাজার জবালিয়া শরনার্থী শিবিরে লাশ আর লাশ, পুরো শরনার্থী শিবির জুড়ে মৃত দেহ এবং মৃত দেহের অংশ বিশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শরনার্থী শিবিরে বিমান হামলা পরবর্তি ফিলিস্তীনিদের হত্যার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এমন ভয়াবহ হামলা বন্ধের আহবান জানিয়েছেন। ইসরাইলী বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের নির্মুলে বিমান ও স্থল হামলা জোরদার করলেও তারাও প্রতিমুহুর্তে হামাসের প্রতিরোধ হামলার মুখে পড়েছে। আজ সাতাশ দিন হলো ইসরাইলী বাহিনী ফিলিস্তীনি নিধনে বর্বরোচিত হামলা পরিচালনা করছে, এই দিনগুলোতে অন্তত প্রায় নয় হাজার ফিলিস্তীনিকে তারা হত্যা করেছে পাশাপাশি তাদের সৈন্যের ও মৃত্যু ঘটেছে। ইসরাইলী বাহিনী স্বীকার করেছে হামাসের হামলায় তাদের শতাধীক সেনা নিহত হয়েছে। এদিকে হামাসের হাতে আটক দুই শতাধীক ইহুদীূর ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে বা তাদের ভাগ্যে কি ঘটছে এমনটি নিয়ে ক্ষোভ আর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে খোদ ইসরাইলে। ইসরাইলের নাগরিকদের ভাবনা যে বিমান হামলায় তাদের নাগরিকদের মৃত্যু ঘটছে যে কারনে সাধারন ইসরাইলীদের পক্ষ হতে বড় ধরনের চাপে আছে ইসরাইল সরকার। হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে ইসরাইলের বিমান হামলায় তাদের হাতে আটক ইসরাইলী নাগরিকদের মধ্যে অন্তত পঞ্চাশ জন নিহত হয়েছে। বিশ্বময় ইসরাইলী নিন্দা ও প্রতিবাদ চলছে তো চলছেই। হামাসের পাশাপাশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হামলায় মুহুর মুহুর ইসরাইলী ভূ-খন্ডে সাইরেন বেজে উঠছে। যে কোন সময়ে ইরানের পক্ষ হতে ইসরাইলে হামলার আশঙ্কা করছে ইহুদীবাদী সরকার, লেবানন বসে নেই তারাও হামলা পরিচালনা করতে পারে। হুযি বিদ্রোহীরা গত মঙ্গলবার থেকে ঘোষনা দিয়ে ইসরাইলের অভ্যন্তরে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা পরিচালনা করছে। সৌদি আরবের পক্ষ হতে ও তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং অবিলম্বে নিরীহ ফিলিস্তীনিদের হত্যা বন্ধের আহবান জানিয়েছেন। বিশ্বে একমাত্র দেশ ইসরাইল যারা আন্তর্জাতিক কোন আইনের তোয়াক্কা না করে মানবতা, মানবাধিকারের ধার না ধরে সম্পূর্ণ ভাবে শক্তিমত্তাকে সঙ্গী করে ইসরাইল যে ভাবে বর্বরোচিত হামলার মাধ্যমে ঐতিহাসিক গাজা উপত্যকাকে শ্মশানে পরিনত করতে চলেছে এবং ফিলিস্তীনিদের নিশ্চিহৃ করার খেলায় মেতেছে তার শেষ কোথায়? যে কোন সময়ে ইসরাইলী হামলায় ফুসে উঠতে পারে রাশিয়া, ইরান, চীন সহ অন্য শক্তিগুলো। আরব বিশ্ব ফিলিস্তীনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তীনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং ইসরাইলের হামলা বন্ধের দাবীতে কলিকাতার মিছিল হয়েছে। বিশ্বের সব প্রান্তে দখলদারের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে মানবতাবাদীরা মিশর এমন সহযোগিতার পর এবার আশ্রয়হীন ফিলিস্তীনিদের আশ্রয় দিতে সীমান্ত খুলে দিয়েছে। গতকাল হতে বন্ধ থাকা মিশরের রাদাত সীমান্ত দিয়ে ফিলিস্তীনি শরনার্থীরা মিশরে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দ্বিতীয় দফায় আবারও ইসরাইল সফরে যাচ্ছে বলে খবরে বলা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কিনা এই বিষয়টি অতি দ্রুত জানা যাবে। পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্ব চাইছে না নেতানিয়াহু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী থাকুক। সর্বশেষ খবরে জানাগেছে উত্তর গাজায় ইসরাইলী বাহিনী ও হামাস যোদ্ধাদের মাঝে প্রচন্ড যুদ্ধ চলছে। প্রবল ক্ষতি ও প্রতিবন্ধকতার মুখে ইসরাইল সেনারা।