স্টাফ রিপোর্টার \ সাতক্ষীরায় র্যাব-৬এর অভিযানে আলোচিত চা বিক্রেতা ইয়াছিন আলীর নৃশংস হত্যার ৫ দিন পর ঘাতক খুনিকে আটক করার পর খন্ডিত মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। আটক খুনি সদর উপজেলার আলীপুরের খালচর এলাকার বাচ্চু শেখের পুত্র ভ্যান চালক জাকির হোসেন (৫৭)। গতকাল সকাল ৯টায় শহরের বাইপাস সড়কে কালভাটের তলায় পানির মধ্য থেকে ঘাতক খুনি নিজেই বস্তা বন্দি মস্তক উদ্ধার করে। এ সময় বাইপাস সড়কে বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতা ভীড় জমায়। মস্তক উদ্ধারের পর তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় খুলনা র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মো: মোশতাক আহমেদ জানান, র্যাবের টিম তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে চুলচেরা বিশ্লেষনের পর ঘাতককে সনাক্ত করা হয়। গত শনিবার রাতে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে সকালে বাইপাসে তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের স্থান থেকে ১ কিলোমিটার দূরে কালভাটের তলা থেকে বস্তাবন্দি মস্তক সে নিজেই উদ্ধার করে। তাকে সাথে নিয়ে নিহতের পোশাক উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো বলেন, ঘাতক চা বিক্রেতার কাছে ২০ হাজার টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ঐ টাকা না দেওয়ায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। এমনকি তাকে হত্যা করবে এই মর্মে ১৫ দিন পূর্বে পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবিহকতায় গত ৩০ আগস্ট রাতে ইয়াছিনকে বাইপাসে কাজ করার নামে কৌশলে ভ্যানে বাইপাসে নিয়ে যায়। পরে ঘাতক জাকির ইয়াছিনের কাছে ভ্যান চালাতে দেয়। ঘাতকের বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, প্রায় দুই ঘন্টা যাবত ভ্যান নিয়ে বাইপাসে চলাচল করতে থাকে। আইন শৃংখলা বাহিনীর টহল গাড়ী কিংবা অন্য পরিবহন চলাচলে নজরদারির এক পর্যায় গভীর রাতে যখন সড়ক নিরিবিলি হয়, ঠিক রাত ১২টা বাজার ২ মিনিট পূর্বে ভ্যানের পিছন থেকে দা দিয়ে তার গলায় সজোরে ধারালো দা দিয়ে কোপ মারে এতে তার মাথা খন্ডিত হয়নি। পরে তাকে টেনে হিচড়ে পানিতে নিয়ে জবাই করে মস্তক আলাদা করে রাস্তায় নিয়ে ঐ স্থানে রাখে। পরে গোসল করে বাড়িতে চলে যায়। সে একাই তাকে জবাই করে হত্যা করেছে। তিনি আরো বলেন এ ধরনের হত্যাকান্ড ঘটিয়ে কোন ব্যক্তি কখনও পার পাবেনা। এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী তাসলিমা জানান, চা বিক্রয়ের পাশাপাশি করোনা কালীন সময়ে এলইডি লাইটের ব্যবসা করতো ঐ ব্যক্তির সাথে। তিনি তাকে একদিন দেখেছেন। কিন্তু তার বাড়ি কোথায় জানতেন না। ২০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করে লাভ জনক না হওয়ায় কিছুদিন পর ব্যবসায় ধস নামে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে তাকে ৭ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন ঘটনার দিন দুপুরে স্বামী ইয়াছিন বলেন ভ্যান চালকের সাথে রাতে বাইপাসে একটি ঘরের কাজ করতে যেতে হবে। ফিরতে অনেক দেরি হবে। সর্বশেষ রাত সাড়ে ৮টায় মোবাইলে কথা বলে ভ্যানে চলে যায়। সারারাত আর ফোনে তার কোন খবর পাওয়া যায়নি। পরের দিন সকালে লোক মারফতে জানতে পেরে বাইপাসে গিয়ে মস্তক বিহীন লাশ সনাক্ত করি। আজ র্যাবের মাধ্যমে জানতে পেরে আসলে মস্তক দেখতে পায়। তিনি ঘাতকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। সদর থানায় তার স্ত্রী একটি মামলা দায়ের করেন। র্যাবের গোয়েন্দা দল মামলার পর অভিযান শুরু করে। উলেখ্য, গত ৩১ আগস্ট বকচরা বাইপাস এলাকায় পানিতে মস্তক বিহীন নিথর দেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা সদর থানায় খরব দেয়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।