এফএনএস স্পোর্টস: টানটান উত্তেজনা। শেষ বলে প্রয়োজন চার রান। কিন্তু ঠিক মতো খেলতেই পারলেন না রাইলি রুশো। মাত্র চার রানের জন্য টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া হলো না বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শেষে যে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল, এর ছিটেফোঁটাও ছিল না ম্যাচের শেষ দিকে। অনেক আগেই যে প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের বড় হার। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫৮ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতা এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০৮ রানের লক্ষ্য দিয়ে সপ্তদশ ওভারে ইংল্যান্ডকে থামিয়ে দিয়েছে ১৪৯ রানে। এই সিরিজ দিয়েই ছয় বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেন রুশো। প্রথম ম্যাচে করতে পারেননি তেমন কিছু। বিদায় নেন কেবল ৪ রান করে। এবার অবশ্য সেই চার রানের জন্যই ফিরতে হলো আক্ষেপ নিয়ে! ৫৫ বলে পাঁচ ছক্কা ও ১০ চারে তিনি খেলেন ৯৬ রানের ইনিংস। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে বৃহস্পতিবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কুইন্টন ডি কক ও রিজা হেনড্রিকসের উদ্বোধনী জুটি রান তোলে দ্রুত। দুই চারে ১৫ রান করা ডি কককে ফিরিয়ে ৩৯ রানের জুটি ভাঙেন মইন আলি। রুশোর সঙ্গে ৭৩ রানের জুটিতে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন আগের ম্যাচেও ফিফটি করা হেনড্রিকস। ২৯ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে তিনি যেতে পারেননি বেশিদূর। রিচার্ড গ্লিসনের বলে জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ইনিংস। এই ওপেনার দুই ছক্কা ও তিন চারে ৩২ বলে করেন ৫৩। ৩২ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন রুশো। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হয়ে ওঠেন ভয়ঙ্কর। তাকে কিছুটা সঙ্গ দিয়ে ফিরে যান হাইনরিখ ক্লাসেন। ত্রিস্টান স্টাবসের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটিতে রুশো দলকে নিয়ে চান দুইশর ঘরে। সেঞ্চুরির জন্য শেষ ওভারে ৭ রান প্রয়োজন ছিল রুশোর। ক্রিস জর্ডানের প্রথম বলে নিতে পারেন কেবল সিঙ্গেল। টানা দুই বল ডট খেলার পর সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক ফিরিয়ে দেন স্টাবস। পঞ্চম বলে দুই রান নিয়ে সেঞ্চুরির পথে আরেকটু এগিয়ে যান রুশো। শেষ বলে মেলাতে পারেননি সমীকরণ। তাই আগের সেরা ৭৮ রানকে পেছনে ফেললেও ¯্রফে চার রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ায় হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। রান তাড়ায় শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। আগের ম্যাচের মতোই বিস্ফোরক শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি জস বাটলার। রুশোর মতো করে স্বাগতিকদের কেউ টানতে পারেননি দলকে। প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের পাঁচই যান দুই অঙ্কে। সর্বোচ্চ ৩০ পর্যন্ত যেতে পারেন কেবল বেয়ারস্টো। বাটলার থামেন ২৯ রানে। আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডর হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়া মইন এবার করেন ২৮। স্বাভাব বিরুদ্ধ ব্যাটিংয়ে ২২ বলে ২০ রান করে তাবরাইজ শামসির বলে ক্যাচ দেন জেসন রয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার ২৭ রানে নেন ৩ উইকেট। খরুচে বোলিংয়ে ৩৯ রানে ৩ উইকেট নেন অলরাউন্ডার আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন রুশো। আগামীকাল রোববার সাউথ্যাম্পটনে হবে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি। সংক্ষিপ্ত স্কোর: দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ২০৭/৩ (ডি কক ১৫, হেনড্রিকস ৫৩, রুশো ৯৬*, ক্লাসেন ১৯, স্টাবস ১৫*; কারান ৪-০-৩৮-০, টপলি ৪-০-৩০-০, মইন ২-০-১৭-১, গ্লিসন ৩-০-৩৮-১. রশিদ ৩-০-৩৮-০, জর্ডান ৪-০-৪৩-১)। ইংল্যান্ড: ১৬.৪ ওভারে ১৪৯ (রয় ২০, বাটলার ২৯, মালান ৫, মইন ২৮, বেয়ারস্টো ৩০, কারান ২, লিভিংস্টোন ১৮, জর্ডান ৫, রশিদ ৩, গ্লিসন ০, টপলি ১*; রাবাদা ৩-০-৩৫-১, এনগিডি ২.৪-০-১১-২, ফেলুকওয়ায়ো ৩-০-৩৯-৩, মহারাজ ৪-০-৩৭-১. শামসি ৪-০-২৭-৩)। ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৮ রানে জয়ী। সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা। ম্যান অব দা ম্যাচ: রাইলি রুশো।