এফএনএস বিদেশ : চীনের বেইজিংয়ে গত শুক্রবার শুরু হতে যাচ্ছে শীতকালীন অলিম্পিক। ইতোমধ্যে হয়ে গেলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অ্যাথলেট, কোচিং স্টাফ ও মিডিয়া কর্মীরা ইতোমধ্যে বেইজিংয়ে পৌঁছে গেছেন। চলমান মহামারিতে অলিম্পিককে কেন্দ্র করে চীনের প্রস্তুতিও ব্যাপক। অলিম্পিক চলাকালীন কোনোভাবেই যেন করোনার সংক্রমণ না ছড়ায় সেই জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে ‘ক্লোজড লুপ’ (স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত বিশেষ একটি ঘেরা এলাকা) পরিবেশ। যেখানে খাবার থেকে শুরু করে প্রায় কাজই করছে রোবট। রোবট পরিবেশন করছে পানীয়, তাপমাত্রা-নিয়ন্ত্রিত স্লিপ পড এবং সর্বত্র ছিটাচ্ছে জীবাণুনাশক। অ্যাথলেট, কোচিং স্টাফ এবং সংবাদকর্মীসহ অলিম্পিক সংশ্লিষ্ট সবাই আগামী কয়েক সপ্তাহ এই জীবন ব্যবস্থার ভেতরই থাকবেন। আর এসবের কারণে ২০২২ বেইজিং গেমসই বোধহয় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক কোনো স্পোর্টিং ইভেন্ট হতে যাচ্ছে। খবর বিবিসি অনলাইনের। মহামারির সময়ে গত বছরের টোকিও অলিম্পিক প্রমাণ করেছিল এই ইভেন্টটি একটি বিশেষ ঘেরা জায়গা আয়োজন হতে পারে। কিন্তু চীনের মতো সম্পদশালী, শক্তিশালী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দেশ অলিম্পিককে ভাইরাসমুক্ত গেমসে পরিণত করতে সুবিশাল ব্যবস্থা তৈরি করতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। আর এই পরিকল্পনার মূল হলো ‘ক্লোজড লুপ’ এলাকা, যেখানে অ্যাথলেটস, টিম অফিসিয়াল, সংবাদকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকসহ সব মিলিয়ে আনুমানিক ৬০ হাজার মানুষের বসবাসের জায়গা। বেইজিং গেমসের জায়গাটি ১৬০ কিলোমিটার (১০০ মাইল) বিস্তৃত তিনটি ফটকযুক্ত ‘বাবল এরিয়া’ নিয়ে গঠিত। প্রতিটি বাবল আবার ভেন্যুকে কেন্দ্র করে এবং নির্ধারিত যোগাযোগ লেন দিয়ে সংযুক্ত। তার ভেতরে হোটেল, কনফারেন্স সেন্টার, কর্মীদের ডরমেটরি এবং অন্যান্য সুবিধা রয়েছে। বিবিসির সংবাদকর্মীদের দলটি ভেতরের রোজকার জীবন কেমন তা বর্ণনা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, খাবারের সময় এবং নিজের কামরা ছাড়া অংশগ্রহণকারীদের সর্বত্র মাস্ক পরতে হয় এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। প্রত্যেকের সোয়াব নিয়ে প্রতিদিন পিসিআর পরীক্ষা হয় এবং তার ফলাফল ‘গেমস মাই ২০২২’ স্বাস্থ্য অ্যাপে সংরক্ষণ করা হয়। প্রতিক্ষা ঘিলদিয়াল নামে বিবিসির এক প্রযোজক বলেন, বিষয়টি এমন যে পজিটিভ না হলে পরীক্ষার রেজাল্ট আমরা জানতে পারি না। ব্যাপারটি ওই প্রবাদের মতো, খবর নাই হলো ভালো খবর। এতসব আয়োজন, বিধিনিষেধ আর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মধ্যেই এখন পর্যন্ত আগত হাজার হাজার মানুষের মধ্যে ৩০০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের চেয়ে কম ব্যক্তি ক্লোজড লুপের। সংক্রমিত ব্যক্তিদের আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। নেগেটিভ হলে পুনরায় তাদের বাবলে নেওয়া হবে। চীনা কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্য জিরো সংক্রমণ নয়, ভাইরাস ছড়ানো শূন্যে রাখা। এখন পর্যন্ত এই পদ্ধতি কাজে দিয়েছে।