সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের ক্ষমতা কুক্ষিগতকারী বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বলসহ দুর্নীতিবাজদের বিচারের দাবীংেত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ সাতক্ষীরা শহর শিবিরের উদ্যোগে আন্ত:থানা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের কমিটি গঠন আশাশুনি সমাজ কল্যাণ পরিষদে অর্থে ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও অনুদান বিতরণ নূরনগর আমীরের শপথ মজলিশে শূরা নির্বাচন ও কর্ম পরিষদ গঠন আশাশুনি টঙ্গী ইজতেমায় হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন সাতক্ষীরা উলামা পরিষদের মানব বন্ধন সাতক্ষীরায় কৃষি ঋণ কমিটির সভা নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসুস্থ ছাত্রীর বড়ীতে \ উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থী পরিবার বটিয়াঘাটায় ইজতেমায় হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

মৃত্যুকূপে উদ্ধার অভিযানে সতর্কতা \ আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি, তবে নিয়ন্ত্রণে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২

এফএনএস : চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ির শীতলপুরে বেসরকারী মালিকানাধীন আইসিডি (ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপো) অর্থাৎ বিএম কন্টেনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বিস্ফোরণস্থলে সেনাবাহিনী ও ফায়ার কর্মী দল উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে। এখনও ধ্বংসস্তূপ পুরোপুরিভাবে নিরাপদ বলা যাচ্ছে না। এ ছাড়া ডিপোর সন্নিহিত এলাকায় তিনটি গ্রামের লোকজনের সার্বিক অবস্থা রয়েছে শঙ্কায়। বিস্ফোরণের পর যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবেশে এসেছে বিপর্যয়। স্বজনহারা ও নিখোঁজদের সন্ধানে চলছে আহাজারি। আর যারা মারাত্মক দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীনদের গোঙানিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে আছে। এ ঘটনায় বিপুল অঙ্কের আমদানি ও রফতানি পণ্য সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। মোটা অ্েঙ্কর বিনিময়ে নির্মিত একটি স্থাপনা (আইসিডি) বিধ্বস্ত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে গার্মেন্টস সেক্টরের ন্যায় আইসিডি সেক্টরে এমন ঘটনা বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এসব কিছুর নেপথ্যে রয়েছে ডিপো কর্তৃপক্ষ, এর সঙ্গে সংশি−ষ্ট বিভিন্ন সরকারী সংস্থার নিয়মিত তদারকিতে এন্তার অনিয়ম। এসব অনিয়মেই যত সর্বনাশ, প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ, মারাত্মক ক্ষতির মুখে পরিবেশ। এদিকে ঘটনার দু’দিন পর বিএম কন্টেনার ডিপো কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এ ঘটনা নাশকতামূলক। সূত্র জানিয়েছে, আমদানি-রফতানি পণ্যের খালাস ও জাহাজীকরণের কাজ হয়ে আসছিল অপরাপর আইসিডির মতো। গত শনিবার রাতে ডিপোর কন্টেনারে আগুন লেগে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অনাকাক্সিক্ষত হতাহতের ঘটনার পর বেরিয়ে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যা নিয়ে ইতোমধ্যে নানা সংস্থার মধ্যে নানা ধরনের বক্তব্য দেয়া শুরু হয়েছে। আমদানি-রফতানি পণ্যের সঙ্গে রাসায়নিক পদার্থ অর্থাৎ হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বোঝাই কন্টেনার রাখা হয়েছিল রফতানির উদ্দেশ্যে। কিন্তু এ প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে সংশি−ষ্ট সংস্থাসমূহকে জানানো হয়নি। এমনকি আগুনের ঘটনার পর ফায়ার কর্মীদেরও জানানো হয়নি। যে কারণে তারা যথাযথ নিয়মে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয় এবং এতে করে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি এবং নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে বলে সংশি−ষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানানো হয়েছে। এদিকে, এ ঘটনার পর সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সিএমপির সিআইডি বিভাগের পক্ষ থেকে সোমবার সকাল থেকে চমেক হাসপাতালে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের প্রধান ডাঃ সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম চমেক হাসপাতালে পৌঁছান এবং অগ্নিদগ্ধ রোগীদের খোঁজখবর নেন। তিনি দগ্ধ রোগীদের মধ্যে গুরুতর ৩ জনকে দ্রুত ঢাকায় স্থানান্তরের নির্দেশনা প্রদান করেন। উলে−খ্য, ঘটনার পর ইতোমধ্যে পনেরো জনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই আশঙ্কাজনক। অপরদিকে, দুপুরের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান সীতাকুন্ডের বিএম কন্টেনার ডিপো এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত ফায়ার কর্মী দল এবং উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সেনা সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে সংবাদ কর্মীদের কোন বক্তব্য দেননি। সোজা চলে যান চমেক হাসপাতালে। সেখানে তিনি নিহতদের স্বজন, আহত এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বিএম কন্টেনার ডিপো এলাকায় উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এদিকে, বিএম কন্টেনার ডিপোতে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ নিয়ে কিছুটা ধূ¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সিভিল সার্জন দফতর গত রবিবার ৪৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য প্রদান করেছে। সঙ্গে জেলা প্রশাসনও এ সংখ্যাকে নিশ্চিত করেছে। কিন্তু সোমবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৪১। তবে মূল ঘটনাস্থলে যেহেতু এখনও উদ্ধার অভিযান সুচারুরূপে সম্পন্ন করা যায়নি সেক্ষেত্রে আগামীতে লাশের সংখ্যা হয়তবা আরও বাড়তেও পারে। এ ঘটনার পর গঠিত বিভিন্ন পর্যায়ের তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে। তবে পুরো ডিপোটি একটি ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হওয়ায় সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য এখনও কর্তৃপক্ষের শীর্ষস্থানীয় কাউকে পাওয়া যায়নি। এ কন্টেনার ডিপোটি বিদেশের সঙ্গে দেশের ব্যক্তি মালিকানার জয়েন্ট ভেঞ্চারের একটি প্রতিষ্ঠান। ডাচ নাগরিক বার্ট প্রঙ্ক এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রামের স্মার্ট গ্রুপের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে এটি ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত। এদিকে, ঘটনার পর বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, এটি বড় একটি কন্টেনার ডিপো হলেও এর অভ্যন্তরে অগ্নিকান্ড নিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা ছিল না। শুধু তাই নয়, সংস্থার কর্মকর্তান্ড কর্মচারীদের কোন গ্রুপের জরুরীভাবে আগুন নেভানোর কোন প্রশিক্ষণও ছিল না। এ ছাড়া বিস্ফোরক দ্রব্য পরিবহন বা স্টোরেজ করার যে সরকারী নিয়মকানুন রয়েছে সেক্ষেত্রেও এর বড় ধরনের ব্যত্যয় রয়েছে। ঘটনার পর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার জানিয়েছেন, তার কাছে থাকা তথ্য মতেন্ড এ ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বোঝাই ২৬টি কন্টেনার রয়েছে। এগুলো পর্যায়ক্রমে রফতানি হতো। এই ডিপো থেকে প্রতিমাসে দুই কন্টেনার বোঝাই হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নিয়মিতভাবে রফতানি হয়ে আসছে। এদিকে উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে সোমবার সেনা সদস্যরা চারটি কেমিক্যাল বোঝাই কন্টেনার নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরে সক্ষম হয়েছে। ঠিক আরও কি পরিমাণ এ ধরনের কেমিক্যালবোঝাই কন্টেনার রয়েছে এবং তা কোন্ স্টেকে আছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, এ কন্টেনার ডিপোটি প্রায় ৬ হাজার কন্টেনার ধারণক্ষমতা রাখে। ঘটনার সময় ৪ হাজার ৩শ’ কন্টেনার ছিল বলে তথ্য রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩ হাজার কন্টেনার ছিল খালি। এ ছাড়া আমদানির পণ্যবোঝাই ছিল ৫শ’। আর রফতানির পণ্য নিয়ে ছিল ৮শ’। অগ্নিকান্ডে খালি কন্টেনারের সবই সুরক্ষিত রয়েছে। এ পর্যন্ত কি পরিমাণ কন্টেনার আগুনে জ্বলেছে তা এখনও নিরুপিত হওয়া যায়নি। ঘটনা নিয়ে চট্টগ্রাম বিস্ফোরক অধিদফতরের পরিদর্শক তোফাজ্জল আহমদ সাংবাদিকদের ইতোমধ্যে জানিয়েছেন দাহ্য পদার্থ বা কেমিক্যাল জাতীয় কোন পণ্য সেখানে পরিবহন বা সংরক্ষণের জন্য বিএম কন্টেনার ডিপোর লাইসেন্স নেই। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোঃ ফখরুল আলম জানিয়েছেন, সেখানে এ পর্যন্ত কি পরিমাণ কেমিক্যাল বোঝাই কন্টেনার নষ্ট হয়েছে তার হিসাব পাওয়া যায়নি। সীতাকুন্ডের বিএম ডিপোতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গুরুতর অগ্নিদগ্ধ যাদেরকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে তাদের চিকিৎসায় ১০ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকালে বার্ন ইনস্টিটিউরে পরিচালক ডাঃ আবুল কালামকে প্রধান করে এ বোর্ড গঠিত হয়েছে। বোর্ড প্রধান ডাঃ আবুল কালাম গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, সীতাকুন্ডের ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১৫ জন ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে বুকে আঘাতপ্রাপ্ত একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৪ জনের মধ্যে চারজন রয়েছেন আইসিইউতে। আবার এদের মধ্যে রবিন নামের একজন লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, মেডিক্যাল বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের চিকিৎসা চলছে। ৬ জন পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে আছেন। বাকি চারজন রয়েছেন সাধারণ ওয়ার্ডে। অপরদিকে, চট্টগ্রাম মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে রয়েছেন ৪৩ জন। তার মধ্যে গুরুতর ১০ জন। চমেকে মোট ভর্তি রয়েছে ১০২ জন। অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যারা ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা মোটামুটি ভাল। চমেকের আশঙ্কাজনক তিনজনকে ঢাকায় স্থানান্তরের নির্দেশনা দিয়েছেন ডাঃ সামন্ত লাল সেন। সীতাকুন্ডের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৩ জনের পরিচয় মিলেছে। অবশিষ্টদের শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছে সিআইডি। এ জন্য চমেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক মিজান ফেরদৌস জানিয়েছেন যেসব মরদেহ সংরক্ষিত হয়েছে তাদের স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। মরদেহের সঙ্গে ডিএনএ বিশে−ষণ করে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে এবং এ কাজে এক মাসের মতো সময় নিতে পারে। অপরদিকে, ইতোমধ্যে যাদের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে তারা হলেন ফায়ার সার্ভিসের নার্সিং এ্যাসিস্ট্যান্ট কুমিল−ার লাঙ্গলকোর্ট এলাকার মনিরুজ্জামান, ভোলার দক্ষিণ বালিয়ারা এলাকার হাবিবুর রহমান, প্রাণ গ্রুপের কর্মচারী বাঁশখালীর রবিউল আলম, একই এলাকার ছনুয়া গ্রামের মমিনুল হক, একই উপজেলার মহিউদ্দিন, তোফায়েল আহমেদ, রিদওয়ান, ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও নোয়াখালীর চাটখিল বানসা এলাকার আলাউদ্দিন, নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার মোঃ সুমন, যশোরের ইব্রাহিম হোসেন, বিএম কন্টেনার ডিপোর ডেস্ক এক্সিকিউটিভ ফেনীর দাগনভুঁইয়া উপজেলার শাহাদাত উল−াহ মজুমদার, সীতাকুন্ডের আফজাল হোসেন, ফিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মোঃ ফারুক, চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার মোঃ হারুন, সিলেটের মৌলভী বাজারের মোঃ নয়ন, মীরসরাইয়ের শাহাদাত হোসেন, ফায়ার কর্মী নিপন চাকমা, রানা মিয়া ও সাকিল তরফদার, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের নাজিম উদ্দিন রুবেল। এ ছাড়া আরও দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন রমজান আলী ও তৌহিদ হোসেন। তাদের ঠিকানা পাওয়া যায়নি। সীতাকুন্ড সংবাদদাতা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে অগ্নিকান্ড ও বিস্ফেরণ ঘটনার পর সোমবার পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে কোন সংস্থাই বলছে না। আগুনের ধোঁয়ায় বিচ্ছিন্নভাবে আচ্ছন্ন হয়ে আছে এলাকার আকাশ। আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানোর কাজে ফায়ার কর্মীদের বিশেষ টিম কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনীর সদস্যরাও যোগ দিয়েছেন। কন্টেনার ডিপোতে খালি কন্টেনারের স্তূপ আলাদা। কিন্তু পণ্য বোঝাই কন্টেনারগুলো একসঙ্গে থাকার কারণে সুনির্দিষ্টভাবে কোন্ কন্টেনারে কি পণ্য বোঝাই হয়ে আছে সেটা নির্দিষ্ট করা যাচ্ছে না। এমনকি হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নিয়ে কন্টেনারগুলো কিভাবে রয়েছে সেটাও সুনির্দিষ্ট নয়। যেহেতু হাইড্রোজেন পার অক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ এবং উচ্চ তাপে এটি বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে বলে এত বড় দুর্ঘটনা এবং বিপুলসংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ২২ পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোঃ ফারুক হাসান সিকদার নিশ্চিত করেছেন, এখনও আগুন একেবারে নিভেছে তা বলা যায় না। যেহেতু বিভিন্ন কন্টেনারের ভেতর থেকে এখনও ধোঁয়ার কুন্ডলী বের হচ্ছে। একে একে সব কন্টেনার স্থানান্তর করা হলে এবং আগুন না থাকলে বলা যাবে যে নিয়ন্ত্রণে। অপরদিকে, এলাকাবাসীর মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। ডিপোর অনতিদূরে যে জনবসতি রয়েছে সেখানে তিনটি বসতি রয়েছে। সে সব গ্রামেই উৎকণ্ঠা। এসব গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির দরজা জানালার কাচ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। পাকা কিছু ঘরের দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বোঝাই কন্টেনার থেকে আবারও বিস্ফোরণ হতে পারে এমন আশঙ্কায় বেশকিছু লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। রাসায়নিক বিষক্রিয়ায় শীতলপুরের বাতাসে কেমিক্যাল গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া স্বজনহারানোদের সন্ধানে অনেকেই সোমবার ডিপো এলাকায় ভিড় জমিয়েছেন। যদিও নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যরা সোমবার থেকে কাউকে ডিপো অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। সোমবার স্বরাষ্ট্র্রমন্ত্রীর পাশাপাশি নৌমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিএম কন্টেনার ডিপো পরিদর্শন করেছেন। ডিপো কর্তৃপক্ষের দাবি : বিএম কন্টেনার ডিপো কর্তৃপক্ষ সোমবার দাবি করেছে যে, আইসিডিতে অগ্নিকান্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনাটি নাশকতামূলক। বিএম কন্টেনার ডিপো কর্তৃপক্ষের পরিচালক ও স্মার্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবুর রহমান ও মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী জোর দিয়ে বলেন, তারা নিয়মিতভাবেই হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রফতানি করে আসছেন। কখনও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। যদি কোন কারণে হয়েও থাকে তাহলে এমন বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হবে কেন? বিষয়টিকে নাশকতামূলক দাবি করে তারা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com