শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন

১০-১৫ দিন পর আর বিদ্যুতের কষ্ট থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩

এফএনএস: প্রচÐ গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুইদিনের মধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। দশ থেকে ১৫ দিন পর দেশে আর বিদ্যুতের কষ্ট থাকবে না। এরমধ্যেই দেশে বিদ্যুতের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দিয়েছিলেন। তিনি জানতেন ধাপে ধাপে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পরবর্তীতে এই ৬ দফাই এক দফা দাবিতে পরিণত হয়, যেটা ছিল স্বাধীনতা। তিনি বলেন, এ দেশের জনগণের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম আওয়ামী লীগই করেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। ইদানীং বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু কোন গণতান্ত্রিক ধারায় জন্ম হয়েছিল বিএনপির? অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে উর্দি খুলে রাজনীতির খায়েশ জাগে তাদের। তখন হ্যাঁ-না ভোটের প্রচলন করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছিল। ভোট চুরি করা ছাড়া তখন ক্ষমতার সুযোগ ছিল না জিয়াউর রহমানের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশে হত্যার রাজনীতি, ভোট কারচুপি, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা- এসব শুরু করেন জিয়াউর রহমান। উচ্চ আদালত রায় দিয়েছেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল অবৈধ। যেটা করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে আওয়ামী লীগ। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে যা করার তা আওয়ামী লীগই করেছে। দেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার নিয়ে এখন সচেতন। কেউ ভোটের অধিকার কেড়ে নিলে মানুষ তাদের ছেড়ে দেয় না। খালেদা জিয়া তার প্রমাণ। ১৯৯৬ সালে ভোট চুরি করে জোর করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল বিএনপি। তাদের মুখে এখন গণতন্ত্র আর ভোটের কথা মানায় না। বিএনপি আজ ভোটের কথা বলে, ১৫ ফেব্রæয়ারির নির্বাচনে কত ভোট পেয়েছিল? আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। মানুষ ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগ কখনো পরাজিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুইবার ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে বিদায় নিতে হয়েছে। শুনলে আমাদের হাসি পায়, ওরা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে। গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করেছে আওয়ামী লীগ। আর খালেদা-তারেক জিয়ার অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার দেশের মানুষ। বিএনপির দুঃশাসন-দুর্নীতির কথা তারা ভুলে যায়নি। একদিকে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন, অন্যদিকে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলা- এটাই ছিল তাদের কাজ। এখন যদি তারা জ¦ালাও-পোড়াও করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, তাহলে মার্কিন ভিসা পাবে না। যাদের কথায় তারা নাচে, তারাই বিএনপিকে ভিসা দেবে না। তিনি আরও বলেন, বিএনপি মনে করে অন্য কেউ কোথাও থেকে এসে নাগরদোলায় করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কিন্তু দেবে না। ব্যবহার করবে, কিন্তু ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। ক্ষমতায় বসাতে পারে একমাত্র জনগণ। যতই দেশি-বিদেশি চাপ আসুক, এদেশের মানুষ চাপের কাছে মাথা নত করবে না। আমরাই আমাদের দেশের মানুষের ভোটের অধিকারের সুরক্ষা দেবো। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সে নির্বাচনে মুসলিম লীগ ২০ দলীয় জোট করেছিল, আর আওয়ামী লীগ ছিল একা। তাদের ধারণা ছিল ২০ দলীয় জোট কমপক্ষে ২০টা সিট পাবে, কিন্তু পেয়েছিল মাত্র দুইটা সিট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র পাকিস্তানের অ্যাসেম্বলিতে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ সিট পেয়ে যায়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। ছয় দফা মানুষ লুফে নিয়েছিল, এই ছয় দফা থেকে এক দফার উত্থান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের বলতেন ছয় দফা তিনি দিয়েছেন। কিন্তু ছয় দফার প্রকৃত অর্থ হলো এক দফা, অর্থাৎ স্বাধীনতা। ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এ নির্বাচন অনেক শর্ত দেওয়া হয়েছিল। তাতে আমাদের দেশে অনেক দল অনেক নেতা নির্বাচনে যেতে রাজি ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, আমি নির্বাচন করবো। শেখ হাসিনা বলেন, ছয় দফার ওপর ভিত্তি করে এ নির্বাচন। এই নির্বাচনে জনগণের নেতা কে হবে সেটা নির্বাচিত হবে। কে জনগণের নেতা সেটা নির্বাচিত হবে। এখানে কথা বলার অধিকার হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের মুক্তির জন্য, মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের আমলে বাঙালিদের কোনো অধিকার ছিল না। চিরদিন অবহেলিত ছিলাম আমরা। বাঙালিদের দ্বারা পাকিস্তান সৃষ্টিই হয়েছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সে আকাক্সক্ষা পূরণ হয়নি। পাকিস্তানিদের দ্বারা আমরা ছিলাম শোষিত, বঞ্চিত। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো বাংলাদেশ থেকে। অথচ সেই অর্থ ব্যবহার হতো পশ্চিম পাকিস্তানে। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা পেশ করার সময় বাধা দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকায় ফিরে এসে সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রেস কনফারেন্স করেন। ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে একটা পাস করানো হয়। কাউন্সিল ডেকে কাউন্সিলে একটা পাস করানো হয়। মাত্র কয়েক মাসে সারা বাংলাদেশ ঘুরে ছয় দফার ব্যাপক প্রচার করেন। যেকোনও একটা দাবি এত অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের মধ্যে সাড়া জাগানো, এটা ছিল একটা অভ‚তপূর্ব ঘটনা। যেটা ছয় দফার ব্যাপারে হয়েছিল। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমÐলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শাহজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com