মোস্তাফিজুর রহমান, আশাশুনি থেকে \ আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বোয়ালমারি মৌজার বাঁশদহ নদী সংলগ্ন স্লুইস গেটটি সম্পূর্ণ বে-আইনি ভাবে জোর পূর্বক বাঁধ দিয়ে পানি সরবরাহের পথ বন্ধ করে সহস্রধীক বিঘা মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার বিকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়নের বোয়ালমারি ও বাঁকড়া মৌজার প্রায় ১০০০বিঘা জমির বাগদা চিংড়ি ঘেরে বাঁশদহ নদী থেকে লোনা পানি উঠা নামার একমাত্র স্লুইস গেটটি বেড়িবাঁধ দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বাগদা চিংড়ির ভরা মৌসুমে স্লুইস গেটটি বন্ধ করে দেওয়ায় এলাকার মৎস্য ঘের মালিকদের বড় অংকের ক্ষতির আশংকা বিরাজ করতে দেখা গেছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে ঘের মালিকদের পক্ষে ঘের মালিক গোলাম মোস্তফা, আজহারুল ইসলাম, ইনামুল হক, রাম প্রসাধ বাছাড়, বিশ্বজিৎ সরদার, রাজ্যেস্বর বাছাড়, শাহাদাত সরদার, বিলাল গাজী, দিবাস সরদার, দ্বিলীপ সানা, ছেলিম সরদার, ফিরোজ গাজী, আলিমুদ্দীন সরদার, শওকত সরদার, বাচ্চু সরদারসহ আরও অনেকে প্রতিবেদকে জানান, স্লুইস গেটটি খুলে রাখার জন্য গেটের পাশেই মুজিব বর্ষের ঘরে বসবাসরত সলেমান মোড়লকে এককালিন ২লক্ষ টাকা অথবা প্রত্যেক বছর ঘের মালিকদের বিঘা প্রতি ১০০টাকা করে দেযা লাগবে। এ বিষযে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সলেমান মোড়ল জানান, আমাকে বিঘা প্রতি ১০০টাকা করে না দিলে আমি ঘেরে পানি উঠা নামা করতে দেব না। ১নং খাস ক্ষতিয়ানের জমির উপর নির্মিত গেট খুলে রাখার জন্য আপনাকে টাকা দেওয়া লাগবে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দখল সর্তে আমাকে টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে আমি বাঁধ কাটতে দেব না। জানাগেছে, এর আগেও একবার সলেমান মোড়ল কর্তৃক ঘের মালিকদের কাছে টাকা দাবি করে টাকা না পেয়ে বাঁধ দিয়ে পানি উঠা নামা বন্ধ করে দিলে এলাকাবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মে মাসের ১৮ তারিখে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এর নির্দেশে শোভনালী ইউনিযন সহকারি কমিশনার (ভুমি) এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল গাফফার এর উপস্থিতিতে ঘের মালিকরা বাঁধটি কেটে দেন। এঘটনার ২মাস পরে গত জুলাই মাসের ১৯ তারিখে আবারও টাকা দাবি করে সেখানে বাঁধ দিয়ে নদী থেকে লোনা পানি উঠা নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবিষয়ে শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক প্রতিবেদকে জানান, যেহেতু এখানে বাদী এবং বে-বাদী উভয়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার বিষয় জড়িত সেহেতু বিষয়টি প্রশাসনের মাধ্যমেই সমাধান হলে ভালো হবে। বোয়ালমারী এবং বাঁকড়া মৌজার একাধিক ঘের মালিকের সাথে কথা বললে তারা বলেন, সলেমান মোড়ল এবং তার স্ত্রী দূর্ধষ প্রকৃতির হওয়ায় এত বিঘা সম্পত্তির মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেখানে গেলে বিশৃঙ্খলা ঘটার ভয়ে আমরা ঘের মালিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সরণাপন্ন হয়েছি। সলেমান মোড়ল গেটটি বন্ধ করে দিয়েই কোর্টে মামলা দায়ের করেছে। প্রায় ৫০বছর পূর্বের স্লুইস গেটের খাস সম্পত্তির ৩০৩ নং দাগের উপর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পিটিশন নং ১৪৪২/২২ মামলায় ১৪৫ ধারা জারি করা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বাগদা চিংড়ির ভরা মৌসুমে সহস্রাধীক বিঘা ঘেরের লোনা পানি উঠা নামার একমাত্র স্লুইস গেটটি খুলে দিতে যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বোয়ালমারী ও বাঁকড়া মৌজার ঘের মালিকগন।