এফএনএস: নাম বদলে ভুয়া দুটো জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে নিয়েছিলেন, মাজারে মাজারে ঘুরে করে আসছিলেন বাবুর্চি বা দারোয়ানের কাজ, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চট্টগ্রামের জানে আলম হত্যা মামলায় ফাঁসির রায় মাথায় নিয়ে পালিয়ে থাকা এক আসামিকে দুই দশক পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার সৈয়দ আহম্মেদের বয়স এখন ৬০ বছর। তার বাড়ি লোহাগাড়ার আমিরাবাদে। বুধবার চট্টগ্রামের আকবর শাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ জানান। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জমির বিরোধে ২০০১ সালের নভেম্বর থেকে ২০০২ সালের মার্চের মধ্যে লোহাগাড়া উপজেলায় মাহমুদুল হক এবং তার বড় ভাই ব্যবসায়ী জানে আলমকে খুন করা হয়। দুই মামলার এজাহারেই আসামির তালিকায় সৈয়দ আহম্মদের নাম ছিল। এর মধ্যে জানে আলম হত্যা মামলায় ২০০৭ সালে সৈয়দ আহম্মেদসহ ১২ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং আট জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় আদালত। পরে হাই কোর্টে সৈয়দ আহম্মেদসহ ১০ জনের ফাঁসির রায় বহাল থাকে। র্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ বলেন, জানে আলমকে হত্যার পর সৈয়দ আহম্মেদ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে ছিলেন। পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে কিছুদিন উপক‚লীয় এলাকায় এবং পরে সীতাকুন্ডে অবস্থান করেন। পরিচয় গোপন রাখতে দুটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করিয়ে নেন তিনি। এক সময় সীতাকুন্ডের জঙ্গল সলিমপুরে ছিন্নমূল নেতা মশিউরের ছত্রছায়ায় বসবাস শুরু করেন সৈয়দ আহম্মেদ। সেখান থেকে বিভিন্ন মাজারে বাবুর্চির কাজ করতেন। পরে আকবরশাহ এলাকায় একটি ভবনে দারোয়ানের কাজ নেন। আকবর শাহ এলাকায় সৈয়দ আহম্মেদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বুধবার সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব, বলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইউসুফ। তিনি বলেন, মাহমুদুল হককে খুনের পর বাঁশখালী উপজেলায় আত্মগোপন করে ছিলেন সৈয়দ আহম্মেদ। সেখান থেকে জলদস্যুদের সাথে সমুদ্রে চলে যান। চার মাস পর লোহাগাড়ায় ফিরে এসে মাহমুদুলের বড় ভাই জানে আলমকে হত্যায় অংশ নেন তিনি। ছোট ভাইয়ের হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন ব্যবসায়ী জানে আলম। তিনিই মামলা পরিচালনা করছিলেন। তাই আসামিদের ধারণা ছিল, জানে আলমকে খুন করতে পারলে মামলা আর এগোবে না এবং তার সম্পত্তিও ভোগ করতে পারবে। সে কারণে তাকেও তারা হত্যা করে।