বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কলারোয়ায় এতিমখানায় কম্বল বিতরণ কলারোয়ার খোরদোয় যুবদলের কর্মী সমাবেশ কুশোডাঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে সাবেক এমপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা কলারোয়ায় বিএনপির সাংগঠনিক আলোচনা সভায় -সাবেক এমপি হাবিব তারুণ্য নির্ভর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিতে হবে দেবহাটায় যুব বিভাগের ইয়ুথ লিডারশীপ ট্রেনিং প্রোগ্রাম দেবহাটায় বাংলাদেশ স্কাউটস’র ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল সাতক্ষীরায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ শ্যামনগরে এইচডি ব্রিক্স ও এমবি ব্রিক্সকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা নিসচা’ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার এক জরুরি সভা শ্যামনগরে সুন্দরবন এ্যাপোলো হসপিটাল ও সেবা ক্লিনিক বন্ধ ঘোষণা

জলোচ্ছ¡াসের শঙ্কায় আতঙ্কিত উপকূলের মানুষ \ দিনভর সাতক্ষীরায় দমকাসহ ঝড়বৃষ্টি

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার \ উপকূলীয় অঞ্চলের ১৫টি জেলায় জলোচ্ছ¡াসের শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। অনেকে বসত বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে। কেউ আবার সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। পশ্চিম মধ্য-বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে বর্তমানে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি উপকূলীয় উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম মধ্য-বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সাতক্ষীরায় সকাল থেকে প্রবল বেগে দমকাসহ ঝড় হাওয়া বইছে। রোববার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছানাউল হক মন্ডল এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হতে পারে। এদিকে, লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার জরাজীর্ণ ৬২ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, রাত থেকেই থেমে থেমে হালকা, মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদীতে জোয়ারের সময় বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে। গাবুরা, নাপিতখালি, জেলেখালি, তিন নম্বর পোল্ডারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। ইতিমধ্যে নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। জোয়ারের সময় বাঁধের কানায় কানায় পানি উঠছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, তার আওতায় ৩৮০ কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৪২ কিলোমিটার। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার চলমান রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার জানান, তার আওতায় উপকূলীয় অঞ্চলে ৪০০ কিলোমটিার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সূত্র বলছে ষাটের দশকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৩০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পাকিস্তান সরকার। ষাট বছরে ভাঙতে ভাঙতে যার অস্তিত্ব এখন আর নেই বললেই চলে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লবণপানি প্রবেশ করায় এক সময়ের সবুজ শ্যামল জনপদ গাবুরায় কৃষি উৎপাদন নেমে এসেছে শূন্যের কোটায়। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত আর নদী ভাঙ্গন এ দ্বীপকে এতটাই ভঙ্গুর করে দিয়েছে যে, এখানে এখন আর বড় ঘূর্ণিঝড়ের প্রয়োজন হয় না। অমাবস্যার জোয়ারে পানির চাপ একটু বাড়লে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া ষাটের দশকে দেশের ১৩ জেলায় ৫ হাজার ৮১০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকার ১৩৯টি পোল্ডার (বেড়িবাঁধ) নির্মাণ করা হয়েছিল। শুনতে আশ্চর্য শোনালেও সত্যিটা হলো, স্বাধীনতার ৫০ বছরে উপকূল সুরক্ষায় নতুন একটি পোল্ডারও তৈরী করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাকিস্তান আমলে তৈরী বেড়িবাঁধ সংস্কার আর পুনঃনির্মাণেই কেটে গেছে ৫০টি বছর! অর্ধশত বছরেরও আগে নির্মিত এসব বাঁধ এখন আর সামাল দিতে পারছে না সামুদ্রিক ঝড়-জলোচ্ছ¡াসের ধাক্কা। ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল রেখার প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা এখনো অরক্ষিত। পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ ও ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়সহ একের পর এক ঝড়-জলোচ্ছ¡াসে দেশের বাঁধের বেশিরভাগ অংশ নাজুক হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র সুপার সাইক্লোন সিডরে উপকূলীয় ৩০ জেলার ২ হাজার ৩৪১ কিলোমিটার বাঁধ বিধ্বস্থ হয়। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিলীন হয় ৩৯১ কিলোমিটার। ১ হাজার ৯৫০ কিলোমিটার বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার ৩৮টি পোল্ডারের ১৬৫১ কিলোমিটার বেঁড়ি বাধের মধ্যে ৬৮৪ কিলোমিটার বিধ্বস্থ হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com