বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছে হাসিনার স্বৈরতন্ত্র: কূটনীতিকদের ইউনূস ভারতে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদে শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা চিকিৎসকদের নলতা আহসানিয়া মিশন রেসিডেনসিয়াল কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতি ॥ উত্তাল নলতা ॥ শিক্ষক কর্মচারীরা মতবিনিময় করলেন ডাঃ শহিদুল আলম ও চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানের সাথে মহামারীর দ্বারপ্রান্তে গাজা আলোচনায় থাইল্যান্ড ॥ বন্দী থাকসিন মুক্ত হরিনগর বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান পাইকগাছায় একটি বাঁশের সাঁকো পারাপারে এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তি মাথাভারি হচ্ছে প্রশাসনের ॥ বাড়ছে সরকারের দু:চিন্তা ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ এর পদত্যাগ দাবীতে-মানববন্ধন চাম্পাফুল ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে আলোচনায় এগিয়ে যারা \ সিইসি পদে দৌড়ে এগিয়ে সাদিক ও শফিউল

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

জি এম শাহনেওয়াজ, ঢাকা থেকে \ সারাদেশের মানুষের এখন দৃষ্টি নিবন্ধ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দিকে। আগামী পাঁচবছরের জন্য কারা আসছেন সাংবিধানিক পদের এই দায়িত্বে। আলোচনা-সমালোচনা মাথায় নিয়ে শুরু হয়েছে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির কার্যক্রম। গত রবিবারের পর মঙ্গলবার ইতিমধ্যে দুটি সভায় মিলিত হয়েছে এ সার্চ কমিটি। ইতিমধ্যে প্রস্তাবনায় ৩০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের নাম বিভিন্ন মহল থেকে পেয়েছেন তারা। পাশাপাশি প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে পাবেন আরও প্রায় ৪০০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের নাম। এর বাইরে সুশীল সমাজসহ নিরপেক্ষ মাধ্যম থেকেও নাম প্রস্তাব দিতে পারবেন সার্চ কমিটির কাছে। সবগুলোনাম পর্যালোচনা করে সার্চ কমিটি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে সর্বোচ্চ দশ ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করবেন। এসব প্রস্তাবিত নাম থেকে সর্বজন গ্রহণযোগ্য পাঁচজনকে নিয়োগ দেবেন তিনি। এসব কার্যক্রম চূড়ান্ত করতে গতকাল বুধবার সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে সর্বোচ্চ দশজন বিশিষ্ট নাগরিকের নাম চেয়ে পত্র জারি করা হয়েছে। সঙ্গে দলগুলোর কার্যালয়ে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে আমন্ত্রণপত্র। আগামী শুক্রবার রাতের মধ্যে তারা এ নাম প্রস্তাব করবেন। এসব নাম নিয়ে শনিবার সভায় মিলিতি হবেন সুশীল সমাজের সঙ্গে সার্চ কমিটি। পরদিন সভা করবে নির্বাচন বিষয়ে অভিজ্ঞ সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে। তবে যত সভা-আলোচনা হোক প্রশ্ন একটাই সিলেশন না সব দল ও গোষ্ঠীর মতামতের ভিত্তিতে যোগ্য, বিতর্কিত ও নিরপেক্ষ নাগরিক আসবে কমিশনের দায়িত্বে এসব। তবে, বিএনপি রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জন করেন এবং সার্চ কমিটিতে নাম প্রস্তাব দেয়া থেকে বিরত থাকছে দলটি। ফলে বিএনপি ছাড়াই আগামী পাঁচবছরের জন্য কমিশনার পাবে দেশ। ফলে শুরু থেকেই কমিশনকে রাজনৈতিক চাপে থাকতে হবে। এসব আলোচনার বাইরে দৃষ্টি কে হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের ঘনিষ্টজন এবং আমলাদের তথ্যমতে, সিইসি পদের জন্য সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুর হক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, সাবেক সচিব ও পিএসসির বিদায়ী চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক, পুলিশের সাবেক আইজিপি শহীদুল হক এর নাম সমস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে। তবে, সরকারের পছন্দের তালিকায় শহীদুল হক থাকলেও তার ঘনিষ্টজনদের অভিমত তিনি সিইসি হতে অপরাগ আছেন; ওনার ইচ্ছা আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শরিয়তপুর নিজ নির্বাচনী এলাকা থেকে এমপির মনোনয়ন নেয়া। যদি সাবেক এই আইজিপি তার সাংসদ হওয়ার চিন্তা বদলান তাহলে তাকেও সিইসি পদে দেখা যেতে পারে। আর শুরুতে সিইসি পদের জন্য সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এগিয়ে ছিলেন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত জন-প্রশাসন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ছিলেন সাদিকের সবচেয়ে আস্থা ও নির্ভারের জায়গা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টার প্রয়াত হওয়ার পর সিইসির দৌঁড়ে তিনি ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়তে