এফএনএস: চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডের ৬১ ঘণ্টা পর তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা বলছে, এই ডিপো থেকে আর কোনো বড় ধরনের বিপদ হওয়ার আশঙ্কা নেই। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল এ তথ্য জানিয়েছেন। অন্যদিকে ডিপো থেকে আরও দুইজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। সে হিসেবে নিহতের সংখ্যা এখন ৪৩ জন। গতকাল মঙ্গলবার সীতাকুন্ড ডিপোর সামনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের উপ- পরিচালক আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, আলামত দেখে একজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী বলে মনে হয়েছে। তবে ডিএনএ টেস্টের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ছাড়া আরেকজনের লাশ দেখে ডিপোর কর্মী বলে মনে হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের নয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ফায়ারের তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। এখনও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা এসে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে গেছেন। ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় জনবল সীমিত করা হয়েছে। এখন দুইটি ইউনিট কাজ করছে। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল বলেন, গত রোববার সকাল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের প্রায় দুই শতাধিক সদস্য বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে কাজ করেছে। ডিপোতে এসে আমরা ফায়ার সার্ভিসকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। এখন যে আগুনটা আছে তা প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লেগেছে। কারণ এলাকাটা অনেক বড়। প্রায় ২৬ একর জায়গায় ডিপোটি। এখানে কনটেইনারের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি। কনটেইনারগুলো একটির পর আরেকটি লাগানো ছিল। কনটেইনারগুলো নিচে নামিয়ে কাজ করতে সময় লাগে। সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, জ¦লন্ত কনটেইনারের পাশে কিছু ভালো কনটেইনার ছিল। সেগুলো আমরা পৃথক করে রেখেছি। যাতে আগুনটা আর না বাড়ে এবং ক্ষয়ক্ষতি না হয়। আগুন প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এখান থেকে আর কোনোভাবে আগুন ছড়ানোর সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে বলে উলে−খ করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন লাগার পর রাসায়নিকের কনটেইনারে একের পর এক বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। অগ্নিকান্ড ও ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জন হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে মৃতের সংখ্যা ৪১। দগ্ধ ও আহত ১৬৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই শনাক্ত হওয়া নিহতদের জেলা প্রশাসনের সহায়তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।