বিশেষ প্রতিনিধি \ আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া আমজাদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধ কমিটির মাধ্যমে অর্থ বাণিজ্য ও স্বজনপ্রীতির নিয়োগ বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে স্কুল চত্বরে এলাকাবসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ক্ষুব্দ বঞ্চিত, প্রতারনার শিকার ও অনিয়ম দুর্নীতি রোধে প্রতিবাদী ব্যক্তিরা হাতে বিষের শিশি ও দড়ি হাতে নিয়ে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, স্কুলের পিটিএ কমিটির সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সানা, সাবেক সভাপতি ও দ্বাতা সদস্য জগদীশ চন্দ্র সরকার, গোকুল চন্দ্র সানা, সত্যেন্দ্র নাথ মন্ডল, প্রতারনার শিকার নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী লাবন্য মন্ডল প্রমুখ। বক্তাগণ বলেন, অবৈধ কমিটি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারী ৩টি পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করলে আমরা প্রধান শিক্ষকের কন্যা কৃষ্ণা রানী সানা, সভাপতির ভাইপো তন্ময় সরকারকে এবং সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও প্রভাবশালী একজন নেতার আত্মীয় মাধব চন্দ্র মন্ডল বা তার স্ত্রীকে নিয়োগ দানের জন্য সকল যোগাযোগ ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। বাধ্য হয়ে আমরা পুনঃ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সকল যোগ্য প্রার্থীকে আবেদনের সুযোগ দান ও নিরপেক্ষ পরীক্ষা গ্রহনের দাবীতে মানববন্ধন ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে ৩ সেপ্টেম্বরের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। কিন্তু তারপরও তারা তাদের অপকর্ম ও অসদ উদ্দেশ্য সফল করতে গোপনে তৎপরতা চালাতে থাকলে আমরা আশাশুনি প্রেসক্লাবে ৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করি। কিন্তু তাদের ন্যায্য দাবী অমান্য করে গোপন তৎপরতা চালাতে থাকলে পিটিএ সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সানা বাদী হয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশান (নং ১১২১৫/২০২২ করেন। এতদসংক্রান্ত কাগজপত্র ১২ সেপ্টেম্বর ইমেইলে ও অফিসে রিসিভড করানোর মাধ্যমে মাননীয় জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়। সাথে সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানানো হয়। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্থ করলেও নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি। বক্তাগণ বলেন, প্রধান শিক্ষকের কন্যাকে নিয়োগ দান কার্যকর করতে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দানের ক্ষেত্রেও করা হয়েছে অনিয়ম ও লুকোচুরি। সবশেষে বিজন কুমার বাছাড়কে অবৈধ ভাবে ও জোরপূর্বক দায়িত্ব দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশনের কপি প্রাপ্তির পরও তা অগ্রাহ্য করা হয়েছে দাবী করে বক্তগণ বলেন, অর্থ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও অবৈধ কমিটির অবৈধ নিয়োগ বন্ধ বা বাতিল করে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য তারা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্যথায় কেউ বিষ পান ও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হলে তার দায় দায়িত্ব কর্মকর্তাদেরকেই নিতে হবে বলে তারা হুঁশিয়ার করে দেন। বঞ্চিত প্রার্থী লাবন্য মন্ডল জানান, তাকে সকাল ৯ টায় পরীক্ষায় অংশ নিতে নোটিশ করা হয়। তিনি ৮.৩০ টার দিকে পরীক্ষা কেন্দ্রে (চাপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়) উপস্থিত হয়ে ১১ টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করলেও দায়িত্ব প্রাপ্ত কাউকে না পেয়ে চাপড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে গেলে তিনি বলেন, তারা এখনো আসেননি। শুনেছি হাই কোর্টে রিট পিটিশন হয়েছে। তাই পরীক্ষা হবে কিনা বলতে পারছেন না। এরপর তিনি ফিরে এসেছেন। তারা অবৈধ কমিটির অধীনে অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ ও বাতিল করে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা পর্যন্ত অপেক্ষা করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সকলের অংশ গ্রহনে পরীক্ষা অনুষ্ঠান করে যোগ্যদেরকে নিয়োগ দানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।