এফএনএস স্পোর্টস: সেন্ট লুসিয়ায় শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। হারলে হোয়াইটওয়াশ, জিতলে সমতা- এমন ভবিতব্য মাথায় নিয়েই মাঠে নামছে সফরকারী দল। প্রথম টেস্টে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারতে হয়েছে ৭ উইকেটে। ফলে শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া টেস্টে ভালো করতে মুখিয়ে সাকিব আল হাসানের দল। সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়। প্রথম টেস্টটি টেলিভিশনে স¤প্রচার না হলেও দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে বাকি ম্যাচগুলো সরাসরি স¤প্রচার করা হবে। বাংলাদেশের দর্শকরা সরাসরি দেখতে পারবেন টি স্পোর্টসে। অবশ্য নতুন টেস্ট হলেও সেই পুরনো চ্যালেঞ্জেরই মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। অ্যান্টিগা টেস্টে ভালো বোলিংয়ের পরেও দারুণ কিছু করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। দুই ইনিংসে টপ অর্ডার ব্যাটাররা অসহায় আত্মসর্মপণ করেছেন। অ্যান্টিগা-ব্যর্থতার পর সতর্ক বাংলাদেশ দল এখন সেন্ট লুসিয়াতে ভালো করতে সংকল্পবদ্ধ। যে মাঠটিতে লাল-সবুজরা খেলতে নামবে ২০১৪ সালের পর। সেন্ট লুসিয়াতে বাংলাদেশের অম্ল -মধুর দুই রকম অভিজ্ঞতা-ই আছে। ২০০৪ সালে প্রথমবার মাঠে নেমে দারুণ খেলেছিল। হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ রফিক ও খালেদ মাসুদ পাইলটের সেঞ্চুরিতে ম্যাচটি ড্র করা গিয়েছিল। তবে সুখস্মৃতির পাশাপাশি আছে ব্যর্থতাও। ১০ বছর পর ২০১৪ সালে মুশফিকের নেতৃত্বে খেলতে গিয়ে খেই হারায় তারা। ১৬১ ও ১৯২ রানে অলআউট হয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করে। ৮ বছর পর আবার সেই সেন্ট লুসিয়ার ২২ গজে বাংলাদেশ। এবার কী আছে সাকিবদের ভাগ্যে? অবশ্য ভাগ্য বদলাতে নিজেদেরই বদলাতে হবে। বিশেষ করে ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে পুরোপুরি। অধিনায়ক সাকিবও তাদের দিকেই তাকিয়ে। টপ অর্ডার ভালো করলেই কেবল স্কোরবোর্ড সচল রাখা সম্ভব। দলের দুই টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের ফর্ম নেই। দীর্ঘদিন ধরে অফফর্মে থাকা এই দুই ব্যাটার দলকে বিপদেই ফেলে যাচ্ছেন। একাদশে পরিবর্তন এলে কাটা পড়তে পারে নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা মুমিনুল হকের নাম। এ ক্ষেত্রে শান্তর বাদ পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। তুলনায় মুমিনুলের সময়টা খারাপ যাচ্ছে বেশি। মাউন্ট মঙ্গানুইতে ৮৮ রানের ইনিংসের পর ১২ ইনিংসে তার মোট রান ৭৮। এ সময়ে চার ইনিংসেই রানের খাতা খুলতে পারেননি। দশ ইনিংসে যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। এদিকে শান্ত শেষ ১০ ইনিংসে দুই অঙ্কের ঘর পৌঁছাতে পেরেছেন ৪ বার। সর্বোচ্চ রানই ৩৮। যদিও অধিনায়ক সাকিবকে পাশেই পাচ্ছেন মুমিনুল। অ্যান্টিগা টেস্ট শেষে জানিয়েছিলেন, মুমিনুলকে নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চান না। ফলে মুমিনুলের একাদশে থাকার সম্ভাবনা বেশি। ফলে শান্ত বাদ পড়লে দীর্ঘ ৮ বছর পর সেন্ট লুসিয়াতেই টেস্টে প্রত্যাবর্তন হতে যাচ্ছে এনামুল হক বিজয়ের। এছাড়া পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। ধকল কাটাতেই এমন সিদ্ধান্ত। কেননা সামনে রয়েছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ফলে মোস্তাফিজকে বিশ্রাম দিয়ে খেলানো হতে পারে শরিফুল ইসলামকে। এনামুলের মতো প্রথম টেস্টের মাঝখানে তাকেও উড়িয়ে আনা হয়েছে। সেন্ট লুসিয়াতে নামার আগে একটি পরিসংখ্যান বাংলাদেশকে উজ্জ্বীবিত করতে পারে। এখানে আগের ৯ টেস্টের মধ্যে মাত্র একবার জয়ের দেখা পেয়েছে স্বাগতিকরা। সেটিও ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে। বাকি ৮ ম্যাচের মধ্যে ড্র আছে ৪টি এবং বাকি ৪টিই তারা প্রতিপক্ষের কাছে হেরেছে। এই পরিসংখ্যান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সাকিবরা সেরাটা খেলতে পারলে ভালো কিছু সম্ভব। তবে বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্য আতংকের নাম হয়ে উঠেছেন পেসার কেমার রোচ। শুধু অ্যান্টিগা টেস্টেই নয়, বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেলেই জ¦লে উঠেন তিনি। প্রথম টেস্টে ৭৪ রানে ৭ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের মেরুদন্ডটাই ভেঙে দিয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৪৯ উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলারদের মধ্যে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। ফলে ভালো করতে হলে রোচের পরিকল্পনা রুখে দিতে হবে ব্যাটারদের। সাকিব অবশ্য ভালো করতে আত্মবিশ্বাসী। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা শুধু ফোকাস করতে পারি কালকের ম্যাচের প্রথম দুই ঘণ্টায়। তখন আমরা ব্যাটিং করি বা বোলিং, আমাদের ভালো করতে হবে। এরপর ম্যাচের অবস্থা অনুযায়ী খেলা যাবে।’