এফএনএস বিদেশ : ভারতের আনুষ্ঠানিক উদ্বেগ জানানোর পরও শ্রীলঙ্কা সরকার একটি ‘বিতর্কিত’ চীনা গবেষণা জাহাজকে তাদের বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দিয়েছে। নয়াদিলি মনে করছে, এই জাহাজের মাধ্যমে ভারতের সামরিক স্থাপনায় গুপ্তচরবৃত্তি করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে বেইজিংয়ের।আন্তর্জাতিক শিপিং এবং সমুদ্রপথ বিশ্লেষণ সাইটগুলো বলছে, চীনের ইউয়ান ওয়াং ৫ একটি গবেষণা এবং জরিপ জাহাজ। এটিকে দ্বৈত-ব্যবহারের গুপ্তচর জাহাজও বলছেন অনেক সংশ্লিষ্ট। শনিবার শ্রীলঙ্কা ও ভারত সরকারের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। ভারত মহাসাগরে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি এবং শ্রীলঙ্কায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে ভারত। যেখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে জরাজীর্ণ শ্রীলঙ্কা বর্তমানে চীন ও ভারত উভয় দেশেরই শক্ত প্রভাব বলয়ের মধ্যে প্রবেশ করেছে। ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজটি মূলত গত ১১ আগস্ট শ্রীলঙ্কার চীন পরিচালিত হামবানটোটা বন্দরে নোঙর করার কথা ছিল। কলম্বোকে এই সফর অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার জন্য বেইজিংকে বলার আহŸান জানিয়েছিল ভারত। শ্রীলঙ্কার সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ভারত সরাসরি প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহকে উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। তবে কেন চীনা জাহাজটিকে বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না সে সম্পর্কে নয়াদিলি ‘সন্তোষজনক প্রতিক্রিয়া’ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়ে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১২ আগস্ট চীনের দূতাবাস একটি ক‚টনৈতিক নোটের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে জানায়, ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজ ১৬ আগস্ট হামবানটোটা বন্দরে পৌঁছানোর কথা। নোটের মাধ্যমে জ¦ালানি ভরার জন্য জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে ছাড়পত্র দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সব দিক বিবেচনা করে শনিবার ১৬-২২ আগস্টের মধ্যে জাহাজটিকে বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দেওয়ার কথা চীনা দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীনা জাহাজটি শুক্রবার রাতে শ্রীলঙ্কা উপক‚ল থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি ধীরে ধীরে হামবানটোটা গভীর সমুদ্র বন্দরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ১১২ কোটি ডলারে ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে হামবানটোটা বন্দরটি লিজ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। যেখানে এটি নির্মাণের জন্য শ্রীলঙ্কা একটি চীনা কোম্পানিকে দিয়েছিল ১৪০ কোটি ডলার। ভারত সরকারের সূত্র বলছে, ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজ মহাকাশ এবং স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের জন্য নিযুক্ত করা হতে পারে। তা ছাড়া আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে এর নির্দিষ্ট ব্যবহার রয়েছে। তবে জাহাজটি বন্দরে নোঙর করা ঠেকাতে কলম্বোকে ভারত চাপ দিচ্ছে, চীনের এমন ধারণা শুক্রবার প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিলি। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, ভারত তার নিরাপত্তা উদ্বেগের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেবে।