কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী। রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শান্তা পারভীন : বাবা মার অভাবের সংসার তার উপর ৫ ভাই বোন। প্রবল লেখাপড়ায় আগ্রহী শান্তা বাল্য বিবাহের স্বীকার হন। নেশাগ্রস্ত স্বামীর সংসারে নানা ভাবে নির্যানের স্বীকার হন। এক সময় সুখের আশায় স্বামীর সাথে বিদেশ পাড়ি জমান। সেখানে নানা ভাবে অমানুষিক নির্যাতনের স্বীকার হন। জীবনের আশা ছেড়ে দেয়া এই নারী নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নুতন ভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখে জীবন শুরু করেছেন। তিনি বর্তমানে একটি এনজিও তে কাজ করছেন। শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী : সোনাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার এর কন্যা শাহনাজ সুলতানা। বাবা ট্রাক ড্রাইভার মাতা সাবেক মহিলা মেম্বর। দুই ভাই বোন সংসারের হাজারো অভাব অনটনের মধ্যে পড়া লেখা চালিয়ে গেছেন। অদম্য মনোবল নিয়ে মেডিকেলে (এমবিবিএস) অধ্যায়ন করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন চিকিৎসক। তিনি না প্রতিকূলতা পেরিয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজ সেবক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সফল জননী নারী : জালালাবাদ গ্রামের ব্র্যাক স্কুলের শিক্ষক ইসহাক আলীর সহধর্মিনী মোছাঃ হোসনেয়ারা বেবী। স্বামী বেকার অস্বচ্ছল পরিবারের হাল ধরেন হোসনেয়ারা। ব্র্যাক স্কুলের ৩৫০/- টাকা বেতন ও ছেলে মেয়েদের প্রাইভেট পড়িয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালিয়ে ছেলেকে মানুষ করেছি। আমার ছেলে ২০০৪ সালে এসএসসিতে এ+,২০০৬ সালে এইচএসসিতে এ+ পেয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ফার্মেসীতে ২০১০সালে বিএসসি অনার্স প্রথম বিভাগ ও এম ফার্মা মাস্টার্স প্রথম বিভাগ ২০১২ অর্জন করে। ২০১৪ সালে বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি নিয়ে আমেরিকাতে চাকুরীরত। আমার মেয়েটি ও ভালো ফলাফল করে অনার্স মাষ্টার্স শেষ করে চাকুরী সন্ধ্যানে আছে। অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী : সালমা খাতুন,স্বামী আমির চাঁদ, গ্রাম-জালালাবাদ,কলারোয়া,সাতক্ষীরা। অসুস্থ স্বামী ও অস্বচ্ছল পরিবার নিয়ে কোনমতে দিন চালাতেন সালমা খাতুন। সফল প্রকল্প যুক্ত হয়ে গাভী পালন শুরু করেন। সফল প্রকল্প থেকে সফল হন। এর পর এ প্রকল্পের লীড ফামার হিসেবে করতেন। অন্যান্য দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারীকে তিনি প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। সফল প্রকল্পের সহায়তায় সাইলেজ ক্রয় করে বিকল্প গো খাদ্য হিসাবে খামারীদের সরবরাহ করেন। বর্তমানে তার আর্থিক অবস্থা ভালো। তিনি জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৪,৫,৬ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বর। সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী : পুরুষ তান্ত্রিক সমাজে নারী নেত্রীত্ব লড়াইকারী মদন মোহন চক্রবর্তীর স্ত্রী শিখারানী চক্রবর্র্তী। সকল বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে নিজের ও সমাজের লোকদের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য নারী সংগঠন তৈরী করেন। তিনি বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ রেখে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা পশু পালন ও কৃষিতে ভালো ফলাফল লাভ করেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে আরো লাভবান হন এবং নিজেরা পুঁজি গড়ে তোলেন। নকশি সেলাই, দর্জি প্রশিক্ষণ, গাভী পালন, ভার্মি কম্পোষ্ট তৈরী, নারী উদ্যোক্তা তৈরী, বিষ মুক্ত সবজি ও ফল উৎপাদন,বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক, নারী ও শিশু নির্যাতন তার প্রকল্পাধীন। তিনি তার কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন সময়ে পুরষ্কার পেয়েছেন।