দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইল দিনে দিনে নিরাপত্তাহীনতায় পৌছেছে। প্রতিনিয়ত ইসরাইলকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে হিজবুল্লাহর রকেট ও ক্ষেপনাস্ত্র হামলা এবং হুতি যোদ্ধাদের নব আবিস্কৃত ফিলিস্তিনি ক্ষেপনাস্ত্র। গতকাল ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলের বিভিন্ন এলাকাতে মুহুরমুহুর রকেট হামলা চালিয়ে রাজধানী তেল আবিব সহ অপরাপর বড় বড় শহরগুলোকে আতঙ্কের জনপদে পরিনত করে। ইসরাইলের জন্য হিজবুল্লাহ, হুতি ও হামাস মরন যন্ত্রণায় পরিনত হয়েছে। বিশেষ করে হুতি যোদ্ধাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরী ফিলিস্তিন ক্ষেপনাস্ত্র অত্যন্ত ধ্বংস লিলা বহনকারী যা ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিন্ন ভিন্ন করে দেশটির ভূ-খন্ডে একের পর এক আঘাত করছে এবং বিস্তীর্ণ জনপদ ক্ষত বিক্ষত করছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানাচ্ছে গত কয়েকদিন যাবৎ হুতি, হিজবুল্লাহর বিধ্বংসী হামলায় ইসরাইলের বহু শহর জ্বলছে তো জ্বলছেই। এদিকে হামাস ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধ বিরতির আলোচনার অগ্রগতি খুব বেশীদুর যাইনি। কারন দখলদার ইসরাইল গাজায় স্থায়ী যুদ্ধ বিরতি সহ গাজা হতে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি চুক্তিতে সম্পৃক্ত করছে না। অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থা দৃষ্টে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে ঐক্যমত পোষন করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার মুখ পাত্র জেকমালিভা গতকাল গাজা বিষয়ে নিয়মিত ব্রিফিং কালে বলেন, হামাসের দাবী যুদ্ধ বিরতি গাজায় যুদ্ধ বিরতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না। তাদের দাবী অতি সংক্ষিপ্ত যা নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যমতে পৌছা সম্ভব, এদিকে হামাসের পক্ষ হতে বলা হচ্ছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী কসাইখ্যাত নেতানিয়াহু দেশটিতে জনপ্রিয়তায় শুন্যের কোঠায় পৌছানোয় জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে গাজা যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাইছে, দখলদার ইসরাইলি সেনারা গাজা ভূ-খন্ডে যে ভাবে হত্যা করছে তা কেবল পাখি শিকারের সাথে তুলনা করা চলে। এখানেই শেষ নয় হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেডের মুখপত্র আবু ওবাইদা বলেছে কোন অবস্থাতেই ফিলিস্তিনিরা দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর দখলদারিত্ব মেনে নেবে না, নিজ ভূমিতে পরবাসি ফিলিস্তিনিরা লড়ে যাবে, আবু ওবায়দা আরও স্মরন করিয়ে দেন গাজার প্রতি জন ফিলিস্তিনি একেক জন হামাস। উল্লেখ্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতা নিয়াহুই গাজা যুদ্ধ বিরতিতে সর্বাপেক্ষা বাঁধা। দখলদার বাহিনীর সদস্যরা গত সপ্তাহে তিনশতাধীক ফিলিস্তিনি নারী পুরুষকে হত্যা করে চার ইসরাইলি বন্দী কে মুক্ত করার বিষয়ে তাদের বড় ধরনের সাফল্য হিসেবে চিহিৃত করার চেষ্টা করা হলেও দৃশ্যত ঃ এটা তাদের সাফল্য নয় ব্যর্থতা, চারজনকে মুক্ত করতে তিনশতাধীক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করতে হয়েছে এখানেই শেষ নয় নয় মাসের হত্যাযজ্ঞ আর গণহত্যার প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে চারজনকে মুক্ত করতে হয়েছে। এদিকে হামাসের এক নির্বাচিত নেতা বিবিসির সাথে সাক্ষাত কারে বলেছে গাজায় হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি নাগরিকদের মধ্যে কতজন জীবিত আছে বা মৃত্যুবরন করেছে তারা জানেনা, হামাস নেতার এমন বক্তব্যের উত্তরে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ অবশ্য যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে আলোচনার অগ্রগতিতে পৌছাতে চাইছে, জাতিসংঘ বরাবরের ন্যায় আবারও দখলদার ইসরাইলের বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিকদের হত্যা বন্ধের আহবান জানিয়েছে এবং গাজায় অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহবান জানিয়েছে। আল জাজিরা টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ হতে আবারও বলা হয়েছে গাজা উপত্যকা ইসরাইলের ধ্বংসস্তুপের কল্যানে বসবাসের অযোগ্য ভূমিতে পরিনত হয়েছে। অতি সমৃদ্ধ এবং প্রাণ চাঞ্চল্য জনপদ হিসেবে খ্যাত গাজায় বর্তমানে মৃত্যুর সুনশান নিরবতা আর তাদের জন্য প্রতিনিয়ত অপেক্ষা করছে ক্ষুধা, যতই দিন যাচ্ছে ততোই গাজায় ক্ষুধার্ত ও অভূক্ত জনসধারনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ইসরাইলের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে আতঙ্কের কারন হিজবুল্লাহ গতকাল অত্যন্ত কড়া ভাষায় ইসরাইলকে হুমকি দিয়েছে। লেবাননের পক্ষ হতে বলা হয়েছে অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইসরাইলকে কান্না করতে হবে। ইসরাইলকে কান্নার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এদিকে জর্দানে চলছে বিক্ষোভ, জর্দানের মিডিয়াগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজায় হামলা ও গণহত্যা পরিচালনা করতে জর্দানের করিডোর ব্যবহার করছে, সংবাদপত্রে এই খবর প্রকাশের পর থেকে দেশটিতে জর্দানারী বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। গতকাল ও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজায় বিভিন্ন এলাকাতে বিশেষ করে উত্তর, মধ্য ও পশ্চিম গাজায় হামাসের প্রতিরোধ হামলায় পড়ে। গতকাল দখলদার বাহিনী গাজার অন্তত: ৪৫টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছ।