এফএনএস স্পোর্টস: ৪ ওভারে প্রয়োজন ৭২ রান, উইকেট বাকি ¯্রফে ৩টি। ম্যাচের উত্তেজনা কিছু থাকার কথা নয়। কিন্তু দুর্দান্ত পাল্টা আক্রমণে এই ম্যাচও জমিয়ে দিলেন রোমারিও শেফার্ড ও ওডিন স্মিথ। এমনকি শেষ ওভারে ২৬ রানের সমীকরণও অসম্ভব মনে হচ্ছিল না! শেষ পর্যন্ত অবশ্য পারলেন না তারা। মিচেল স্যান্টনারের বোলিং যে ধাক্কা দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে, সেই পথ ধরেই শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল নিউ জিল্যান্ড। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩ রানে হারাল নিউ জিল্যান্ড। জ্যামাইকায় বুধবার কিউইরা ২০ ওভারে তোলে ১৮৫ রান। ক্যারিবিয়ানরা শেষের ঝড়ের পর যেতে পারে ১৭২ পর্যন্ত। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের পর এই প্রথম দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নামেন কেন উইলিয়ামসন। গত কয়েকটি সিরিজে খর্বশক্তির দলের পর এবার পূর্ণশক্তির দল নিয়ে মাঠে নামে নিউ জিল্যান্ড। বলা যায়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য তাদের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল এই ম্যাচ দিয়ে। তাতে শুভ সূচনাই করল বিশ্বকাপের রানার্স আপরা। ম্যাচের সর্বোচ্চ রান করে উইলিয়ামসন নেতৃত্ব দিলেন সামনে থেকে। স্যাবানাই পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ড উদ্বোধনী জুটিতে তোলে ৬২ রান। তাতে মূল কৃতিত্ব ডেভন কনওয়ের। রান বাড়ানোর কাজটি মূলত তিনিই করেন। আরেক পাশে মার্টিন গাপটিল একটি করে চার ও ছক্কা মারলেও রান করতে পারেননি স্বস্তিতে। ১৭ বলে ১৬ রান করে গাপটিলের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ওডিন স্মিথের বলে সীমানায় অসাধারণ ক্যাচ নেন শিমরন হেটমায়ার। ডিপ পয়েন্ট দিয়ে ছক্কায় উড়ে যেতে থাকা বলটি চোখধাঁধানা ক্ষীপ্রতায় এক হাতে জমিয়ে ফেলেন তিনি। পরের বলে বিদায় নেন কনওয়েও। ২৯ বলে ৪৩ রান করে তিনি ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। সেখান থেকে দলের ইনিংস এগিয়ে নেন উইলিয়ামসন। আরেক পাশে গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেল লম্বা সময় টিকতে না পারলেও নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক করেন ৩৩ বলে ৪৭। শেষ দিকে জিমি নিশামের ১৫ বলে ৩৩ রানের ক্যামিওতে সমৃদ্ধ হয় নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই দুই বাউন্ডারিতে শুরু করে শামার ব্র“কস। তবে আরেক ওপেনার কাইল মেয়ার্স আউট হয়ে যান দ্বিতীয় ওভারেই। তিনে নেমে অধিনায়ক নিকোলাস পুরান শট খেলতে থাকেন। ৪ ওভারে ৩৯ রান তোলে দল। এরপরই ছন্দপতন। স্যান্টনারের বোলিংয়ে পথ হারায় ক্যারিবিয়ানরা। বাঁহাতি এই স্পিনারের প্রথম বলেই আউট হন পুরান (৮ বলে ১৫)। পরে তিনি ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক শিমরন হেটমায়ারকেও। ওপেনার ব্র“কস তখনও টিকে ছিলেন। ঝড়ো শুরুর পর অনেকটাই থমকে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ৪২ রান করে তিনিও স্যান্টনারের শিকার। পরে রভম্যান পাওয়েল ও জেসন হোল্ডার ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিলেও পারেননি বড় কিছু করতে। ষষ্ঠদশ ওভারে ১১৪ রানে ৭ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। ম্যাচ তখন একতরফা শেষের অপেক্ষায়। কিন্তু নাটক বাকি ছিল তখনও। ১৭তম ওভারে আসে ১০ রান, ১৮তম ওভারে ট্রেন্ট বোল্টের বলে শেফার্ডের দুই ছক্কায় আসে ১৯ রান। পরের ওভারে লকি ফার্গুসনকে দুই চার ও এক ছক্কা মারেন স্মিথ। ওভার থেকে আসে ১৭। শেষ ওভারে টিম সাউদিকেও একটি ছক্কা মারেন স্মিথ। তবে অন্য বলগুলি থেকে কোনো বাউন্ডারি আসেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজও তাই আর পেরে ওঠেনি। দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচের সেরা স্যান্টনার। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শনিবার একই মাঠে। সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৮৫/৫ (গাপটিল ১৬, কনওয়ে ৪৩, উইলিয়ামসন ৪৭, ফিলিপস ১৭, মিচেল ১৬, নিশাম ৩৩*, স্যান্টনার ৪*; মেয়ার্স ১-০-৮-০, হোল্ডার ৪-০-৪২-১, ম্যাককয় ৪-০-৩৯-১, শেফার্ড ৩-০-৩৫-০, ওয়ালশ ৪-০-২৯-০, স্মিথ ৪-০-৩২-২)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৭২/৭ (মেয়ার্স ১, ব্র“কস ৪২, পুরান ১৫, টমাস ১, হেটমায়ার ২, হোল্ডার ২৫, পাওয়েল ১৮, শেফার্ড ৩১*, স্মিথ ২৭*; বোল্ট ৪-০-৩৬-১, সাউদি ৪-০-৪৬-১, স্যান্টনার ৪-০-১৯-১, ফার্গুসন ৪-০-৩৩-১, সোধি ৪-০-৩৪-১)। ফল: নিউ জিল্যান্ড ১৩ রানে জয়ী। সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ১-০তে এগিয়ে। ম্যান অব দা ম্যাচ: মিচেল স্যান্টনার।