স্টাফ রিপোর্টার \ আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের কুন্দুড়িয়ায় মুজিব বর্ষের ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার শিকার শাহিনুর ইসলাম সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে বসেছে। গত বুধবার কুঁন্দুড়িয়া গ্রামের আহম্মাদ গাজীর ছেলে ভুক্তভোগী শাহিনুর ইসলাম বাদী হয়ে টাকা ফেরৎ সহ ক্ষতিপূরণের দাবিতে আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী শাহিনুর ইসলামের সাথে কথা বলে এবং থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, তিন মাস পূর্বে একই গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও একব্বর ঢালীর ছেলে রফিকুল ইসলাম মিলে শাহিনুর ইসলাম এবং তার স্ত্রীকে মুজিব বর্ষের পাকা ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। ভগ্ম প্রায় জরাজীর্ণ বসত ঘরে স্ত্রী, মানসিক প্রতিবন্ধী কন্যাসহ তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করা ঝুঁকিপূর্ণ ভেবে ৪০ টাকার বিনিময়ে মুজিব বর্ষের ঘর নিতে রাজি হয়। শাহিনুর সে সময় তাদেরকে বলেন ঘর তৈরীর মালামাল আসলে তাদের টাকা পরিশোধ করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত জুলাই মাসের প্রথম দিকে ৫ ট্রলি বালি ও ১হাজার ইট তার বাড়িতে নিয়ে এসে চুক্তির টাকা দাবি করে শহিদুল ও রফিকুল। তাৎক্ষণিক টাকা জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়ে স্ত্রীর গহনা অন্যত্র বন্ধক রেখে টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করে। বন্ধক রেখে প্রয়োজন মত টাকা না পাওয়ায় ২৭ হাজার টাকায় স্ত্রীর সব গহনা বিক্রি করে দিয়ে তাদের হাতে টাকা গুলো তুলে দেয় শাহিনুর। টাকা হাতে পেয়ে শহিদুল এবং রফিকুল দুই দিনের মধ্যে বসত ঘর ও রান্না ঘর ভেঙে পাকা ঘরের জন্য জায়গা পরিস্কার করতে বলে। তারা এটা ও বলে ঘর ভাঙতে দেরি হলে ঘর ফিরে যাবে। এসময় নিরুপায় হয়ে সে তড়িঘড়ি করে বসত ঘর, রান্না ঘর ভেঙে ফেলে। ঘরের জন্য নির্ধারিত জায়গা কম পড়ে যাবে ভেবে ঘরের পাশের চায়ের দোকান ও বাড়ির আঙিনার কয়েকটি ফলজ গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনার পর থেকে প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও আজও পর্যন্ত তারা ঘর দেয়া তো দুরের কথা উল্টো ইট গুলো তার বাড়ি থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে তারা। এরপর থেকে শাহিনুর তার টাকা ফেরত ও ক্ষতিপূরণ চাইলে আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি এভাবে তালবাহানা করতে থাকে। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখ অওয়াদা মোতাবেক টাকা নিতে তাদের বাড়িতে গেলে তারা তাকে মারধর করতে উদ্যত হয় এবং পুনরায় টাকা ও ক্ষতিপূরণ না চাওয়ার জন্য ভয়ভীতি ও জীবননাশের হুমকি প্রদর্শন করে। শাহিনুর ইসলাম আরও বলেন, আমার বসত ঘর, রান্না ঘর ও চায়ের দোকান এমনকি শেষ সম্বল স্ত্রীর গহনা গুলো হারিয়ে পথের ভিখারি হয়ে গেছি। ধীরে ধীরে আমি জানতে পারলাম তারা শুধু আমাকে সর্বশান্ত করেনি আমার মত গ্রামের আরও অনেককে সর্বশান্ত করে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমিনুল ইসলাম পিপিএম জানান, প্রলোভনে পড়ে প্রতারণার স্বীকার হয় এসব অসহায় পরিবার। আর এ সকল পরিবারের কারনেই এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করার সুযোগ পায় অপরাধীরা। বিষয়টির তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে রফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।