বিলাল হুসাইন নগরঘাটা থেকে ঃ ৪০ বছর ধরে পা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন তালা উপজেলা ধানদিয়া ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের মোঃ আকবর আলী গাজী ওরফে (ধুনা) (৬৬)। তিনি বেঁচে থাকার তাগিদে জীবনের সাথে লড়াই করেই চলেছেন প্রতিনিয়ত। আকবর আলী গাজীর উপার্জনের একমাত্র সম্ভল হলো পা ভ্যান। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জীবন সংগ্রামে অতিক্রম করে চলেছেন। সংসার জীবনে ২ ছেলে এবং ৩ মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। দিন নেই রাত নেই ভ্যান চালিয়ে সংসার পরিচালনার পাশাপাশি সন্তানদেরকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছেন। সব ছেলে মেয়েদেরকে বিয়ে দিয়েছেন এই ভ্যান চালিয়ে। কিন্তু আকবর আলী গাজীর ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আসেনি। এমনিভাবে তাঁর সারা জীবনের যে কষ্ট সেই কষ্টই থেকে গেছে। দৈনিক দৃষ্টিপাতের সাথে সাক্ষাৎকালে মোঃ আকবার আলী গাজীর চোখে মূখে ছিলো বিসণ্নতার সাফ। ভারাক্রান্ত জীবনের বাস্তব কিছু কাহিনী অকপটে বলে ফেলেন। ছেলেরা এখন যার যার মত করে আলাদা হয়ে গেছে। বাবা মা তাদের সংসারের এখন অনেক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আর আগের মত শরীরে তেমন কোন শক্তি পাইনা। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটে হেঁটে কোন প্রকার জীবনে বেঁচে থাকার তাগিদে পা ভ্যান চালাতে হচ্ছে। প্রতিদিন ধানদিয়া থেকে পা ভ্যান ঠেলে নিয়ে গিয়ে সাতক্ষীরায় যেতে হয় অনেক কষ্ট করে। সেখান থেকে মুরগির পায়খানা বস্তায় করে নিয়ে এসে এলাকার বিভিন্ন ঘেরে দিতে হয়। এইভাবে চলতে থাকে আকবর আলীর জীবন সংগ্রামের পথ চলা। অসহায় আকবর আলী প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ বস্তা মুরগির পায়খানা নিয়ে ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটারের মত পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে হয় তার। এর বিনিময় আকবর আলী ঘের মালিকদের কাছ থেকে পান বস্তা প্রতি ৫০ টাকা করে। তিনি আরো জানান ২০০৪ সালে কাঠ বোঝাই ভ্যান চালাতে গিয়ে কাঠে ভিতর হাত ঢুকে গিয়ে একটা হাত ভেঙ্গে যায়। সেখান থেকে আজ পর্যন্ত ভাঙ্গা হাত দিয়ে আকবর আলী বহু কষ্টের মধ্যে ভ্যান চালিয়ে আসছেন। তিনি জানান জীবনের বাকী সময়টা হয়তো এইভাবে কাটাতে হবে তাঁর। এমতাবস্থায় মানবিক বিষয়টি দেখার জন্য তালা উপজেলা প্রসাশনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতনমহল।