এফএনএস বিদেশ: সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুর কেন্দ্রস্থলের কাছে একটি আবাসিক হোটেলে জঙ্গি গোষ্ঠী আল শাবাবের হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার দেশটির একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একথা জানিয়েছেন। আল শাবাব দাবি করেছে, তারা হোটেলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দুটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মোগাদিশুর হায়াত হোটেলে হামলা শুরু করে জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা। বিস্ফোরণের পর তারা হোটেলটির ভেতরে প্রবেশ করে গুলি শুরু করে এবং নিয়ন্ত্রণ নেয়। নিজেকে শুধু মোহম্মদ বলে পরিচয় দেওয়া ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “এ পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত করছি। এদের অধিকাংশই বেসামরিক।” প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সরকারি বাহিনীগুলো জঙ্গিদের হাত থেকে হোটেলটির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করছে আর বিস্ফোরণের শব্দে রাতের নিস্তব্ধতায় বিরাম ঘটছে। দুই পক্ষের লড়াইয়ে হোটেলটির বড় একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিবৃতি পর্যবেক্ষণকারী এসআইটিই ইন্টেলিজেন্স গ্র“প জানিয়েছে, আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি গোষ্ঠী আল শাবাব হামলার দায় স্বীকার করেছে। মোগাদিশুর হায়াত হোটেলটি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের একটি পছন্দের বৈঠক স্থল বলে জানা গেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, হামলা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর হামলাকারীরা হায়াত হোটেলের সবচেয়ে উপরের তলায় অবস্থান নিয়েছে। জানা গেছে, পুলিশের বিশেষ একটি ইউনিট হোটেলটি থেকে কয়েক ডজন অতিথি ও কর্মীকে উদ্ধার করেছে। “হোটেল ভবনের একটি রুমে অবস্থান নেওয়া সন্ত্রাসীদের ঘিরে ফেলে তাদের নিষ্ক্রিয় করছে নিরাপত্তা বাহিনী,” বলেছেন কর্মকর্তা মোহামেদ আব্দিকাদির। বিবিসি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে হোটেলটি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে এবং চিৎকার ও জোরালো শব্দ শোনা গেছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “হায়াত হোটেলকে লক্ষ্য করে দুটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর একটি হোটেলের সামনে একটি বেড়ায় আঘাত করে, অপরটি হোটেলের গেইটে আঘাত হানে।” আল কায়েদার শাখা আল শাবাব দীর্ঘদিন ধরে সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু তারা মোগাদিশুভিত্তিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোতেও তাদের প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা রাখে। স¤প্রতি গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা সোমালিয়া-ইথিওপিয়ার সীমান্ত বরাবর লক্ষ্যস্থলগুলোতেও হামলা চালিয়েছে। এসব হামলার ঘটনায় আল শাবাবের নেওয়া সম্ভাব্য নতুন কৌশল নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মে-তে হাসান শেখ মোহামুদ সোমালিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো রাজধানীতে হামলা চালাল গোষ্ঠীটি।