সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাজার হাজার টন চাল আমদানিতেও বাজারে প্রভাব পড়েনি বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ শীতজনিত রোগীর চাপ রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি হাসপাতালে বাড়ছে সাতক্ষীরা পৌর—মেয়রের বরখাস্তের আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট স্কুল থেকে ফেরার পথে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত মোবাইল—ইন্টারনেটে কর প্রত্যাহার না হলে এনবিআর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার মেট্রিক টন চাল টিউলিপের উচিত ক্ষমা চাওয়া: ইউনূস বিজিবি—জনগণ ‘শক্ত অবস্থান’ নেওয়ায় ভারত পিছু হটেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জনগণ বিদ্যুৎ পাবে, তবে ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে -প্রধানমন্ত্রী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২২

এফএনএস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের কারণে জ¦ালানি খাতে কঠোরতা দেখাতে বাধ্য হওয়া সত্তে¡ও তাঁর সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখায় দেশবাসী বিদ্যুৎ পাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা এবং করোনাভাইরাস জনিত কারণে আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিও ফলে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে। এর মানে এই নয় দেশবাসী বিদ্যুৎ পাবে না। তারা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন এবং পাবেন। তবে, এ ক্ষেত্রে সবাইকে একটু মিতব্যয়ী হতে হবে। গতকাল বুধবার সকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিপি)-এর ইউনিট-২ এর রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পরমাণু চুল­ী পাত্র স্থাপন অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঈশ^রদী, পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আয়োজিত মুল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। সরকার প্রধান বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল সবাইকে বিদ্যুৎ দেওয়ার এবং আমরা সেই প্রতিশ্র“তি রক্ষা করতে পেরেছি। প্রতিটি ঘরে আলো জে¦লে সমগ্র বাংলাদেশকে আমরা আলোকিত করেছি। তিনি বলেন, এর ফলে আজকে উন্নত দেশগুলোও হিমসিম খাচ্ছে এবং তারাও সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকেরই উপলব্ধি করা উচিত যে বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজ এবং একে অন্যের ওপর উপর নির্ভরশীল। কাজেই বিশ্বব্যাপী চলমান মন্দার অভিঘাত বাংলাদেশেও যে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক বলেও তিনি উলে­খ করেন। এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী আরএনপিপি’র প্রথম ইউনিটে আরপিভি উদ্বোধন করেছিলেন। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, রাশিয়ার পরমাণু শক্তি করপোরেশন (রোসাটম)-এর মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান। অনুষ্ঠানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে অনেক উন্নত দেশে ও খাদ্যের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও এই ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশে এখনো সৃষ্টি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণকে খাদ্য নিরাপত্তা দিচ্ছি। আমরা ন্যায্য মূল্যে খাবার কেনার জন্য ১ কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড দিয়েছি এবং যারা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে অক্ষম তাদের বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছি। তিনি বলেন, তাঁর সরকার অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে। কারণ, সরকার কোভিড-১৯ মহামারীর চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবেলা করেছে। সরকার প্রধান বলেন, অনেকেই সমালোচনা করতে পারে, কিন্তু আমাদের এসব সমালোচনায় কর্ণপাত না করলেও চলবে, বরং আমরা দেশ ও জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্বটাই পালন করব। তিনি বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তাকেই তাঁর সরকার প্রাধান্য দিয়েছিল। তাঁর সরকারের অগ্রাধিকার ছিল দেশবাসীর জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য বাংলাদেশে চেরনোবিলের মতো কোনো পারমাণবিক দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আবারও আশ্বস্ত করেন যে, তাঁর সরকার পরিবেশ রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ফলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, সরকার দেশবাসীর আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রাম পর্যায়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে কারণ, জাতির পিতা তাদের একটি সুন্দর জীবন দিতে তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। দেশে বিদ্যুৎ এবং জ¦ালানি ক্ষেত্রে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবদান রাখবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য বিরাট অর্জনের দিন। এটা আমাদের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত সম্মান বয়ে আনবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুর কেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে, সেটা উত্তরবঙ্গের জন্যই ব্যবহার হবে। তারাই লাভবান হবে বেশি। সেখানে শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। আরো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে। শান্তি ও উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ পরমাণু শক্তির ব্যবহারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উলে­খ করে তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নয়, এটা একটা দৃষ্টান্ত, আমরা এ ধরনের একটা কাজ করতে পারি। পরিবেশ ঠিক রেখে আমরা ২৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাচ্ছি। যা আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখবে। বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তা প্রদানের জন্য রাশিয়ার সরকার ও প্রেসিডেন্ট ভ­াদিমির পুতিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য পারমাণবিক শক্তি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com