এফএনএস: পদ্মা সেতু দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে পণ্যবাহী পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহন ঢাকায় প্রবেশের কারণে রাজধানীতে মানুষের চলাচলে যেন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সেই জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আহŸান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার সকালে মন্ত্রণালয়/বিভাগ সমূহের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং বার্ষিক কর্মসম্পাদন পুরস্কার ২০২২ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার-২০২২ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার তুলে দেন মুক্তযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ সময় মন্ত্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটা কথা বলে রাখি, যেহেতু পদ্মা সেতু হয়ে গেছে। এখন দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রচুর পণ্য আসবে। আমি কিন্তু এর পূর্বে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ঢাকা শহরের চারটা জায়গায় চারটা কাঁচাবাজার নির্মাণের সিদ্ধান্ত রয়েছে। কাজেই দক্ষিণাঞ্চল থেকে যে পণ্য আসবে সেগুলো কাঁচপুরের ওখানে কাঁচাবাজার করে সেখানে যাতে সংরক্ষণ করা যায় এবং সেখান থেকে সরবরাহ করতে পারি, সেই ব্যবস্থাটা নেওয়ার কথা ছিল। জানি না সেটা কতদূর বাস্তবায়ন হয়েছে? সেটা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘তাহলে ঢাকা শহরে যে চাপটা আসবে, সেই চাপটা যেন না থাকে। সেটা আমাদের দেখতে হবে।’ এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, মহাখালীতে একটা মার্কেট করা হয়েছিল কিন্তু সেটা কাজে লাগানো হয়নি। করোনাকালীন সময়ে সেখানে আমরা হাসপাতাল করে দিয়েছিলাম। কাজেই আমাদের এখন একটা ভালো জায়গা খুঁজে ফেলতে হবে। আমিনবাজারের দিকে আমাদের আরেকটা মার্কেট; এভাবে আমাদের মার্কেট চার কোনায় চারটা ভাগ করে দিতে হবে। পোস্তগোলা বা কেরানীগঞ্জ বা কামরাঙ্গীচরের দিকে আরেকটা মার্কেট করে দিতে পারি, যাতে পণ্যগুলো ওখানে আসতে পারে। তাহলে শহরের ভেতরে আর কোনো ঝামেলা থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি পদ্মা সেতু থেকে যে বিশাল ট্রাফিক আসবে, তা গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য ঢাকাকে ঘিরে রিং রোড তৈরির কিছুকিছু কাজ অলরেডি শুরু হয়েছে। এটা আমাদের করতে হবে। যাতে করে পণ্য পরিবহন, বাজারজাতকরণ এবং মানুষের চলাচল সহজভাবে হয়। চলমান বন্যা সংকটের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যার প্রকোপ থাকবেই। বন্যা নিয়েই বাঁচতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা আমাদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েই আমাদের চলতে। সাইক্লোন শেল্টার, মুজিব কেলা বা বন্যার সময় নদী ড্রেজিং করা, নদীর নাব্যতা রক্ষা করা, জলাধার রক্ষা করে পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, ভ‚-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করে কার্য্য সম্পাদন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। যেন ভ‚গর্ভস্থ পানির ঘাটতি দেখা না দেয়। সারাদেশে যোগাযোগের বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, শুধু পদ্মা সেতু নয়, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সেই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছি। সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন যারা আমোদের নতুন অফিসার আসছেন, আমাদের যুব সমাজ; আধুনিক যুগে তাদের জন্ম। তারা তো চিন্তা চেতনায় আরও অনেক বেশি মেধাবী। কাজেই তাদের কাছ থেকে নতুন নতুন ধারণা চাই, যাতে করে দেশের অগ্রযাত্রাটা আমরা অব্যাহত রাখতে পারি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী।