দেবহাটা অফিস \ দেবহাটার কুলিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম চর বালিথা দুর্গম এলাকা হলেও সদর উপজেলা লাগোয়া গ্রামটিতে শহুরে জীবন যাত্রার স্পর্শ পাওয়া যায়। সকাল দশটার কিছু আগে চর বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমীন সাথে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুনির আহমেদ। বিনা নোটিশে বিদ্যালয় শুরু হতেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দেখলেন শিক্ষকরা। জেলা শিক্ষা অফিসারের জবানীতে এবং পত্র প্রেরনের মাধ্যমে পরিদর্শন পরবর্তি অনুভুতি, ব্যথা, কষ্ট, ক্ষোভ, হতাশা, দায়িত্বহীনতা আর চরম অব্যবস্থাপনার বিষয়টি যে ভাবে উন্মোচিত হয়েছে এবং চরম, বিরক্ত, বিব্রত ও বিড়ম্বনায় আচ্ছন্ন হলো উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রেরিত পত্রে জানালেন চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ অন্য থাকায় চারজন সহকারী শিক্ষক দায়সারা ভাবে শ্রেনিতে প্রবেশ করে থাকেন। ৪র্থ/৫ম শ্রেনির ছাত্র ছাত্রীরা সাবলীল ভাবে বাংলা/ইংরেজি পড়তে পারে না। নিজস্ব জমির পরিবর্তে অন্য জায়গায় বিদ্যালয় ভবন নির্মিত হয়েছে। ওয়াশব্লক নির্মানের ইট, বালু ইত্যাদি যত্র তত্র ছড়িয়ে থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক চলাফেরার সুযোগটুকুও নেই। খেলাধুলা/দৈনিক সমাবেশ হয়না। চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে দুর্গম আঞ্চল শশাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমন পর এবং পরিদর্শন পরবর্তি চিত্র শশাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের পাঠদানে বিকল্প ব্যবস্থা না করে মূলভবন নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। একটি টিনশেড খুপরি ঘরে কোনভাবে পাঠদান চললেও বিদ্যালয়ের কোনো নাম ফলক/সাইন বোর্ড নেই। জরাজীর্ন/অস্বাস্থ্যকর কাঁচা ঘরে ছাত্র/ছাত্রীদের পাঠদানের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকলেও উক্ত ঘরের ভিতরেই পাঠদানের পাশাপাশি নির্মান শ্রমিকদের রান্নাবান্না চলছে। অন্য কক্ষে কয়েক জন শ্রমিক ঘুমিয়ে আছেন। নির্মান ঠিকাদারের শ্রমিকদের থাকা, খাওয়া কিংবা নির্মান সামগ্রী সংরক্ষনের কোন ব্যবস্থা করা হইনি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয় দু’টির সামগ্রীক পরিবেশ এবং অব্যবস্থাপনায় হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন, তিনি বলেন প্রাথমিকের শিক্ষক হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার কারন ভাগ্যবানরাই কেবল শিশুদের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বপান, তিনি আরও বলেন সরকার প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সম্ভাব্য সব কিছু করছে, আমরা সরকারের হতে জীবন ধারনের জন্য বেতন পাচ্ছি, কিন্তু এই চিত্র কেবল সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবে না আমরা যারা শিশুদের দায়িত্ব নিয়েছি তাদের বেতন কতটুকু বৈধ? জেলা শিক্ষা অফিসারের আগমনে অভিভাবকদের উপস্থিতি ঘটে এ সময় অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীনতাই এমন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এলাকাবাসি সহ উপস্থিত অভিভাবকদের বলেন আপনাদের সন্তানদের পড়ালেখা কেমন হচ্ছে? কোন পরিবেশে অবস্থান করছে বিষয়টি আপনাদেরও দেখার দায়িত্ব। বিদ্যালয় দু’টির চরম অব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যহীনতা, শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেবেন বলে তিনি উপস্থিত এলাকাবাসিকে আশ্বস্থ করেন। জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তার আগমন ও পরিদর্শনে অভিভাবক সহ স্থানীয় জনসাধারন ধন্যবাদ জানান।