এফএনএস: সরকারের সদিচ্ছা থাকলেই বিশ্ববাজারের সঙ্গে তেলের দাম সমন্বয় রাখা সম্ভব ছিল বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মত, তেলের দাম এক ধাপে এতোটা না বাড়িয়ে বরং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) মাধ্যমে দাম বাড়ানোই সরকারের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত ছিলো। গতকাল শনিবার রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের আয়োজনে ‘বিশ্ব জ¦ালানি সংকট ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এ মত দেন। বৈঠকে জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. ইজাজ গোসেন বলেন, তেলের ব্যাপারে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। এটা আমরা ইম্পোর্ট করি, সাপ্লাই দিই। সমস্যাটা হচ্ছে ‘প্রাইসিং পলিসি’ নিয়ে। আমি ১০ বছর ধরে সরকারের বিপরীতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি। আমি বলে আসছি আপনারা এমন একটা ‘প্রাইসিং পলিসি’ নির্ধারণ করুন, যেন ভোক্তারা অনুভব করে তারা এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। তিনি বলেন, আরেকটা কথা হলো বর্তমানে খুব আলোচনা হচ্ছে পূর্বের লাভের টাকাগুলো কেন এখন খরচ করা হলো না। যে ব্যাখ্যাটা বাপেক্সের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে, সেটাও তো স্পষ্ট নয়। তারা পুরোপুরি হিসাবটাও দেয়নি। ড. ইজাজ বলেন, মূলত মূল্য নির্ধারণের ব্যাপারে ভুল আছে। আপনি একদম উপরেও চলে যেতে পারবেন না, আবার একদম নিচেও নামতে পারবেন না। তাহলে তো আপনার মার্কেটই চলে গেল। আপনাকে বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। অর্থনীতিবিদ ও পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, দাম উঠানামা করবে কি না এটা নির্ভর করে সরকারের নীতির ওপর। সরকার যদি ঘোষণা দেয় আমরা বিশ্ববাজারের পরিস্থিতির সঙ্গে সাতদিনের গড় হিসেব করে দাম বাড়াবো বা কমাবো, এটা অবশ্যই কার্যকর। বিশ্বের অনেক দেশে এমনটা করছে। আন্তর্জাতিক জ¦ালানি পরামর্শক খন্দকার আবদুস সালেক বলেন, বাংলাদেশের যেটা করা উচিত ছিল, বিইআরসির আইনে বলা আছে, সব জ¦ালানির মূল্য নির্ধারণ করবে বিইআরসি। তার ভিত্তিতে ১২ বছর আগে জ¦ালানি মন্ত্রণালয়ে রেগুলেশন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা যদি অ্যাপ্র“ভ করা হতো তাহলে বিইআরসি কী করতো। এলপিজিতে যেভাবে ফর্মুলা করে দেয়, জ¦ালানির জন্যও সেভাবে করে দিতো। ফর্মুলাটা হলে বিশ্ববাজারে বাড়লে বাংলাদেশেও বাড়তো, বিশ্ববাজারে কমলে বাংলাদেশেও কমতো। এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও সাবেক বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ, ভ‚তত্ত¡বিদ অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ ও পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এবং পাওয়ার অ্যান্ড অ্যানার্জির সম্পাদক মোলা এম আমজাদ হোসেন প্রমুখ।