মাছুদুর জামান সুমন \ সাতক্ষীরার শীত বাহিত নানান ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। শীতের আগমনী বার্তা শীত বাহিত রোগের কারন হিসেবে দেখছেন। ভূক্তভোগী সহ তাদের পরিবার। আমাদের দেশের ছয় ঋতুর মধ্যে শীত বিশেষত ঠান্ডা কাতর ঋতু আর তাই মানব দেহের সাথে অতি দ্রুততার সাথে শীত বা ঠান্ডা মানিয়ে নেওয়া না নেওয়ার বহিঃপ্রকাশ ঠান্ডা জনিত রোগ বালাই। বর্তমান সময়ে জেলার সর্বত্র শীতে আক্রান্ত সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে শিশুরা সর্বাপেক্ষা আক্রান্ত হচ্ছে। নিউমোনিয়া বর্তমান সময়ে ব্যাপক ভাবে দেখা দিয়েছে। শিশু হতে বৃদ্ধ সকলেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শিশুদের সংখ্যা বেশী, ছর্দি, কাশি, এলার্জি, হাপানী, বাত, চুলকানা সহ নানান ধরনের শারিরীক সমস্যা ভুগছে লোকজন। শীতের সময় গুলোতে শিশুরাই বেশী বিপদজনক পরিস্থিতির মধ্যে থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত যেহেতু শিশুরা কথা বলতে পারে না, আর ৩/৪ বছরের বেশী বয়সের শিশুরা কথা বলতে পারলেও তারা ভাল, খারাপ বা অনুভূতি সম্পর্কে অজ্ঞ বিধায় শিশুদেরকে সর্বদা নিবিড় পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষনে রাখাই সমীচিন। এই শীতের সময় গুলোতে শিশুদেরকে অবশ্যই ঠান্ডা হতে দূরে রাখতে হবে, গরম জামা কাপড় অর্থাৎ শীত নিরাময় পোশাক পরিয়ে রাখার বিকল্প নেই। কোন ভাবেই শিশুদেরকে ঠান্ডা পানি পান করতে দেওয়া যাবে না। পানি পানের ক্ষেত্রে বয়স্কদেরকেও এমন নীতি অনুসরন করতে হবে। ছোট বড় সকলেরই হাত মোজা, পা মোজা পরিধান করা শ্রেয়। ঠান্ডা পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। বর্তমান শীতের যে প্রকোপ আগামী দিন গুলোতে আরও বেশী হবে সবেমাত্র শীত পড়তে শুরু করেছে বিধায় ঘরের জানালা দরজা সন্ধ্যার পূর্বেই বন্ধ রাখা জরুরী। রাতে মায়েরা তার শিশু সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে অনেক সময় রাতে ঘুমের মাঝে শিশুর শরীরে থাকা গরম কাপড়, লেপ কম্বল সরে যেতে পারে এ বিষয়ে অবশ্যই মা বাবাকে সতর্ক থাকতে হবে। অতিরিক্ত শীতের প্রকোপ অনেক সময় নাক বন্ধ হতে পারে, হাচি উঠতে পারে আর এমনটি হলে ঘরোয়াভাবে গরম পানির ভাব, লবঙ্গ, তুলসি পাতার সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে, শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ছর্দি, কাশি, জ্বর বমি, ডায়রিয়া, নাক দিয়ে রক্ত বা পূজ পড়লে, দম নিতে কষ্ট হলে নিকটস্থ হাসপাতালে অথবা রেজিষ্ট্রার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় শিশুদের মাঝে বিস্তর ভাবে ছড়িয়ে পড়া ঠান্ডা বাহিত নানান ধরনের রোগের পাশাপাশি নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই সব বয়সের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগ অতি ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। আউটডোর, ইনডোর সর্বত্র ঠান্ডাবাহিত রোগীর উপস্থিতি। সাতক্ষীরা রসুলপুরস্থ শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিরামহীন ভাবে শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। শিশু হাসপাতালে চলতি সপ্তাহে ৭০/৮০ জন শিশুর চিকিৎসা দিচ্ছে। নিউমোনিয়া, শাসকষ্ট সহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের শিশু হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জেলা শহরের পাশাপাশি জেলার উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে ও ঠান্ডা জনিত নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত শিশুরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঔষধের ফার্মেসী গুলোতে ঔষধ ক্রয়ের ভিড় বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আশাশুনি উপজেলার চাপড়া গ্রামের আহসান হাবিবের তিন বছরের শিশু পুত্র আবরার মাহি ঠান্ডা জনিত ছর্দি, জ্বর কাশিতে ভুগছে। এমনি ভাবে গ্রামের ঘরে ঘরে শিশুরা নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড দায়িত্বরত ইনচার্জ জয়ন্তী মন্ডল ও মুর্শিদা মুন্নি শিশু রোগীদের সেবা দিচ্ছিলেন। এসময় তাদের কাছে শিশুদের আক্রান্ত এবং চিকিৎসা বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার সার্বক্ষনিক ওয়ার্ড মনিটরিং করছেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা সেবা প্রদান করছি। এবিষয়ে রোগীর স্বজনদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা যথাযথ নিয়মে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা গ্রহন করছি।