মোস্তাফিজুর রহমান, আশাশুনি থেকে \ বিগত কয়েক বছর থেকে আশাশুনি উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় ছাতরা পোকার আক্রমণে শিশু (আদি নাম শিংশপা) গাছসহ বেশ কিছু প্রজাতির গাছ এলাকা শূন্য হয়ে পড়তে বসেছে। ছাতরা পোকা আক্রমণে শিশু গাছের ডালে টকটকে লাল একটি আবরণ এবং আবরণের উপরী অংশে সাদা দুধের মত তুলা জাতীয় একটি প্রলেপ পড়তে দেখা যায়। পোকার ডিমের আবরণের উপরী অংশে দুধের মত সাদা প্রলেপ থাকায় এই পোকাকে গ্রাম্য ভাষায় দই পোকা বলা হয়ে থাকে। ছাতরা পোকা আক্রমণের কয়েক মাসের মধ্যেই গাছটি মরে যেতে দেখা যায়। এ পোকার আক্রমণে বিভিন্ন রাস্তার পাশে সহস্রাধীক শিশু গাছ মরে কঙ্কাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যে শিশু গাছ গুলো বর্তমানে পথচারীর জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা গেছে শিশু গাছের পোকায় আক্রন্ত হওয়া ডাল গুলি কেটে ফেললে গাছটি না মরে পুনরায় নতুন ডাল গজিয়ে জীবিত হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দেখা গেছে ৪জনের একটি শ্রমিক টিম শিশু গাছের এসকল ছাতরা/দই পোকা আক্রন্ত ছোট ছোট ডাল কেটে নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে বুধহাটা ইউনিয়নের নৈকাটিতে পোকা ও পোকাসহ ডাল সংগ্রহের সময় বুধহাটা ইউনিয়নের চিলেডাঙ্গা গ্রামের সাবেক বাসিন্দা বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা সদরের ধুলিহরে বসবাসরত রুহুল আমিন জানান, তারা শিশু গাছের এ পোকা আক্রন্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডাল গুলো সংগ্রহ করে কলারোয়া/ঝাউডাঙ্গাতে কেজি দরে বিক্রি করেন। বিক্রি করে যে পরিমাণ অর্থ পান সেখান থেকে তাদের মুজরী, পরিবহন খরজ কেটেও বেশ লাভবান হন। কেজি দরে কেমন দাম পান বা এ পোকা বা ছাতরা পোকাসহ পোকার ডিম কি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে দৈনিক দৃষ্টপাত-কে জানান, পোকাসহ ছোট ছোট ডাল কেজি ১০০টাকা, পোকাসহ ডিম ছাড়িয়ে বিক্রি করলে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দাম পান। সেক্ষেত্রে যারা পোকাসহ ডিম ছাড়িয়ে দেন তাদেরকে কেজি প্রতি ৫০-৭০ টাকা মুজরী দিতে হয়। কোথায় বিক্রি করেন বা এ পোকা ও ডিম কি কাজে ব্যবহার হয় এধরনের প্রশ্নের জবাবে তারা সঠিক তথ্য না দিয়ে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাদের কর্মকান্ডে নিঃসন্দেহে শিশু গাছ গুলি জীবন ফিরে পেলেও কৌতুহলী মানুষের মনে নানা প্রশ্ন জাগতে দেখা গেছে। অনেকেরই বলতে দেখা গেছে হোক সেটা ফ্রিতে ভালো কাজের একটি উদাহরণ তবুও যথাযথ কতৃপক্ষের বিষয়টি নলেজে থাকা জরুরী। কেউ কেউ বলছে এ ছাতরা পোকা নিয়ে হতে পারে এমন কোন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে যাহাতে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনার দার উন্মুক্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইয়ানুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমিনুল ইসলাম (পিপিএম) ও উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাজিবুল হাসান সবাই প্রায় একই সুরে দৃষ্টিপাত-কে জানান, যেহেতু আপনার থেকে জানতে পারলাম আশাশুনি উপজেলাতে আজই প্রথম এমন ঘটনা ঘটছে সেহেতু আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তাদের উদ্দেশ্য কি বা এটাতে মানব স্বাস্থ্য বা অন্য যে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা আছে কি-না সেটা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।