এফএনএস : আমদানি করা চাল ও গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে একের পর এক জাহাজ ভিড়ছে। ইতোমধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন চাল ও গম নিয়ে ৭টি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। মূলত অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতেই ওসব খাদ্যপণ্য আমদানি করা হচ্ছে। বন্দরে আসা জাহাজগুলোর মধ্যে ৫টিতে চাল আর ২টিতে গম রয়েছে। জাহাজগুলোতে চাল রয়েছে ৬১ হাজার ৫০ দশমিক ৯০০ মেট্রিক টন আর গম রয়েছে ১ লাখ ৫৭৫ মেট্রিক টন। ওসব জাহাজের মধ্যে ৩টিতে খালাস শুরু হয়েছে আর ৪টি জাহাজ বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করছে। রাশিয়া থেকে গম এবং ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে চাল আমদানি করা হয়েছে। খাদ্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের চাল ও গমের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত মাসের শেষদিকে আরো ৬টি জাহাজে ১ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক খাদ্যশস্য আমদানি করা হয়। কিন্তু বিপুল পরিমাণ চাল ও গম আমদানির বাজারে প্রভাব পড়ছে না। বরং কয়েকদিন ধরে আবার চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। নতুন করে সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে চলতি মাসে আরো কয়েকটি জাহাজ চাল ও গম নিয়ে আসার কথা রয়েছে। গত বুধবার দুটি জাহাজ গম নিয়ে রাশিয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। দুই জাহাজে মোট ১ লাখ ৫৭৫ মেট্রিক টন গম রয়েছে। ইতোমধ্যে জাহাজ থেকে আমদানি করা গমের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় ওসব গম খাওয়ার উপযোগী পাওয়া গেলে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে চলতি মাসের ২ তারিখে একটি জাহাজ ২১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে পৌঁছে। নমুনা সংগ্রহের পর ৯ নভেম্বর থেকে খালাস শুরু হয়। ১ হাজার ৭২৯ মেট্রিক টন চাল বিভিন্ন সিএসডি ও এলএসডিতে পাঠানো হয়েছে। অবশিষ্ট রয়েছে ১৯ হাজার ৪৭১ মেট্রিক টন চাল খালাস। ৪ নভেম্বর ভিয়েতনাম থেকে একটি জাহাজ ২২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল নিয়ে বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। খাদ্য বিভাগ পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ওই চালের কর্মকর্তারা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর নমুনা পরীক্ষায় ওসব চাল খাওয়ার উপযোগী পাওয়া গেলে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর ৫ নভেম্বর মিয়ানমার থেকে একটি জাহাজ ১২ হাজার ৫০ মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। নমুনা সংগ্রহের পর ৯ নভেম্বর থেকে চাল খালাস শুরু হয়। ১ হাজার ৫৯৪ মেট্রিক টন চাল বিভিন্ন সিএসডি ও এলএসডিতে পাঠানো হয়েছে এবং খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে অবশিষ্ট ১০ হাজার ৪৫৬ মেট্রিক টন চাল খালাস। ৬ নভেম্বর মিয়ানমার থেকে একটি জাহাজ ২ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রামে বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। ৯ নভেম্বর মিয়ানমার থেকে একটি জাহাজ ২ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। গত বৃহস্পতিবার ওই জাহাজ থেকে চালের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় ওসব চাল খাওয়ার উপযোগী হলে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে। সূত্র আরো জানায়, দেশের চাল ও গমের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত মাসের শেষদিকে আরো ৬টি জাহাজে ১ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক খাদ্যশস্য আমদানি করা হয়। ৬টি জাহাজের মধ্যে ২টি জাহাজে গম ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৮৪৫ টন। আর ৪টি জাহাজে আতপ ও সিদ্ধ চাল ছিল ৭৯ হাজার ৫৭৩ দশমিক ৪০০ টন। রাশিয়া থেকে গম আর ভারত, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে চাল আমদানি করা হয়েছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম চলাচল ও সংরক্ষণ কার্যালয়ের উপনিয়ন্ত্রক সুনীল দত্ত জানান, চাল ও গমবাহী ৭টি জাহাজ বন্দরে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১ লাখ ৬১ হাজার ৬২৫ দশমিক ৯০০ মেট্রিক টন চাল ও গম নিয়ে ৭টি জাহাজ বন্দরে পৌঁছেছে। ওসব জাহাজের মধ্যে চালবাহী জাহাজ রয়েছে ৫টি আর দুটি জাহাজে রয়েছে গম। ৫টি জাহাজে চাল রয়েছে ৬১ হাজার ৫০ দশমিক ৯০০ মেট্রিক টন আর দুটি জাহাজে গম রয়েছে ১ লাখ ৫৭৫ মেট্রিক টন।