মাছুদুর জামান সুমন \ বিশ্বস্থ এবং প্রভুভক্ত প্রাণি হিসেবে কুকুরের পরিচিতির শেষ নেই। এই প্রানি কেবল বিশ্বস্থ তা নয়, আবেগ, অনুভূতি সম্পন্ন, স্নায়ুচাপ দুশ্চিন্তার গন্ধও পেয়ে থাকে কুকুর। বাসা বাড়ীর অতন্দ্রপ্রহরী হিসেবে সদা জাগ্রত এবং তৎপর থাকা কুকুর কোন কোন সময় বিপদজনক হয়ে উঠে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, ভয় আর আতঙ্ককে সঙ্গী করে এই প্রভুভক্ত প্রাণি। জনমানবের অত্যন্ত কাছাকাছি থাকায় মানুষের সাথে কুকুরের অবস্থান প্রতিনিয়ত। আর এমন পরিস্থিতি সা¤প্রতিক সময় সৌহাদ্য বন্ধুত্ব, বিশ্বস্থতার বিপরীতে জন মানুষের জন্য ভীতিকর পরিস্থিতির অবতরনা ঘটিয়ে চলেছে কুকুর এবং কুকুর দল। সাতক্ষীরা শহরের বাস্তবতায় সড়কে সড়কে, গলিতে, মোড়ে, হোটেল রেস্তরার আশপাশে, বাসা বাড়ীর গেটে, লোকালয়ে, বাসস্ট্যান্ডে, গ্যারেজে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকাতে, মুদি দোকান এলাকায়, টং দোকান পাশে, অস্থায়ী খুপড়ি দোকান এলাকায় এমনকি অফিস চত্বরে সর্বত্র বেওয়ারিশ কুকুর। কোন কোন সময় এককভাবে আর কোন কোন সময় দলবদ্ধ ভাবে আর এই উপস্থিতি, চলাচল স্বাভাবিক নয়, লোকজন বুঝে ওঠার আগেই ছোবল অর্থাৎ কামড় দিচ্ছে। সাতক্ষীরা শহরে বর্তমান সময় ব্যাপক কুকুরের উপস্থিতি এবং কামড় দেওয়ায় ঘটনায় এক ধরনের অস্থিরতা এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিশু, বৃদ্ধ, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবি, শিক্ষার্থী সকলেই কুকুর আতঙ্কে। রাতের শহর বেওয়ারিশ কুকুরের চলাচল এবং বেহিসেবি হিংস্র আচরনে অতিষ্ট জনমানব। শহরের কয়েকটি হোটেলের ময়লা আবর্জনা চত্বরে বেওয়ারিশ কুকুরের জটলা বাদ দেওয়া খাদ্য অংশ চটকানিতে স্বাস্থ্যহানী ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। পথচারীদের আক্রমন করছে কুকুর, ডাস্টবিন গুলোতেও কুকুরের উপস্থিতি বিদপজনক। কোন কোন সময় লোকজনকে ঘেউ ঘেউ করে তাড়া করছে কুকুর। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই কুকুরে কামড়ানো মানুষের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। কেবল সাতক্ষীরা শহর নয় মফস্বল এলাকাগুলোতেও কুকুরের আতঙ্কে এবং কামড়ে ভুক্তভোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ ব্যবস্থায় কুকুরের কামড়ানো ও বিষ নিধন প্রকল্প গ্রহন করা যেতে পারে। সাতক্ষীরা শহর হতে বেওয়ারিশ কুকুর সরাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়া জরুরী। বেওয়ারিশ কুকুর নির্দিষ্ট স্থানে রাখা যেতে পারে। কুকুর আতঙ্ক এবং কুকুর হতে নিরাপদ থাকার নিজস্বতা আনায়ন করতে হবে। কুকুরের হিংস্রতাকে জয় করতে হবে আর এক্ষেত্রে কুকুর সামনে পড়লে বা কামড় দিতে উদ্যত হলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি কুকুরকে বুঝাতে হবে ভয় পাচ্ছি না, অর্থাৎ ভয় পেলে চলবে না। অত্যন্ত প্রখর স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন এই প্রাণি বুঝতে পারে কে ভয় পাচ্ছে আর কে ভয় পাচ্ছে না। যারা ভয় পাবে তাদেরকে কুকুর কামড়ানোর জন্য তাড়া করে। তাই ভয় পেলে চলবে না। সাহসের সাথে কুকুরের সাথে কথা বলুন এবং সরে যেতে নির্দেশ দিন। সরাসরি কুকুরের চোখে দিকে তাকালে সে আরও আগ্রাসী হতে পারে আর তাই আস্তে আস্তে হেটে পার হয়ে যেতে হবে। কুকুর তাড়া করলে কুকুরের মনোযোগ সরাতে অন্য কিছু কুকুর হতে কিছু দুরে ফেলতে হবে তাহলে কুকুরের দৃষ্টি ঐ দিকে যাবে। সবশেষে কুকুর যদি কোন ভাবে আক্রমন করে বসে তাহলে লড়াই করতে হবে এবং লড়াই করার সময় শব্দ করতে হবে। হাক চিৎকার দিতে হবে তাহলে আশপাশের লোকজন সাহায্যে এগিয়ে আসবে। সবশেষ কুকুর হতে সাবধান থাকতে হবে, ভয়ঙ্কর রোগ জলাতঙ্ক কেবলমাত্র কুকুরের কামড়েই হয়। কোনভাবে কুকুর কামড়ালে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে এবং সাতক্ষীরার প্রেক্ষিতে সদর হাসপাতালের সরনাপন্ন হতে হবে।