এফএনএস: বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য সেবার জন্য নির্ভর করে বেসরকারি হাসপাতালের ওপর। বেসরকারি হাসপাতালের ওপর মানুষের এই নির্ভরশীলতার কারণ হলো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ নানা সংকট। ২০১৯-২০ সালে পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। সংস্থাটি আরও বলছে, দেশের শতকরা ১৪ শতাংশ হাসপাতাল কখনোই নিবন্ধনের আওতায় আসেনি। এর মধ্যে ১১ শতাংশ নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। তবে শতকরা ৩ শতাংশ এবারও আবেদন করেনি। গতকাল মঙ্গলবার আইসিডিডিআর,বি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশনের (এমসিএইচডি) সিনিয়র ডিরেক্টর ডা. শামস এল আরেফিন এসব তথ্য জানান। এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। তিনি জানান, দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান পরিচালনা করেছে। এ বিষয়টি দেখতে ইউএসএইডের সহায়তায় ১২ সিটি করপোরেশনের ১০টি জেলার ২৯টি উপজেলায় একটি গবেষণা জরিপ পরিচালনা করি। এতে স্থানীয় সিভিল সার্জনসহ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল সহায়তা করে। গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গবেষণাটি করতে গিয়ে ১১৮৯টি বেসরকারি হাসপাতালকে অ্যাসেসমেন্টের (মূল্যায়ন) জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়, কিন্তু তাদের মধ্যে ৪০টি হাসপাতাল সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায়। সবশেষে ১১১৭টিতে অ্যাসেসমেন্ট করা হয়। জরিপে অংশ নেওয়া ১১১৭টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ৯৫৬টি হাসপাতাল কোন একসময় নিবন্ধনের আওতায় এসেছিল, যা শতকরা হিসেবে যা প্রায় ৮৬ শতাংশ। বাকি ১৬১টি বেসরকারি হাসপাতাল কখনই নিবন্ধন করেনি, যা ১৪ শতাংশ। এর মধ্যে ১১৮টি হাসপাতাল সা¤প্রতিক সময়ে নিবন্ধনের আবেদন করেছে আর ৪৩টি এবারও আবেদন করেনি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮০ সাল থেকে দেশে বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমের অগ্রগতি শুরু হয়। অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি হয় ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য সেবার জন্য নির্ভর করে বেসরকারি হাসপাতালের ওপর। বেসরকারি হাসপাতালের ওপর মানুষের এই নির্ভরশীলতার কারণ হলো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ নানা সংকট। ১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে স্বাস্থ্য সেবার ৭টি শর্ত বা নিয়ম মানতে হয়। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব শর্ত পূরণ করে স্বাস্থ্য সেবা দিতে গেলে নানা বাধার মুখে পড়তে হয়। এ কারণে কোয়ালিটি স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে সমস্যা হয়।