থাকেন। তবে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা থাকায় সরকার তার ওই অবদানের কথা আমলে নিলে তাকে-ও আগামী পাঁচবছরের জন্য সিইসি পদে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। সার্চ কমিটি গঠনের পর সাবেক এই আমলার নাম ফের জোরেশোরে উচ্চারণ হচ্ছে। এর পর আলোচনায় রয়েছেন মোহাম্মদ শফিউল আলম এর নাম। তিনি সিনিয়র সচিব থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার ক্ষেত্রে তার ভাই এ টি এম জাফরুল ইসলামের অবদানে ওই পদে আসীন হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটিএম জাফরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বার্তাবাহক ছিলেন। ভাইয়ের পরিচয় ছাপিয়ে সাবেক এই আমলা যেমন পরিছন্ন, ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন এবং তেমনিই সজ্জ্ন হিসেবে প্রশাসনে পরিচিত। পাশাপাশি সরকারের আস্থাভাজন-ও সাবেক এই মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়ার না-ও আলোচনায় শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন কর্নার থেকে। সিইসির দৌড়ে তিনি তত বেশি এখনো এগিয়ে আসতে পারেননি। তবে তিনি খুবই দক্ষতার সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক হঠাৎ আলোচনায় উঠে এসেছে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে তত্বাবধায়ক সরকারকে বিলুপ্ত করায় তার ভূমিকা অনন্য। এ অবদানের কারণে তিনি-ও সরকারের পছন্দের। সেনা-সমির্থত তত্বাবধায়ক সরকারে পর নির্বাচন কমিশন পদে আমলাদের দৌরত্ব বাড়ে। গত দুইটি কমিশনে আমলানির্ভল ছিল। এবার খায়রুল হককে সিইসি করা হলে আমলাদের দৌরত্ব কমবে। এদিকে, সরকারের ঘনিষ্টজন সূত্র বলছে, সার্চ কমিটিতে আওয়ামী লীগ থেকে সিইসি হওয়ার জন্য যাদের নাম প্রস্তাব করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে বিচারপতি খায়রুল হক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ও পিএসসির সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক। আর কমিশনার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্য-সচিব আবুল কালাম আজাদ, কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমনি টুলি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সালদার হোসেন, ইসির সাবেক যুগ্ম-সচিব মো. আবুল কাশেম ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ। এদিকে, নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য সবচেয়ে বেশি আলোচনায় উঠে এসেছে কমিশনের সাবেক অফিসার নির্মাণ প্রকল্পের (পিডি) ব্রি. জে. (অব.) সালদার হোসেন এর নাম। তিনি সরকারের যেমন আস্থাভাজন। একই ভাবে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। কাজেও খুবই দক্ষ এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনার পদে দৌঁড়ে রয়েছেন। সাবেক ব্রি. জে. (অব.) ইউসুফ বলে সাবেক কর্মকর্তার নাম-ও আলোচনায় রয়েছে কমিশনার হওয়ার জন্য। এছাড়া এর পর বেশি আলোচনায় রয়েছে ইসির সাবেক যুগ্ম-সচিব মো. আবুল কাশেমের নাম। এই আমলার সঙ্গে সরকারের গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে রয়েছে ঘনিষ্ট যোগাযোগ। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তুফা কামাল। এসব ভিআইপি ব্যক্তিরা কাশেমকে কমিশনার পদে নিতে জোর তদবির করছেন বলে জানা গেছে। ভিআইপিদের আস্থায় গত ২ ফেব্র“য়ারি চুক্তিভিত্তিক পদ থেকে অবসর চেয়ে আবেদন করেছেন আবুল কাসেম। আলোচনায় রয়েছে সাবেক যুগ্ম-জেলা জজ জাহানারা পারভীনের নাম-ও। পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. সাদিকের সহধর্মীনি তিনি। যদি সিইসি পদ থেকে ড. সাদিক পিছিয়ে পড়েন তাহলে সরকারের আস্থাভাজন হয়ে তার স্ত্রীকে পুরস্কার হিসেবে কমিশনার পদে বসাতে পারেন সরকার বলেও জানা গেছে। এর বাইরে ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলির নাম-ও উচ্চারণ হচ্ছে কিছ’ কিছু মহলে। জাহানারা পারভীন নির্বাচন কমিশনার না হলে জেসমিন টুলি দৌড়ে এগিয়ে আসতে পারেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র বলছে, সিইসি হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন সাবেক পরিষদ পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ও পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহম্মাদ সাদিক। তবে, কে সিইসি ও কারা নির্বাচন কমিশনার হবেন, – এ আলোচনা ও গুঞ্জন সরব দেশ এখন। আগামী ১৪ ফেব্র“য়ারি বর্তমান কে এম নুরুল হুদার কমিশনার বিদায় নেবেন; এদিনই পরিস্কার হবেন সাংবিধানিক পদে কারা আসছেন। নতুন কমিশনারদের নাম না পাওয়া পর্যন্ত চলতে থাকবে এ আলোচনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com