এফএনএস: হত্যাকান্ডের ১৭ বছর পর খুলনার আলোচিত মুঞ্জির মাস্টার হত্যা মামলায় ২ আসামির যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। খানজাহান আলী থানার মাত্তমডাঙ্গা শ্রীনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন মুঞ্জির। গতকাল বৃহস্পতিবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন গিলাতলা এক নম্বর কলোনির মো. সরোয়ার হোসেন ওরফে সানোয়ারের ছেলে আনোয়ার হোসেন ও একই এলাকার মো. গোলাম জিলানী মলিকের ছেলে মো. আশরাফ আলী। এ হত্যাকান্ডের বিস্ফোরক অংশে ওই দুই আসামিকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মুঞ্জির মাস্টারের কাছে চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয় পূর্ব বাংলার কিছু নেতা। তাকে হত্যার করারও হুমকি দেয় ওই নেতারা। এ সংবাদ জানতে পেরে মুঞ্জির মাস্টার স্থানীয় সাংবাদিক মনিরকে বিষয়টি অবগত করেন। মনির বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে পূর্ব বাংলার নেতাদের নামোলেখ করে বক্তব্য দিতে থাকে। এরপর শুরু হয় তাকে হত্যার পরিকল্পনা। ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে মুঞ্জির মাস্টার মাত্তমডাঙ্গা যুব সংঘের ভেতরে গিয়ে অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে প্রধান ফটক দিয়ে কয়েকজন সন্ত্রাসী যুব সংঘের ভেতরে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগে সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে একের পর এক বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। এর মধ্যে দু’টি বোমা মুঞ্জির মাস্টারের হাতে ও পিঠে লাগে। মারাত্মক জখম অবস্থায় যুব সংঘের অন্যান্য সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান। তবে মারা যাওয়ার আগে তিনি তার ভাই বেনজীর আহমেদের কাছে সব ঘটনার বিবরণ বলে যান। জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নিহতের ভাই বেনজীর আহমেদ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নামোলেখ করে হত্যা ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় থানায় দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করেন। হত্যা ও বোমা অংশের তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন খানজাহান আলী থানার এসআই মো. ফারুকুল ইসলাম।