কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৪ টাকা থেকে ১৬ টাকা বেশী দামে রাসায়নিক সার বিক্রি করা হচ্ছে। শ্রাবণ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাতের অভাবে বাড়তি খরচ করে সেচ দিয়ে আমন চাষ শুরু করে। বাড়তি সেচ খরচের পর বাড়তি দামে সার কিনে আমন চাষে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। শনিবার উপজেলার শাকদা গ্রামের কৃষক খোরশেদ আলম জানান, সরকার নির্ধারিত ২২ টাকা কেজির ইউরিয়া ২৬ টাকা, ২২ টাকা কেজির টিএসপি ৩০ টাকা, ১৫ টাকা কেজির পটাশ ৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। গেল বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগে আমন ধান, সরিষা, আম, বোরো ক্ষতিতে টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় সার কিনতে পারছে না। লাউডুবি গ্রামের আরিজুল জানান, ইউরিয়া ও ডিএপি’র কেজি ২৬ টাকা, পটাশ ও টিএসপি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই টাকার অভাবে সার না দিয়ে আমন রোপন করেছি। এখন আয় করতে হবে, আর তাই দিয়ে সার কিনে ক্ষেতে দিতে হবে। সোনাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক বাশার জানান, প্রচন্ড আর্থিক সংকটের মধ্যে ২৫ টাকা কেজি ইউরিয়া, ২৮ টাকা কেজি পটাশ এবং ২৫ টাকা কেজি ডিএপি কিনে আমন ধান চাষ করতে হয়েছে। উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বামনখালীর কৃষক সমরেশ ঘোষ জানান, কোন মেমো ছাড়াই সার বিক্রি হচ্ছে। দোকানের সামনে লাল সালুতে বিধিবদ্ধ মূল্য তালিকা ঝুলানো নেই। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা বেশী দামে সার বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে। দেয়াড়া গ্রামের মুজিবর রহমান, তুলসীডাঙ্গার সিরাজুল, পাচপোতার আলফাজ জানান, গেল বছর আংশিক ভাবে আমনে ক্ষতি হয়। সরিষা ৯০% ক্ষতি হয়। শীতকালিন সবজি, উচ্ছে, কমড়া, পটল ক্ষতি হয়। আমের ফলন ২০% নেমে আসে। ৬০% বোরো ধান ক্ষতি হয়। ফলে প্রচন্ড অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এই অবস্থায় বাড়তি দামে সার কিনতে কৃষক দেনায় জড়িয়ে পড়বে। অথবা টাকার অভাবে প্রযোজনীয় সার না দিতে পারায় ধান উৎপাদন ব্যহত হবে। এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক দেয়াড়া ও সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের ২ জন গ্রাম্য সার ব্যবসায়ী জানান, বিসিআইসি ডিলারের কাছ থেকে মেমো ছাড়াই ৫০ কেজির বস্তা ইউরিয়া ১১৯০ টাকা, ডিএপি ১২০০ টাকা, পটাশ সাড়ে ১৩’শ টাকা এবং টিএসপি ১৪৭০ টাকা বস্তা কিনতে হচ্ছে। এতে বাজারে সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর পরিবহণ খরচ বাদে তারা কোন সারে .৫০ পয়সা কোন সারে এক টাকা লাভ করেন। বিসিআইসি ডিলার হাসিব এণ্টারপ্রাইজ ও উচ্ছাস এণ্টারপ্রাইজ তারা বেশী দামে সার বিক্রি অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ব্যাপরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশী দামে সার বিক্রির কথা তার জানা নেই। তবে বেশী দামে সার বিক্রির অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।