শীতকাল কড়া নাড়লো
অথচ জানতেই পারি নি।
শীত নেই, খেজুরের গুড় নেই
পিঠার আয়োজন – কিছুই নেই!
কিন্তু চোখ বন্ধ করলে
আমি অতীতে ফিরে যাই
শরতের পর থেকেই
টিনের চালে টুপ টুপ করে
প্রেয়সীর চোখের জলের মত
কুয়াশা ঝরে ঝরে পড়তো।
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে
আমরা প্রতিযোগিতা করতাম
কার মুখ দিয়ে কতটা ধোঁয়া
বের হলো আর কুয়াশায়
কে কতোটা দূরে দেখতে পায়!
রাত পর্যন্ত ঢেঁকিতে ঢক ঢক
চালের গুঁড়ো কুটতে হবে
নানা রকম পিঠা পায়েস
সন্ধ্যা না হতে খড়কুটো ধরায়ে
আগুন জ্বালানো।
হাত পা সেঁকে ফিসফিসিয়ে
গল্প বলা! ভূতের সব ভয়ংকর গল্প!
“ও খোকা- এতোটা বেলা হলো
উঠিস না কেন?”
আর আমি লেপ থেকে গলা বাড়িয়ে
“রোদ উঠেনি এখনো”
-এটা বলেই লেপের ওমে
আবার ঘুমিয়ে যেতাম!
মায়ের হাতের চুড়ি রিনরিন
করে বাজতো কানে
বাবার চটির চটাস চটাস।
রূপকথার বইয়ে
শীতের বুড়ির গল্প পড়ে
তাকে বড্ড বকা দিয়েছি
কেন সাতসকালে এতো শীত?
এই শীতে কেমনে স্কুলে যাই?
অথচ সেই শীতের বুড়িকেই
আজকাল খুব স্মরণ করি!
জানি না শীতের বুড়ি বলে
কেউ আছে কি না!
যদি থাকতো সত্যিই
সেই শীতের সকালটা
ফিরে চাইতাম বার বার
কুয়াশা ঢাকা, তীব্র শীতের
কনকনে ঠান্ডার সকাল।
মা যখন বলতো –
ও খোকা এখনো উঠলি না?
সেই লেপ, সেই ওম
আর ঢেঁকির সেই ঢক ঢক শব্দ
ফিরে কি পাবো?
উত্তর মেলে না— ।